WC জিততে তিন দশক লেগে গেল, এটা দিয়েগোর জন্য- মেসির খোলা চিঠিতে আবেগের বিস্ফোরণ
কথায় আছে, সবুরে মেওয়া ফলে! আর সেটা ফলাতে হলে কঠোর পরিশ্রমও করতে হয়। অবশেষে লিওনেল মেসির আর্জেন্তিনা সেই মেওয়া ফলিয়েছে। ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে তারা বিশ্ব জয় করেছে। কাতারে ২০২২ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় লিও মেসির ক্য়ারিয়ারও পূর্ণতা পেয়েছে। সেই ২০০৬ সাল থেকে টানা পাঁচ বার বিশ্বকাপ খেলার পর, অবশেষে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে উঠেছে তাঁর।
বহু প্রতীক্ষার পর এই সাফল্য। স্বাভাবিক ভাবেই এর সেলিব্রেশনের জন্য মঙ্গলবার জাতীয় ছুটিও পালিত হয়েছে আর্জেন্তিনায়। আর স্বপ্নপূরণ হওয়ার পর থেকে মেসি যেন আবেগে ভেসে চলেছেন। বিশ্বকাপ ট্রফি তিনি হাতছাড়াই করছেন না। ঘুমোতেও যাচ্ছেন সেই ট্রফি নিয়েই। শান্ত স্বভাবের মেসি তাঁর আবেগকে একেবারেই গোপন করছেন না। এ বার তো তিনি সেই উপচে পড়া আবেগ প্রকাশ করেছেন একটি খেলা চিঠির মাধ্যমে। চিঠির প্রতিটি লাইনে ছিল আবেগ, উচ্ছ্বাস, উদ্বেলতার বিস্ফোরণ। সেই সঙ্গে সাফল্য-ব্য়র্থতা মিলিয়ে এক হৃদয়স্পর্শী ভিডিয়োও পোস্ট করেছেন।
আরও পড়ুন: কতটা কষ্ট পাচ্ছিলে, জানি- আর্জেন্তিনার বিশ্ব জয়ের পর মেসিকে আবেগঘন বার্তা স্ত্রীর
মেসি সেই চিঠিতে লিখেছেন, ‘গ্র্যান্ডোলি থেকে কাতার। প্রায় ৩০ বছর। বিশ্বকাপ জিততে তিন দশকের কাছাকাছি সময় লাগল আমাদের। দুঃখ, আনন্দ আমি সব মিলিয়ে ফুটবল আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি আজীবন। তাই চেষ্টা ছাড়িনি কোনও দিন। কখনও হাল ছাড়বো না বিশ্বাস ছিল।’
তিনি এই চিঠিতেই প্রিয় দিয়েগো মারাদোনাকে সম্মান জানিয়ে লিখেছেন, ‘এই বিশ্বকাপটা দিয়েগোর জন্য। তিনি আমাদের স্বর্গ থেকে উৎসাহিত করেছেন। এই বিশ্বকাপটি তাঁদের সকলের জন্য, যাঁরা ফলাফলের আশা না করে, সব সময় জাতীয় দলকে উৎসাহিত করেছেন। তাদের জন্য যারা রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থেকেছে, খেলার সুযোগ না পেয়ে। ২০১৪ সালে যারা বিশ্বকাপ জয়ের কাছে পৌঁছেও জিততে পারেনি, এই বিশ্বকাপ তাঁদেরও। সকলের একটাই আকাঙ্খা ছিল। সব কিছু আমাদের ইচ্ছে মতো হয় না। আমাদের দলটা সত্যিই খুব সুন্দর। কোচিং স্টাফ, টেকনিক্যাল স্টাফ- ওঁদের হয়তো সকলে চেনেন না। ওঁরাও এই স্বপ্নটা সফল করার জন্য একই ভাবে দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছেন।’
আরও পড়ুন: বিদায়বেলায় অধরা মাধুরী স্পর্শ- মেসির FIFA WC 2022-এর ট্রফি নেওয়ার মুহূর্ত ভাইরাল
তবে সব সাফল্যের সঙ্গে ব্যর্থতাও জড়িয়ে থাকে। আর সেই কথা সাফল্যের আনন্দের মাঝে ভোলেননি মেসি। তিনি বলেছেন, ‘ব্যর্থতাও সাফল্যের পথের সঙ্গী। ব্যর্থতা ছাড়া সাফল্যের স্বাদ পাওয়া সম্ভব নয়।’ চিঠির শেষে তিনি আর্জেন্তিনার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দেশের ফুটবলকে আরও এগিয়ে যেতে বলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এগিয়ে চলো আর্জেন্তিনা….’।
বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেন মেসি। টাইব্রেকারে দলের হয়ে প্রথম গোল তিনিই করেন। এ বারের বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে সোনালি বল জিতেছেন মেসি। তবে তিনি দলকে সাফল্য এনে দিতে পেরে সবচেয়ে খুশি। আর্জেন্তিনা এই নিয়ে তৃতীয় বার বিশ্বকাপ জিতল। দেশের হয়ে সাফল্য পান না বলে, অনেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ করে থাকেন মেসিকে। এ বার হয়তো সব সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিলেন মেসি।
For all the latest Sports News Click Here