সঙ্গমকালে ভগবদ্গীতা পাঠ! ‘ওপেনহাইমার’ ছবির দৃশ্য নিয়ে রেগে আগুন হিন্দুরা
কিছু দিন আগেই ‘ওপেনহাইমার’-এর সঙ্গে ভগবদ্গীতার যোগসূত্রের কথা শোনা গিয়েছিল। এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছিল, ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত এই ছবিতে রবার্ট ওপেনহাইমারকে দেখা গিয়েছে পরমাণু বোমা আবিষ্কারের উৎসাহ ভগবদ্গীতা থেকে পেতে। আর তা নিয়ে উৎসাহী ছিলেন বহু মানুষ। কিন্তু ছবিটি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি পালটে গিয়েছে। এখন ছবিটির সঙ্গে ভগবদ্গীতার সংযোগসূত্রটি নিয়ে রেগে আগুন অনেকেই। দাবি উঠেছে এই দৃশ্য ছবি থেকে বাদ দেওয়ার, নতুন ‘বয়কট হলিউড’-এর।
জে রবার্ট ওপেনহাইমার ছিলেন আমেরিকার পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিয়ে তাঁর গবেষণা করেন। পরবর্তীকালে আমেরিকা যখন পরমাণু বোমা তৈরির কাজ শুরু করেন, তখন সেই ম্যানহ্যাটন প্রোজেক্টের অসামরিক প্রধান ছিলেন ওপেনহাইমার। পরবর্তীকালে যাঁকে ‘পরমাণু বোমার পিতা’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। এহেন ওপেনহাইমারের জীবন নিয়েই এই ছবির গল্প।
(আও পড়ুন: গীতার পাশাপাশি মেঘদূত-বেদ সবই পড়েছিলেন ওপেনহাইমার! লিখেছিলেন ‘আমি মুগ্ধ হচ্ছি বারবার’)
ছবির গল্পের সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ যোগ থাকলেও এটি কখনও যুদ্ধের ছবি হয়ে ওঠেনি। বরং প্রকৃতি অর্থে যুগান্তকারী হয়ে উঠতে পারে, এমন এক অস্ত্রের নির্মাণ কীভাবে হয়েছে, কীভাবে আমেরিকার নিশ্ছিদ্র নিরপত্তা বলয় ভেদ করে, তা পৃথিবীর আরও কয়েকটি দেশের হাতে পৌঁছে গিয়েছে, সে সব নিয়ে দোষারোপ, পালটা দোষারোপ এবং ব্যক্তিমানসে এসব ঘটনার প্রভাবে চড়াই উৎরাই নিয়েই নিয়েই এই ছবি। এহেন ছবির একটি দৃশ্য এখন বিতর্কের কেন্দ্রে।
ছবিতে দেখা গিয়েছে রবার্ট ওপেনহাইমার এবং তাঁর প্রেমিকা জিন ট্যাটলক সঙ্গমরত হয়েছেন। ওপেনহাইমারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিলিয়ান মার্ফি এবং ট্যাটলকের চরিত্রে ফ্লোরেন্স পিউ। এই দৃশ্যের মাঝে দেখা যায়, ট্যাটলক উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে যান ওপেনহাইমারের বইয়ের আলমারির দিকে। সেখান থেকে একটি বই বার করে নেন। জানতে চান, এটি কোন ভাষায় লেখা? ওপেনহাইমার বলেন, সংস্কৃত। ট্যাটলক একটি বিশেষ পাতা খুলে জানতে চান, কী লেখা সেখানে। ওপেনহাইমার ব্যাখ্যা করতে গেলে তিনি বারণ করেন। এবং বলেন, লাইন বাই লাইন বলতে। ওপেনহাইমার ইংরেজি অনুবাদে লাইনগুলি বলতে থাকেন। ‘আমি এখন মৃত্যু। পৃথিবীর ধ্বংসকারী’। এরই মধ্যে ট্যাটলক বসে পড়েন চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে ওপেনহাইমারের উপর। পুনরায় সঙ্গম শুরু হয়।
এই দৃশ্যের কারণেই ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অতি স্বল্প দৈর্ঘ্যের এই দৃশ্য ছবির ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ হতেই পারে, কিন্তু অনেক হিন্দুই মনে করছেন, এটি তাঁদের জন্য অবমাননাকর। অনেকে এমন দাবিও করেছেন, এই দৃশ্যে গীতর যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, তাও ঠিক নয়।
আপাতত আক্রমণের মুখে দেশের সেনসর বোর্ডও। অনেকেরই প্রশ্ন এমন একটি দৃশ্য কী করে দেখানো অনুমতি দিল বোর্ড। আপাতত এটি নিয়ে জলঘোলা সপ্তমে।
For all the latest entertainment News Click Here