ISL-এ ওড়িশার কাছে কখনও হারেনি ATKMB, প্লে-অফেও একই নজির ধরে রাখতে পারবে বাগান?

সপ্তাহ খানেক আগেই ডার্বি জিতে প্লে-অফের শুরুতেই ঘরের মাঠে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে এটিকে মোহনবাগান। স্বভাবতই আত্মবিশ্বাসে যখন টগবগ করে ফুটছে বাংলার দলটি। এখন তাদের আইএসএল সেমিফাইনালে যেতে হলে প্রতিবেশী রাজ্যের দল ওড়িশা এফসি-কে হারাতে হবে। যারা গত মাসে টানা চার ম্যাচে অপরাজিত থাকার পরে শেষ ম্যাচে হেরেও প্লে অফে জায়গা করে নিতে পেরেছে।

আসলে এফসি গোয়া তাদের শেষ তিন ম্যাচে না হারলে হয়তো ওড়িশার ছ’নম্বর দল হিসেবে প্লে অফে জায়গা পাওয়া হত না এবং শনিবার যুবভারতীতে এটিকে মোহনবাগানের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগও পেত না তারা। কাগজে-কলমে এটিকে মোহনবাগান এই ম্যাচে কিছুটা এগিয়ে। কিন্তু আইএসএলের লড়াই, বিশেষ করে প্লে-অফের ক্ষেত্রে একেবারে অন্য রকম। এখানে কোনও দল কখন কাকে হারাবে, তা আগে থেকে বলা কঠিন।

জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এই ওডিশা এফসি-কে ফিরতি লিগে ২-০-তে হারানোর পরই টানা তিন ম্যাচে জয়হীন থাকে এটিকে মোহনবাগান। তখন থেকেই তাদের প্লে অফের রাস্তা বেশ কঠিন হয়ে ওঠে। বেঙ্গালুরু এফসি এবং হায়দরাবাদ এফসি-র কাছে হারে তারা। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে স্প্যানিশ কোচ জুয়ান ফেরান্দোর দল। এই তিন ম্যাচে সব মিলিয়ে মাত্র একটি গোল করেন হুগো বৌমাসরা। লিগপর্ব যত শেষ দিকে এগোয়, তত সবুজ-মেরুন সমর্থকদের স্পন্দন বাড়তে থাকে। শেষ দুই ম্যাচে জিতে তিন নম্বর জায়গাটা অবশ্য পাকা করে সবুজ-মেরুন বাহিনী।

আরও পড়ুন: প্লে-অফের আগে জেনে নিন ATKMB-কে কী কী বিষয় সমস্যায় ফেলতে পারে, দলের শক্তিই বা কী?

চোট সমস্যা চিন্তায় রাখবে বাগান শিবিরকে

লিগ পর্বে শেষ ২ ম্যাচে পরপর জিতে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছে সবুজ-মেরুন শিবির। যা শনিবার ঘরের মাঠে কাজে লাগাতে পারলে সেমিফাইনালে ওঠা খুব একটা কঠিন হবে না ফেরান্দো-বাহিনীর পক্ষে। তবে চোট-আঘাত সমস্যায় এখনও জেরবার বাগান ব্রিগেড। তার মধ্যে আবার ব্রেন্ডন হ্যামিল পারিবারিক সমস্যার কারণে কয়েক দিনের জন্য দেশে ফিরে গিয়েছেন। ফলে ওডিশার বিরুদ্ধেও তাঁকে পাওয়া যাবে না। ডার্বিতে চোট পেয়েছেন গ্ল্যান মার্টিন্সও। তিনিও কতটা সুস্থ হয়ে শনিবার মাঠে নামতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

কেরালা ব্লাস্টার্স ম্যাচে জোড়া গোলের নায়ক কার্ল ম্যাকহিউকে ডার্বিতে পাওয়া যায়নি চোটের কারণে। বৌমাস কোন ম্যাচে খেলতে পারবেন বা পারবেন না, তা তিনি নিজেও ঠিক মতো জানেন না। এই সব সামলে মাঠে দল নামানো ও প্রতি ম্যাচে জয়ের প্রত্যাশা পূরণ কোচ ফেরান্দোর কাছে রীতিমতো দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছে। শনিবার তাঁকে এ রকম কোনও সমস্যার মধ্যে আবার পড়তে হয় কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। তবে পুরো দল নিয়ে যদি নামতে পারেন, এবং দল যদি নিজেদের সেরাটা দিতে পারে, তা হলে তাদের কেউই আটকাতে পারবে বলে মনে হয় না। কার্ল ম্যাকহিউ ডার্বিতে খেলতে না পারলেও অনুশীলনে ফিরেছেন এবং ওড়িশার বিরুদ্ধে তাঁর খেলার সম্ভাবনা যথেষ্ট।

ধারাবাহিকতা বড় সমস্যার

ওড়িশা যতটা না নিজেদের কৃতিত্বে প্লে অফে উঠতে সক্ষম হয়েছে, তার চেয়ে বেশি অন্যের সাহায্য পেয়ে সেরা ছয়ে থাকতে পেরেছে তারা। গত দশটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয় পেয়েছে তারা। বাকি সাতটির মধ্যে পাঁচটিতেই হার। অথচ প্রথম আটটি ম্যাচের মধ্যে ছ’টিতেই জিতেছিল তারা। প্রথম ম্যাচেই জামশেদপুরকে তাদের ঘরের মাঠে গিয়ে হারিয়ে আসে। কেরালা ব্লাস্টার্স, বেঙ্গালুরু এফসি, চেন্নায়িন এফসি-র মতো শক্তিশালী দলগুলিকেও হারায় তারা। কিন্তু নবম ম্যাচ থেকেই তাদের পারফরম্যান্সে ধস নামতে শুরু করে এবং তার পরে ১২টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জেতে দিয়েগো মরিসিও, নন্দকুমার শেখর-রা। এই ধরনের দলগুলিই মাঝে মাঝে এতটাই চমকপ্রদ হয়ে ওঠে যে, তাদের প্রতিপক্ষরা সেই পরিস্থিতির জন্য তৈরি না থাকায় হেরে বসে। এটিকে মোহনবাগানকে সেই জন্যই শনিবারের ম্যাচে ওড়িশাকে নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: ক্লেটনের সঙ্গে আরও এক বছরের চুক্তি বাড়াল EBFC, ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বাকি বিদেশিদের

ধারাবাহিকতার অভাবে যে কলকাতার দলও ভুগছে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ডিসেম্বরে ভুবনেশ্বরে গিয়ে অসংখ্য সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও, একটিও গোল না করতে পেরে যে ভাবে গোলশূন্য ড্র করে চলে এসেছিল এটিকে মোহনবাগান, তাতে অনেকেই অবাক হয়। অথচ সেই ওড়িশাকেই ফিরতি লিগে নিজেদের মাঠে ২-০ হারায় তারা। ঘরের বাইরে বেরিয়ে অ্যাওয়ে ম্যাচের রেকর্ডও খুব একটা ভালো না ওডিশার। বাইরে গিয়ে মাত্র তিনটি ম্যাচে জিতেছে তারা। তার মধ্যে যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ম্যাচও আছে। কিন্তু এটিকে মোহনবাগানকে তাদের ঘরের মাঠে হারানো কতটা সোজা হবে তাদের পক্ষে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

পরিসংখ্যান কী বলছে?

এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার প্লে অফে খেলছে এটিকে মোহনবাগান। আইএসএলে যোগ দেওয়ার পর থেক লিগ পর্বে কখনও তিন নম্বরের নীচে থাকেনি তারা। সেই তুলনায় ওড়িশা এফসি অনেক পিছিয়ে। এই প্রথম প্লে-অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা। চলতি আইএসএল মরশুমে ঘরের মাঠে এটিকে মোহনবাগান ১১টি ম্যাচের মধ্যে আটটিতেই জিতেছে। ওড়িশা দশটি অ্যাওয়ে ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জয় পেয়েছে ও ছ’টিতে হেরেছে।

চলতি মরশুমে ন’টি ম্যাচে ক্লিন শিট রেখে মাঠ ছেড়েছে এটিকে মোহনবাগান। একমাত্র হায়দরাবাদ এফসি-র (১০) তাদের চেয়ে বেশি ক্লিন শিট রয়েছে। ওড়িশার বিরুদ্ধে ছ’টি ম্যাচে এখনও পর্যন্ত চারটি ক্লিন শিট রয়েছে সবুজ-মেরুন বাহিনীর।

এটিকে মোহনবাগানের অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড দিমিত্রি পেত্রাতোস এখনও পর্যন্ত ৯টি গোল করেছে। আর একটি গোল করলে একই মরশুমে দশটি গোল পাওয়া দ্বিতীয় সবুজ-মেরুন ফুটবলার হবেন তিনি। আর একটি গোলে অ্যাসিস্ট করলে তিনি একই মরশুমে রয় কৃষ্ণার আটটি অ্যাসিস্টের নজির স্পর্শ করবেন।

ওড়িশা এফসি এ মরশুমে হারার জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৩ পয়েন্ট অর্জন করেছে, যা যুগ্ম ভাবে সর্বোচ্চ। ৩০টির মধ্যে ২০টি গোল তারা করেছে দ্বিতীয়ার্ধে। কোনও ম্যাচে প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে গোল করতে পারেনি তারা। দিয়েগো মরিসিও এই মরশুমে ১২ গোল করে ওড়িশার সর্বোচ্চ গোলদাতার জায়গায় রয়েছেন। দলের আর কোনও ফুটবলার একই মরশুমে এক ডজন গোল করতে পারেননি।

দ্বৈরথের ইতিহাস

ইন্ডিয়ান সুপার লিগের পরিসংখ্যান কিন্তু এগিয়ে রেখেছে এটিকে মোহনবাগান-কেই। তিন মরশুমে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ছ’বার। তার মধ্যে তিনবার জিতেছে কলকাতার দল। বাকি তিনটিতে ড্র হয়। অর্থাৎ, ওডিশা এফসি এখনও পর্যন্ত এটিকে মোহনবাগানকে হারাতে পারেনি। চলতি মরশুমে প্রথম ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। ফিরতি লেগে ২-০ জেতে এটিকে মোহনবাগান। জোড়া গোল করেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।

For all the latest Sports News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.