হায়দরাবাদের ভারতীয় ফুটবলাররা নয়া নজির গড়েছেন ISL-এ, যা নেই বাকি টিমের

লিগ পর্ব শেষ।  সেমিফাইনাল শুরু হওয়ার আগে সর্বোচ্চ গোলদাতা বা সেরা গোলের দৌড়ে কোন টিমের ফুটবলার এগিয়ে, জানেন কি? হায়দরাবাদ এফসির ফুটবলাররাই এগিয়ে রয়েছে এই পরিসংখ্যানে।

সেমিফাইনালের আগে এক নজরে দেখে নিন হায়দরবাদ এফসি-র ঠিকুজি কুষ্টি:

এ বারের হিরো আইএসএলের সেমিফাইনালে উঠে নিজেরাই নিজেদের পারফরম্যান্সের নতুন নজির গড়েছে হায়দরাবাদ এফসি। এই প্রথম তারা দেশের এক নম্বর লিগের নক-আউট পর্বে পৌঁছল। যা তাদের ক্লাবের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সেরা পারফরম্যান্স।

১১টি ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে উঠেছে তারা। এটাও তাদের ক্ষেত্রে এক নয়া নজির। কারণ এর আগে হিরো আইএসএলের কোনও মরশুমে ১১টি ম্যাচ জেতেনি নিজামের শহরের দল। এ বার ৩৮ দিন তারা লিগ টেবলের শীর্ষে ছিল। এর আগে মুম্বই সিটি এফসি একবার ৪০ দিন লিগ তালিকায় এক নম্বরে ছিল। সেই নজির ভাঙতে না পারলেও এই তালিকায় দু’নম্বরে অবশ্যই থাকবে হায়দরাবাদ।

যে শহর থেকে ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি হাবিব, আকবররা উঠে এসেছিলেন, সেই শহরের দলের ভারতীয় ফুটবলাররা এ বার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। দলের ৪৩টি গোলের মধ্যে ২০টি গোলেই ‘অ্যাসিস্ট’ করেছেন হায়দরাবাদের ভারতীয় ফুটবলাররা। এ এক নজির। এক মরশুমে একই দলের হয়ে এতগুলো গোলে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করতে আর কখনও দেখা যায়নি এতজন ভারতীয় খেলোয়াড়কে।

গোটা লিগে তাদের দশজন ভারতীয় ফুটবলার গোল করতে প্রত্যক্ষ সাহায্য করেছেন। আর কোনও দলের এতজন ভারতীয় খেলোয়াড় এই ভূমিকা পালন করেননি। সব মিলিয়ে এই ভূমিকায় দেখা গিয়েছে ১৬জনকে। এই ব্যাপারেও তারা শীর্ষে।

গোলের সংখ্যার দিক থেকেও এ বার সবার ওপরে রয়েছে হায়দরাবাদ এফসি। তারা লিগ পর্বে ৪৩টি গোল করেছে। হিরো আইএসএলের ইতিহাসে এটি এক মরশুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলগত গোলসংখ্যা। এর আগে ২০১৯-২০ মরশুমে এফসি গোয়া লিগ পর্বে ৪৬টি গোল করেছিল। এটাই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। তার পরেই জায়গা করে নিয়েছে বার্থোলোমিউ ওগবেচেদের কীর্তি।

শট অ্যাকিউরেসি ও গোল কনভারশন রেটের দিক থেকেও এই মরশুমের লিগ পর্বে হায়দরাবাদই শীর্ষে। যে ক’টি শট তারা নিয়েছে, তার মধ্যে ৩৮.০৪% নিখুঁত হয়েছে বা লক্ষ্যে ছিল। আর তার ১৫.২১%-তে গোল হয়েছে। আর কোনও দলের এই দুই পরিসংখ্যান এত ভাল নয়। এ বারের লিগ পর্বে হায়দরাবাদ ১০৫টি শট গোলে রেখেছে, যা অন্যান্য দলের তুলনায় সর্বোচ্চ।

বিপক্ষের বক্সের বাইরে থেকে তারা এ বার মোট ১১টি গোল করেছে। এই ব্যাপারে এ মরশুমে তারাই এক নম্বরে। বাকি দশটি দলের মধ্যে কোনও পক্ষই বক্সের বাইরে থেকে দশটি বা তার বেশি গোল করতে পারেনি। হেডের গোলের ক্ষেত্রেও তারাই শীর্ষে। মোট ১২টি গোল তারা মাথা দিয়ে করেছে, যা আর কেউই পারেনি।

আরও একটা বিষয়ে লিগ পর্যায়ে হায়দরাবাদই সেরা এবং তা হল ক্রসের সংখ্যা। এই মরশুমের লিগে তারা মোট ৩২৩টি ক্রস দিয়েছে। আর কোনও দল তিনশোর গণ্ডীও পেরোতে পারেনি। এফসি গোয়া, যারা এই তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছে, তারা ২৯৮টি ক্রস দিয়েছে। জামশেদপুর দিয়েছে ২৭৯টি ক্রস। এটিকে মোহনবাগান (২৪৩) ও কেরালা ব্লাস্টার্স (২২১) অনেক পিছিয়ে।

কতটা লড়াকু এই হায়দরাবাদের দলটা, তা বোঝানোর জন্য একটা পরিসংখ্যান দেওয়া যেতে পারে। ম্যাচে পিছিয়ে থাক সত্ত্বেও ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা মোট দশ পয়েন্ট পুণরুদ্ধার করেছে। তবে এই ব্যাপারে তারা সেরা নয়। বঙ্গ ফুটবলপ্রেমীরা জেনে খুশি হতে পারেন, এই লড়াইয়ে সবার ওপরে এটিকে মোহনবাগান, যারা চলতি লিগে পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও এক ডজন পয়েন্ট ঘরে তুলেছে।

মোট ৪৩টি গোলের মধ্যে স্প্যানিশ কোচ মানুয়েল মার্কেজের দল প্রথমার্ধে করেছে ২১টি ও দ্বিতীয়ার্ধে করেছে ২২টি। প্রথমার্ধের গোলের সংখ্যায় তারা যুগ্মভাবে শীর্ষে আর দ্বিতীয়ার্ধের গোলের দিক দিয়ে তারা একক ভাবেই এক নম্বরে। শেষ ১৫ মিনিটের গোলের দিক থেকেও তারা ওপরের দিকে রয়েছে, তবে এক নম্বরে নয়। ম্যাচের এই শেষ সময়ে তারা ন’টি গোল করেছে। একমাত্র ওডিশা এফসি এই সময়ে দশটি গোল করে তাদের ওপরে রয়েছে।

১৭টি গোল করে সর্বোচ্চ স্কোরারদের তালিকায় এক নম্বরে রয়েছেন হায়দরাবাদের নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার বার্থোলোমিউ ওগবেচে। লিগে তিনিই সেরা। নক আউটের পরে এই দৌড়ে কে কোথায় শেষ করবে, তা আকর্ষণীয় বিষয়। তবে এই লড়াইয়ে তিনি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। কারণ, তাঁর সবচেয়ে কাছের প্রতিদ্বন্দী যে, যাঁর গোলের সংখ্যা এখনও বাড়তে পারে, সেই জামশেদপুর এফসি-র গ্রেগ স্টুয়ার্টের গোলের সংখ্যা দশ।

ড্যানিয়েল চিমার আছে ন’টি গোল। কেরালা ব্লাস্টার্সের জর্জ ডায়াস, আলভারো ভাস্কেজ এবং এটিকে মোহনবাগানের লিস্টন কোলাসোর আটটি করে গোল রয়েছে। তাই নক-আউট পর্বেও ওগবেচেকে ছোঁয়া বেশ কঠিন হবে। ক্লাবের ইতিহাসেও তিনিই সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং এ মরশুমে তিনিই সবচেয়ে বেশি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন। তা ছাড়া চলতি মরশুমে তিনিই হায়দরাবাদের একমাত্র সদস্য, যিনি দশটি বা তার বেশি গোল করেছেন।

For all the latest Sports News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.