‘বিদেশি সুর চুরি করেন কেন?’ বাপ্পি লাহিড়িকে প্রশ্ন করে কী উত্তর পেয়েছিলেন মীর

প্রয়াত হয়েছেন সুরকার বাপ্পি লাহিড়ি। দীর্ঘ দিন টেলিভিশন এবং রেডিয়োয় বাপ্পি লাহিড়ির প্রতি শ্রদ্ধা এবং একই সঙ্গে তাঁকে নিয়ে নিছক মজা করেছেন জনপ্রিয় সঞ্চালক মীর। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কেমন ছিল ‘বাপ্পিদা’র সম্পর্ক? হালে এই বিষয়টি নিয়ে বাংলা সংবাদমাধ্যমে লিখেছেন মীর। 

আনন্দবাজার অনলাইনে মীর লিখেছেন, ‘বাপ্পিদা পাশ্চাত্য সঙ্গীতকে আমাদের কাছে নিয়ে এসেছেন। কখনও কখনও তিনি গোটা সুর অন্য কোনও গান থেকে নিয়ে নিতেন। ছোটবেলায় তো বুঝতাম না সেই সুরের উৎস আছে সাগর পেরিয়ে।’ পরে বড় হয়ে টের পান, সে সব সুর অন্য কোনও গান থেকে নেওয়া। তাও জানিয়েছেন মীর।

পরবর্তী কালে রেডিয়ো এবং ছোটপর্দায় বাপ্পি লাহিড়িকে নিয়ে নানা ধরনের কৌতুক করতেন মীর। আবার একই সঙ্গে সুরকারের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ একটি সহজ সম্পর্ক ছিল, সেকথাও জানিয়েছেন মীর। তারই সূত্রে একদিন নাকি তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আপনি তো সুর চুরি করেন। এ ভাবে সুর তুলে আনেন কেন?’ 

এমন প্রশ্ন শুনলে যে কেউই রেগে যেতে পারেন। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি বাপ্পি লাহিড়ির। তিনি উত্তরে নাকি বলেছিলেন, ‘আমি ইনিস্পায়ার হই।’ মীর লিখেছেন, তিনি প্রথমটায় বুঝতে পারেননি এই কথার মানে। পরে বুঝতে পেরে বলেন, ‘আচ্ছা! আপনি ইনস্পায়ার্ড হন। উদ্বুদ্ধ হন।’ মীরের কথায়, বাপ্পি লাহিড়ি সেই মজার মানুষ, যাঁকে দেখলেই জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করত।

আরও দু’টি ঘটনার কথা লিখেছেন মীর। লিখেছেন, একবার নাকি তিনি বাপ্পি লাহিড়িকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘মীর আফসার আলি যে আপনাকে এত নকল করে, আপনার রাগ হয় নিশ্চয়ই?’ উত্তরে বাপ্পি লাহিড়ি বলেছিলেন, ‘হাতি চলে বাজার, কুত্তা ভকে হাজার।’ তার পরেই আবার বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু নিজের শরীরের ওজনের জন্য নিজেকে হাতি বলিনি। হাতির আক্ষরিক অর্থে যেও না। হাতি বলতে বুঝিয়েছি, আমার মতো এত বড় মাপের সুরকার!’ মীরও তখন মজা করে বলেছিলেন, ‘আপনি আমাকে কুকুর বললেন?’

২০০৮ সালের বাপ্পি লাহিড়িকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয়নি তাঁর। তার আগে প্রতি বছর ২৭ নভেম্বর ওঁকে রেডিয়োর তরফে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মীর। মীর লিখেছেন, ‘২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে মুম্বইয়ের তাজ হোটেলের দিকে যাচ্ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি। মধ্যরাতে পরিবারের সঙ্গে জন্মদিন পালন করার পরিকল্পনা ছিল। মাঝ রাস্তাতেই খবর পান, তাজে জঙ্গী হামলা হয়েছে। মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।’ সেই কারণেই শেষ পর্যন্ত জন্মিদেনর শুভেচ্ছা পাঠানো হয়নি।