পিছল জ্যাকলিনের জামিনের আবেদনের রায়দান, আর্থিক তছরুপ মামলায় মহা ফ্যাসাদে নায়িকা
আরও চারদিনের স্বস্তি পেলেন অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ। ২০০ কোটির আর্থিক তছরুপের মামলার অন্যতম অভিযুক্ত অভিনেত্রীর জামিনের আবেদনের শুনানির রায়দান ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দিল দিল্লির পাটিয়ালা হাউজ কোর্ট। আজই শেষ হচ্ছে জ্যাকলিনের অন্তর্বতীকালীন জামিনের মেয়াদ, সেটির মেয়াদও আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন আদালতে হাজির ছিলেন জ্যাকলিন। অভিনেত্রীকে ঘিরে ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা।
বিচারক শৈলেন্দ্র মালিক এদিন জানান, জ্যাকলিনের জামিনের আবেদনের রায়ের কপি এখনও তৈরি হয়নি। এর আগে এই বিচারকই অভিনেত্রীর অন্তরবর্তীকালীন জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন। জ্যাকলিনের জামিনের আবেদনের শুনানি শেষ হওয়ার পর শুক্রবার রায়দানের দিন নির্দিষ্ট ছিল, কিন্তু তেমনটা ঘটল না।
জ্যাকলিনের জামিনের তুমুল বিরোধিতা করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, অন্যদিকে জ্যাকলিনের আইনজীবীর দাবি, ইডি ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা দিয়েছে তাই জ্যাকলিনকে গ্রেফতারের কোনও প্রয়োজন নেই। ইডির আইনজীবীরা কোর্টকে আগেই জানিয়েছে, দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন জ্যাকলিন। পাশাপাশি এই মামলার তথ্য-প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছেন জ্যাকলিন, এমনও অভিযোগ নায়িকার নামে। এই তর্ক সামনে রাখতে গিয়ে আদালতের হাতে ভর্ৎসনার শিকার হয় ইডি। কোর্ট স্পষ্ট জানতে চায়. ‘কেন এতদিন জ্যাকলিনকে গ্রেফতার করা হয়নি?’ ইডিকে বিচারক প্রশ্ন করে, ‘কারও মুখ দেখে পদক্ষেপ করবেন না। যদি তথ্য-প্রমাণ থেকে থাকে তাহলে এতদিন তদন্ত চলাকালীন কেন জ্যাকসিন ফার্নান্ডেজকে গ্রেপ্তার করা হয়নি? অন্য অভিযুক্ত তো জেলে রয়েছেন।’
আপতত জ্যাকলিনের ভাগ্য ঝুলে রইল আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত। এদিন থমথমে চোখমুখ নিয়েই পাতিয়ালা হাউজ কোর্টে হাজির হন জ্যাকলিন। পরনে সাদা ফরম্যাল শার্টি আর কালো প্যান্ট। মিডিয়ার ক্যামেরার ঝলকানি উপেক্ষা করেই ভিতরে প্রবেশ করেন, পরে তড়িঘড়ি আদালত চত্বর ছাড়েন।
গত ১৭ই অগস্ট দিল্লি হাইকোর্টে পেশ করা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) স্পষ্ট জানিয়েছে জেলবন্দি জালিয়াত সুকেশ চন্দ্রশেখরের থেকে লাভবান হয়েছেন জ্যাকলিন। কনম্যান সুকেশ চন্দ্রশেখরের কালিমালিপ্ত অতীতের কথা জেনেও কেবলমাত্র টাকার লোভের তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন অভিনেত্রী, দাবি ইডির। এমনকী ওয়েব সিরিজের লেখকের পারিশ্রমিক পর্যন্ত সুকেশের কাছ থেকে আদায় করেছিলেন নায়িকা।
যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে জ্যাকলিনের দাবি, তিনি নিজেই প্রতারণার শিকার। সুকেশ চন্দ্রশেখর এবং তাঁর সহযোগীদের অপরাধমূলক কাজের ফল ভুগতে হচ্ছে তাঁকে। নিজেকে ‘পরিস্থিতির শিকার’ বলে উল্লেখ করেন জ্যাকলিন। জামিনের আবেদনে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, সুকেশের কাজ থেকে দামী দামী উপহার নেওয়ার কথা অস্বীকার করছেন না তিনি, তবে সেগুলো অপরাধের টাকায় কেনা হয়েছে তা জানা ছিল না তাঁর।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২০০ কোটির আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন সুকেশ এবং তাঁর স্ত্রী লীনা মারিয়া পল। গ্রেফতারির পর সুকেশের সঙ্গে জ্যাকলিন ফার্নান্দিজের ঘনিষ্ঠতার কথা প্রকাশ্যে আসে। তদন্তকারীদের সুকেশ জানায়, অভিনেত্রীকে ৫.৭১ কোটি টাকার উপহার দিয়েছে সুকেশ চন্দ্রশেখর। অভিনেত্রীর পরিবারের লোকজনকেও কোটি কোটি টাকা দিয়েছে সে। জ্যাকলিনের সঙ্গে সম্পর্কে থাকবার কথা নিজের মুখেই ইডির আধিকারিকদের জানিয়েছে সুকেশ। যদিও নায়িকা সেকথা অস্বীকার করেছেন, তবে দুজনের ফাঁস হওয়ার ঘনিষ্ঠ ছবি সুকেশের দাবিকেই সত্যি প্রমাণ করছে।
For all the latest entertainment News Click Here