‘ডাক্তার কাকু’ প্রসেনজিৎ-এর ছেলে ঋদ্ধি, বাবা-ছেলের সম্পর্কের গল্প বলবেন পাভেল
ভগবানের পর যদি মানুষ সবচেয়ে বেশি ভরসা যাঁর উপর করে, তিনি ডাক্তার। তবুও অনেকের মতেই ‘চিকিত্সা ব্যবস্থা নয়, চিকিত্সা ব্যবসা এখন’। সম্প্রতি গোটা বিশ্ব করোনার গ্রাসে, এই কঠিন পরিস্থিতি গত দু-বছর ধরে যাঁরা অগুণতি মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন চিকিত্সকরা। ডাক্তারি পেশার সঙ্গে জড়িত দুই ধরণের মানুষ, এই দু ধরণের মানসিকতা ও তার প্রতিফলনের গল্প বলবেন পরিচালক পাভেল। সৌজন্যে তাঁর নতুন ছবি ‘ডাক্তার কাকু’। সদ্যই ‘কলকাতা চলন্তিকা’র ঘোষণা সেরেছিলেন পরিচালক, সেই রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন চমক ‘রসগোল্লা’ খ্যাত এই পরিচালকের।
আর এই ছবির সবচেয়ে বড় চমক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও ঋদ্ধি সেনের যুগলবন্দি। বাবা-ছেলের সম্পর্কের সমীকরণ বিরাট অংশ জুড়ে থাকবে এই ছবিতে। বুম্বাদার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করবেন ঋদ্ধি সেন। ‘ডাক্তার কাকা’ প্রযোজনার দায়িত্বে থাকছেন এনা সাহা। ছবিতে প্রসেনজিত ও ঋদ্ধির সঙ্গে স্ক্রিনও শেয়ার করবেন এনা।
প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়,’এটাই পাভেলের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ, তবে ওর সব ছবি আমি দেখেছি, খুব সুন্দর ছবি বানায়। ডাক্তারদের নিয়ে পৃথিবীর সর্বত্র আলোচনা-সমালোচনা সবই হয়। তবে গত দেড়-দু বছর ধরে আমরা যেমন ঈশ্বরকে ডাকি, তেমন ডাক্তারদের ডেকেছি। তাঁরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে, নিজেদের পরিবারের কথা না ভেবে আমাদের সেবায় নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। আর সেই ছবিটা শুধু ভারতবর্ষের নয়, গোটা পৃথিবীর’। বুম্বাদার কথায়, ‘আমারা কিছু কিছু ডাক্তারদের কথা জানি, প্রথমেই বলব ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের কথা। লোকে বলত তাঁকে দেখলেই মানুষ সুস্থ হয়ে যায়। ডাক্তার কাকু তাঁদের প্রতিনিধি যাঁরা শুধু ওষুধ দিয়ে নয়, যাঁরা ভালোবেসে, মন থেকে চিকিত্সা করেন। এমনই একটা চরিত্র খুব ভালোবেসে লিখেছে পাভেল। এটা আমার কাছে একটা বড় সুযোগ, ডাক্তারদের প্রতিনিধি হয়ে তাঁদের সেই যুদ্ধটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করব’।
কো-স্টার ঋদ্ধি সেনকে নিয়ে অভিনেতা জানালেন, ‘যে মানুষটাকে আমি কোলে করে বড় করেছি, তবে আমি সে আমাদের দেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা… ইতিমধ্যেই জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে, সেই ঋদ্ধি সেন এই ছবিতে আমার ছেলের ভূমিকায় রয়েছে। ভারতের কিছু অন্যতম সেরা অভিনেতার মধ্যে ও, সেটা প্রমাণও করে দেখিয়েছে। আমার কাছে বড় চ্যালেঞ্জ ঋদ্ধির সঙ্গে কাজ করা’।
এই ছবিতে ঋদ্ধিকেও দেখা যাবে চিকিত্সকের ভূমিকায়। তবে বাবার সঙ্গে তাঁর মতাদর্শ মেলে না। পেশাগত ক্ষেত্রে বাবা-ছেলের এই মতপার্থক্য কীভাবে তাঁদের সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব নিয়ে আসবে? কেমনভাবেই বা সেই দূরত্ব ঘুচবে? সেই সব উঠে আসবে এই ছবিতে।
পরিচালক পাভেল ‘ডাক্তার কাকু’ নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানালেন, ‘বাবা-ছেলের গল্প, একটা সোশ্যাল ড্রামা। অতিমারীর সময়ে আমরা দেখেছি ডাক্তারা কীভাবে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছেন। সেটা যেমন সত্যি, তেমনই চিকিত্সা ব্যবস্থা অনেকের কাছে আজ ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু মহত্ উদ্দেশ্য নিয়েও প্রচুর ডাক্তার কাজ করছেন। এই পরস্পর বিরোধী দিকটাই আমরা তুলে ধরব এই ছবি’।
প্রথমবার প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশক হিসাবে কাজ, উত্তেজিত পাভেল। জানালেন,’আমাকে ভালোবেসে অসুরের টিজারের ভয়েস ওভার করে দিয়েছিলেন। কিন্তু এটাই আমাদের প্রথম কাজ। বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করতে গেলে ডাক্তার কাকু-র মতোই একটা ছবির দরকার পড়ে। আমি খুব উত্তেজিত, আর সেই উত্তেজনার প্রতিফলনটা কাজে দেখাতে হবে এইটুকুই বলব’।
পরিচালকের কথায়,আগামী বছর জানুয়ারিতে ‘ডাক্তার কাকু’র শ্যুটিং শুরু হবে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২১-এর ১লা জুলাই ‘জাতীয় চিকিত্সক দিবস’-এ মুক্তি পাবে এই ছবি। চিকিৎসক হিসেবে বিধান চন্দ্র রায়ের নানা গল্পগাথা আজও রূপকথার মতো বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে আছে, সেই মানুষটির জন্মবার্ষিকী তথা মৃত্যুবার্ষিকী ১লা জুলাই, যা স্মরণ করে পালিত হয় ‘জাতীয় চিকিত্সক দিবস’।
For all the latest entertainment News Click Here