১০ ম্যাচে মাত্র তিনটিতে জয়, ৭টি হার, তবু EB কোচের দাবি, ‘দল ঠিক পথেই এগোচ্ছে’

মরশুমের মাঝখানে দাঁড়িয়ে এখন অন্যান্য দলগুলির মতো আত্মবিশ্লেষণ চালাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল এফসি-ও। তাদের দলের হেড কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন মনে করেন, দলের শক্তি ও দক্ষতা অনুযায়ী তারা ঠিক পথেই এগোচ্ছে। পাশাপাশি তিনি এ কথাও স্বীকার করে নিচ্ছেন, দলের ফুটবলাররা অনেক ভুল করেছেন, যা তাঁদের করা উচিত হয়নি। এত ভুল না হলে লিগ টেবলে আরও বেশি পয়েন্ট পেত তারা। এই সব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং সেগুলি শুধরেই শুক্রবার ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে লিগের এগারো নম্বর ম্যাচ খেলতে নামছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। এই বেঙ্গালুরুকেই প্রথম লিগে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে এসেছিল লাল-হলুদ বাহিনী। তাই দু’সপ্তাহ ছুটি কাটিয়ে ফিরে ঘরের মাঠে প্রথম জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী কোচ।

ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে যা বললেন কনস্ট্যানটাইন, জেনে নিন বিস্তারিত:

প্রশ্ন: বছর শেষ করার আগে আপনার লক্ষ্য কী?

কনস্ট্যানটাইন: প্রতি ম্যাচে তিন পয়েন্ট পাওয়া। সব ম্যাচ জেতার পরিকল্পনা নিয়েই নামি আমরা। হয়তো সব ম্যাচে আমাদের লড়াই যথেষ্ট হয়ে ওঠে না। কিন্তু জেতার উদ্দেশ্য নিয়েই মাঠে নামি। বছরের শেষ ম্যাচেও তিন পয়েন্টই লক্ষ্য থাকবে।

প্রশ্ন: দশ ম্যাচে আপনার দল মাত্র তিনটি জয় পেয়েছে, সাতটি হার। এই জায়গা থেকে ছবিটা বদলাবেন কী ভাবে?

কনস্ট্যানটাইন: গত মরশুমে যদি আমি দায়িত্বে থাকতাম, তা হলে আমাকে বলা হত, ‘আপনি সারা মরশুমে মাত্র একটা ম্যাচ জিতেছেন’! দশটার মধ্যে তিনটি ম্যাচ জিতে আমিও খুশি নই। আরও পয়েন্ট পাওয়া উচিত ছিল আমাদের। সে সুযোগও পেয়েছিলাম আমরা। আমাদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে, সেটা জানি, বুঝতে পেরেছি। এখন অনুশীলনে সেই ভুলগুলো শোধরাতে হবে আমাদের। দলের ছেলেরা সবাই খুব পরিশ্রম করছে। ওদের চেষ্টায় কোনও ত্রুটি নেই। কেউ সেই অভিযোগ করলে, আমি তা মানব না। হয়তো ওদের দক্ষতায় ঘাটতি হচ্ছে। অনেক ভুল হচ্ছে, মানছি। গত কয়েক বছরে যে ভুলগুলো হয়েছে, সব এখন শোধরাতে হচ্ছে। মরশুমের শুরুতে বলেছিলাম প্রথম ছয়ে থাকলে সেটা অলৌকিক কাণ্ড হবে। তবে আমার মনে হয়, এখনও আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি। সবাইকে এখন ধৈর্য্য ধরে থাকতে হবে। আমাদের নিয়মিত ম্যাচ জিততে হবে।

আরও পড়ুন: আমাদের নাম্বার নাইনের উপর নির্ভর করতে হয় না- গোয়াকে হারিয়ে বড় দাবি ATKMB কোচের

প্রশ্ন: আপনার দলে চোট-আঘাতের অবস্থা কী?

কনস্ট্যানটাইন: এই ম্যাচে দু’-একজন অনিশ্চিত রয়েছে। তবে তারা শেষ পর্যন্ত খেলতে পারবে কি না, তা জানার জন্য খেলা শুরুর আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

প্রশ্ন: প্রথম লিগের ম্যাচে বেঙ্গালুরুর এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের ফল কি এই ম্যাচে আপনাদের উদ্বুদ্ধ করবে?

কনস্ট্যানটাইন: বেঙ্গালুরুর মতো দলকে হারানোর ক্ষমতা আমাদের আছে, সেটা জেনে মাঠে নামা মানে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস কিছুটা বাড়বে। তা ছাড়া আমরা ঘরের মাঠে খেলছি। আমাদের সমর্থকেরা গ্যালারিতে থাকবেন। আমরা চাই তারা আমাদের পাশে থাকুক। বেঙ্গালুরু ভালো দল। তবে ওরা শেষ ম্যাচে হেরেছে। সেই জন্যই এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট পাওয়ার জন্য ওরা মরিয়া হয়ে উঠবে। ওদের ভালো ভালো খেলোয়াড় আছে। কঠিন ম্যাচ। আইএসএলে কোনও ম্যাচই সোজা হয় না।

প্রশ্ন: এখনও পর্যন্ত আপনাদের সমর্থকেরা ঘরের মাঠে একটাও ম্যাচ জিততে পারেনি। শুক্রবার কি সেটা সম্ভব হবে?

কনস্ট্যানটাইন: কেন সম্ভব নয়? সেই সুযোগ আমরা আগেও পেয়েছি। আমরা জিততেই চাই। কেউই হারতে চায় না। আমি পরাজয় একদম পছন্দ করি না। দল যখন হারে, তখন আমি খুব একটা ভালো মানুষ থাকতে পারি না। এই ম্যাচে আমরা জেতারই চেষ্টা করব। জিতে সমর্থকদের নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে চাই।

প্রশ্ন: দশটি ম্যাচের পর নিজের দল সম্পর্কে আপনার কী ধারণা?

কনস্ট্যানটাইন: অবশ্যই আরও উন্নতির জায়গা আছে আমাদের। আরও ভালো কিছু করতে পারতাম আমরা। ছেলেরা চেষ্টা করেছে ঠিকই। কিন্তু সব ম্যাচে সেই চেষ্টা যথেষ্ট ছিল না। এখন আমরা আগের তুলনায় উন্নত। যতটা সম্ভব উন্নত হওয়া যায়, ততটাই। তবে প্রথম ছয়ে থাকতে গেলে আরও উন্নতি করতে হবে। অনেকে হয়তো বলবেন, গত দু’বছরের তুলনায় আমরা তেমন কিছুই ভালো করিনি। কিন্তু আমরা তো আগের বারের তুলনায় বেশি সংখ্যক ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের মতো একটা বড় ক্লাবের কাছে এটা যথেষ্ট নয়। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। কিন্তু এটা তো রাতারাতি সম্ভব নয়। সে জন্য আমাদের পরিশ্রম করতে হবে। সব দলই পরিশ্রম করে। সেরা ছয়ে থাকার মতো দল হিসেবে নিজেদের এখনও প্রমাণ করতে পারিনি ঠিকই। তবে সেই জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছি। এর জন্য সময় লাগবে। ৩-৪ বছর লেগে যাবে বলছি না। তবে সময় লাগবে।

আরও পড়ুন: মধুর বদলা, ঘরের মাঠে গোয়াকে হারিয়ে অক্সিজেন পেল বাগান, উঠে এল তিনে

প্রশ্ন: সুনীল ছেত্রীর জন্য কি কোনও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে আপনার?

কনস্ট্যানটাইন: মাঠে তো ওদের এগারো জন ফুটবলার থাকবে। আমাদেরও এগারো জন থাকবে ওদের সামলানোর জন্য। শুধু ছেত্রীর জন্য পরিকল্পনা কিছু নেই।

প্রশ্ন: ডিসেম্বরের শেষে যে জায়গায় থাকার লক্ষ্য নিয়ে মরশুম শুরু করেছিলেন আপনারা, সেই জায়গার কতটা কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছেন বলে মনে হয়?

কনস্ট্যানটাইন: আগেই বলেছিলাম, আমরা লিগ টেবলের সর্বশেষ জায়গায় থাকব না এবং একটার বেশি ম্যাচ জিতব। সেই লক্ষ্য আমরা পূরণ করতে পেরেছি। এখন আমরা যেখানে রয়েছি, সেখানে আমাদের থাকার কথা নয়। আমরা সেরা ছয়ের মধ্যে থাকতে চাই। গত কয়েকটি ম্যাচে আমরা যদি কম ভুল করতাম, তা হলে সেরা ছয়ের মধ্যে না হোক, তার কাছাকাছি অবশ্যই থাকতাম। তবে এখনও ৩০ পয়েন্ট রয়েছে আমাদের সামনে। দশটার মধ্যে আটটা ম্যাচে আমরা যথেষ্ট ভালো খেলেছি। তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি ম্যাচ থেকে আমাদের আরও পয়েন্ট পাওয়া উচিত ছিল। আমরা জানি, আমরা ভালো খেলতে পারি এবং সারা দেশ তা দেখেছে। আমাদের এখন বল-সহ, বল ছাড়া এবং ওঠা-নামায় আরও উন্নতি করতে হবে, নিখুঁত হতে হবে। ৩০ পয়েন্টের মধ্যে ৩০ পয়েন্টই পাওয়াটা কঠিন। তবে যত সম্ভব বেশি পয়েন্ট আমাদের তুলতে হবে সামনের ম্যাচগুলি থেকে।

For all the latest Sports News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.