মামার বাড়ির আবদার! বাংলা ছবি ‘জঘন্য’ হলেও ‘পাশে দাঁড়াতে’ হবে? বিস্ফোরক তথাগত

দক্ষিণী ছবির সাঁড়াশি চাপে প্রাণ ওষ্ঠাগত বলিউডের। সম্প্রতি হিন্দি বনাম দক্ষিণী ছবির লড়াই নিয়ে টুইটারে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন অজয় দেবগণ ও কন্নড় তারকা সুদীপ কিচ্চা। এর মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে বোমা ফাটালেন অভিনেতা-পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান, বাংলা ছবিকে বাঁচান’, টলিউডের নামী-দামী অভিনেতা-প্রযোজকদের মুখে এখন এই বুলি। কারণ? হিন্দির পাশাপাশি দক্ষিণী ছবির বাড়বাড়ন্তে অনেকটাই কোণঠাসা বাংলা ছবি। বিশেষত মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা ছবির জায়গা হচ্ছে না বলে অভিযোগও তুলেছেন প্রযোজকদের কেউকেউ। এর মাঝেই ইন্ডাস্ট্রিরই অন্দর থেকে বাংলা ছবির নির্মাতা ও কলাকুশলীদের উপর বিরক্তি ও ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ‘ভটভটি’ পরিচালক।

টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ‘হকিকত’ নিয়ে চিন্তিত মোহর-এর এসিপি স্যার। তাই ব্যঙ্গাত্মক পোস্টে টলিপাড়ার রথী-মহারথীদের বিঁধলেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, ‘বাংলা ছবির মান খারাপ হলেও তার পাশে দাঁড়াতে হবে কেন? সিনেমা কোনও সমাজসেবামূলক কাজ তো নয়!’

বেশ কয়েক বছর ধরেই কর্মাশিয়্যাল বাংলা ছবির বাজার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণী ছবির রিমেকের বদলে এখন বাঙালি দর্শক দক্ষিণী ছবি দেখতেই বেশি স্বছন্দ। করোনা পরবর্তী সময়ে তো বাংলা ছবির বাণিজ্যে পুরোপুরি ভাটা। সাম্প্রতিক সময়ে ‘টনিক’ ছাড়া অন্য হিট বাংলা ছবির উদাহরণ খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য, তাই ২০২২-এ এসে ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান। হলে গিয়ে ছবি দেখুন।’-এর যে রব চারিদিকে ধ্বনিত হচ্ছে তাতে বিরক্ত তথাগত।

পুরোদস্তুর ব্যাঙ্গের সুরে তথাগত লেখেন, ‘সাবধান! ভয়ঙ্কর রেগে আছি। আপনারা বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়াচ্ছেন না দেখে। সিনেমা কোনও বিনোদনমূলক মাধ্যম নয়। এটা সর্বৈব সমাজকল্যাণ মূলক কাজ। তাই পেঁয়াজ না খেয়ে, এসি বন্ধ করে, পেট্রল ছেড়ে সাইকেল চালিয়ে বাংলা ছবিকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের আশু কর্তব্য।’ প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় সঙ্গীত চালানো হলে যে ভাবে উঠে দাঁড়ানোর জন্য জোরাজুরি চলে, তার সঙ্গে বাংলা ছবি দেখানোকেও তুলনা করলেন তথাগত। তাঁর ঠাট্টা: হিন্দি, দক্ষিণী অথবা বিদেশি ছবি দেখতে ইচ্ছা করলেও সেই ইচ্ছাকে দমন করে বাংলা ছবি দেখতে হবে’।

অভিনেতা-পরিচালকের আরও অভিযোগ, বাংলা ছবির মান ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। তিনি লেখেন, ‘বাংলা ছবি যত জঘন্য, যত খারাপ, ২০২২ সালে টেকনিক্যালি যত দুর্বল, গল্পের বিষয়বস্তু যতই ১৯৫৫ সালের হোক না কেন, তা দেখতেই হবে! নইলে কর্ণ জোহরের থিওরি অব নেপোটিজম ভুল প্রমাণিত হয়ে যাবে।’

তথাগতর রাগের কারণ, বাংলা ছবির মান পড়ছে দিনের পর দিন। তাই তিনি লিখেছেন, ‘বাংলা ছবি যত জঘন্য, যত খারাপ, ২০২২ সালে টেকনিক্যালি যত দুর্বল, গল্পের বিষয়বস্তু যতই ১৯৫৫ সালের হোক না কেন, তা দেখতেই হবে! নইলে করণ জোহরের থিওরি অব নেপোটিজম ভুল প্রমাণিত হয়ে যাবে।’ অভিনেতা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন ‘খারাপ সিনেমা হচ্ছে তাই লোকে দেখছে না।’ অথচ বাংলা ইন্ডাস্ট্রির মানুষজন এটাকে অপপ্রচার বলে মনে করছে।

তথাগত শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে বলতে চেয়েছেন, সিনেমা কোনওদিনই মাতৃভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা নয়। ভালো সিনেমা হলে তবেই সেটা দেখা উচিত, মাতৃভাষায় তৈরি সিনেমা বলে নয়। কারণ সিনেমার কোনও ভাষা থাকে না’।

অভিনেতা লেখেন, ‘সিনেমা ভাল হলে লোকে এমনিই দেখবে সে যে ভাষারই হোক না কেন, সেটা মিথ্যে প্রমান করে দিন,আমাদের প্রমান করতেই হবে যে সিনেমা অডিও ভিস্যুয়াল মাধ্যম নয়, সিনেমা আপনার মাতৃভাষার প্রতি দায়বদ্ধতা।খারাপ সিনেমা হচ্ছে তাই লোকে দেখছে না এ মিথ্যে অপপ্রচার রুখতে এবার কিন্তু প্রয়োজনে আমরা বাড়ি গিয়ে লোকজনকে হিড়হিড় করে টানতে টানতে বাড়ি থেকে বার করে সিনেমা হলে নিয়ে যাব, তারপর চোখ পিন দিয়ে টানটান করে ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ।তাই সাবধান, এবার পাশে দাঁড়ান,ভাষার পাশে দাঁড়ান,সিনেমার পাশে নয়…নয়তো হিন্দি সত্যি সত্যি ন্যাশানাল ল্যাঙ্গোয়েজ করে দেব’।

আজকাল বেশিরভাগ বাংলা ছবিতে সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো প্রবণতা নিয়েও কটাক্ষ তথাগতর। তিনি লেখেন, ‘ওটাই আমাদের সবথেকে পুরনো, বিশ্বস্ত দেওয়াল। যাতে যখন তখন…।’ বাকিটুকু উহ্য রাখলেন ভাঙা বিয়ে ও নতুন প্রেমের জল্পনা নিয়ে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা অভিনেতা।

আজ ১লা মে, শ্রমদিবসে এই বিতর্কিত পোস্টের শেষে তাঁর বক্তব্য, ‘হ্যাপি লেবার ডে….(পাশে দাঁড়ানোও কিন্তু একটা লেবার)।’ তথাগতর এই ভাবনার সঙ্গে আপনারা কি একমত?

 

For all the latest entertainment News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.