Tahir Raj Bhasin Exclusive: ভালো চিত্রনাট্য পেলেই বাংলা ছবি করব!
এই মুহূর্তে হিন্দি ওয়েব সিরিজ জগতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ তাহির রাজ ভাসিন। বড়পর্দায় ‘৮৩’ ছবিতে সুনীল গাভাসকরের ভূমিকায় দেখা থেকে নেটফ্লিক্সের ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’ ছবিতে নায়কের চরিত্রে হাজির হয়েছেন তিনি। একটি জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ‘রঞ্জিশ হি সহি’র মতো ওয়েব সিরিজ। মুক্তির অপেক্ষায় নেটফ্লিক্সের আরও একটি ছবি ‘লুপ লপেটা’। সে ছবিতে তাহিরের বিপরীতে রয়েছেন তাপসী পান্নু। বড়পর্দা থেকে ওয়েব সিরিজ, সত্যজিৎ রায় থেকে তাপসী সবাই উঠে এল তাঁর কথায়। মুম্বই থেকে একান্ত সাক্ষাৎকারে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে সব কিছুই জানালেন এই মুহূর্তে বলিপাড়ায় হইচই ফেলে দেওয়া অভিনেতা তাহির রাজ ভাসিন।
প্রশ্ন : ডিসেম্বরে বড়পর্দায় ‘৮৩’। জানুয়ারিতে দু’টি বহুল জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’, ‘রঞ্জিশ হি সহি’-র মতো ওয়েব সিরিজের নায়ক। ফেব্রুয়ারিতে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেতে চলেছে ‘লুপ লপেটা’। ‘তাহির রাজ ভাসিন ফেস্টিভ্যাল’ বলার উপযুক্ত সময় কি এটাই?
(হাসি) এই কথাটা আমার বন্ধুরা, বাড়ির লোকেরাও বলেছেন। আমার কিছু না বলাই ভালো। তবে হ্যাঁ, শুনে মন্দ লাগে না। বেশ একটা উৎসবের মতো ব্যাপার আর কী! কেরিয়ারের সেরা সময় যাচ্ছে। পরিশ্রম করেছি, তারই হয়তো ফল পাচ্ছি। এখন চুটিয়ে কাজ করতে চাই। আর একটা কথা বলতে চাই।
প্রশ্ন: হ্যাঁ, বলুন না।
এখন অনেকেই হয়তো মজা করে কিংবা প্রশংসার সুবাদে এই কথাটা বলছেন, তবে গত দু’বছর কিন্তু টানা নিজের মতো করে কাজ করে গিয়েছি। লকডাউনের ফাঁকে ফাঁকেও। সেই সব কাজই এখন পরপর পেশ করা হচ্ছে দর্শকের সামনে।
প্রশ্ন: বেশ, বাংলায় সিনেমার কথা উঠলে সত্যজিৎ রায়-এর প্রসঙ্গ উঠবেই। তা সত্যজিতের ছবি দেখছেন নিশ্চয়ই?
আলবৎ দেখেছি! (জোর গলায়) আমি ছবি নিয়ে পড়াশোনা করেছি। কলেজে থাকতেই প্রথমবার দেখেছিলাম ‘পথের পাঁচালী’। আমার ভীষণ প্রিয় ছবি।
প্রশ্ন: একসময়ে টানা মঞ্চে অভিনয় করেছেন। এখন সমান্তরালভাবে বড়পর্দায় এবং ওটিটিতে কাজ করছেন। কোনও দিন যদি বাংলা ছবির প্রস্তাব পান কী বলবেন?
অবশ্যই করব। আমি তো একজন অভিনেতা। চিত্রনাট্য ভালো লাগলেই করব! তাছাড়া আমার অভিনীত ছবি ‘মর্দানি’-র পরিচালক প্রদীপদা (প্রদীপ সরকার) ছিলেন একজন বাঙালি আর নায়িকাও (রানি মুখোপাধ্যায়)।
প্রশ্ন: এটা কিন্তু বাংলার পরিচালকরা পড়বেন।
একদম! (হাসি)
প্রশ্ন: আর বাংলায় ক্রমশ বেড়ে চলা তাহিরের মহিলা ভক্তদের জন্য কোনও বার্তা?
নিশ্চয়ই বলতে চাই। আমাকে যে তাঁরা ভালোবাসছেন, এটাই আমার প্রাপ্তি। চাই আমার কাজ এভাবেই তাঁদের ভালো লাগুক। তাঁদের জন্যও অকুন্ঠ ভালোবাসা রইল।
প্রশ্ন: ভিলেন, ধূসর চরিত্র, রোম্যান্টিক নায়ক। তিন ভূমিকাতেই দেখা গিয়েছে আপনাকে। নিজে কোন চরিত্রে অভিনয় করতে পছন্দ করেন?
মুশকিলে ফেললেন দেখছি (হাসি)। এইভাবে উত্তর দেওয়াটা ঠিক হবে না। একরকম চরিত্রে ভালো অভিনয় করতে পারি এই লেবেল নামের সঙ্গে সাঁটাতে আমি নারাজ। বরং দেখুন, বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে কোনও চরিত্রে যদি একটি বেশি শেডস থাকে তাহলে যিনি অভিনয় করছেন তাঁরও বেশ মজা লাগে। ‘মর্দানি’-তে পুরোপুরি ভিলেন ছিলাম। এরপর ধরুন ‘ফোর্স ২ ‘-তে ধূসর চরিত্র। তবে এ বছর আমি রোম্যান্টিক লিড চরিত্রের দিকে বেশি করে নজর দিচ্ছি।
প্রশ্ন: প্রায় তিন দশক আগে অ্যান্টি-হিরো হিসেবে বড়পর্দায় পা রেখেছিলেন শাহরুখ খান। সেখান থেকে রোম্যান্টিক নায়ক হলেন। বাকিটা ইতিহাস। আপনার কেরিয়ারের দিকে তাকালে কিন্তু দেখা যাচ্ছে ‘ভিলেন’ হিসেবে জনপ্রিয় অভিনেতা এখন রোম্যান্টিক নায়ক। ব্যাপারটা …
থামুন, থামুন।(লাজুক হাসি) মন্দ বলেননি তো কথাটা। সত্যি বলতে কী আমি নিজেও কোনও দিন ভাবিনি। তবে এটা অনেক, অনেক বড় তুলনা। এখনও অনেক দূর যেতে হবে আমাকে। আর জানেন তো পরিকল্পনামাফিক এভাবে এগোনো যায়ও না। চেষ্টা করেছি সৎভাবে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজের কাজ করে যেতে।
প্রশ্ন: এরপর আবার ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ডের পরিবারের নয়। বলিউডে কোনও গডফাদার নেই।
একেবারেই তাই। যতটুকু হয়েছি সেল্ফমেড। তবে হ্যাঁ, আমার কেরিয়ারে যশ রাজ ফিল্মস সংস্থার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাঁদের অবদান রয়েছে।
প্রশ্ন: চলতি বছর ওটিটি স্পেসে সেরা অভিনেতার বিভাগে ইতিমধ্যেই আপনার নাম নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। মনোজ বাজপেয়ী, কে কে মেনন-দের মতো অভিনেতা থাকা সত্বেও বলা হচ্ছে আপনি অন্যতম শক্তিশালী দাবিদার এই পুরস্কারের। কী বলবেন?
এটুকুই বলব, আমি ভীষণ সম্মানিত। মনোজ বাজপেয়ী, কে কে মেননদের মতো বাঘা বাঘা সব অভিনেতাদের সারিতে আমার নাম উঠেছে দেখেই দারুণ খুশি। ওঁদের কাজকে অসম্ভব সম্মান করি।
প্রশ্ন: ‘রঞ্জিশ হি সহি’-তো রোম্যান্টিক ঘরানার। মহেশ ভাটের জীবনীর অংশ বলা যায় নিশ্চয়ই?
না, না। এখানে একটা কথা বলার রয়েছে। এটি কোনও বায়োপিক নয়, বলতে পারেন ভাটসাবের জীবনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি করা হয়েছে। ওঁর জীবন থেকে ৪০% নেওয়া হয়েছে। বাকি ৬০% কাল্পনিক। ভাটসাব তো এই সিরিজের ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসারও।
প্রশ্ন: ‘লুপ লপেটা’-র সুবাদে তাপসী পান্নুর সঙ্গে এই প্রথমবার কাজ করলেন…
এককথায় দারুণ ছিল এই জার্নি। দুর্দান্ত অভিনেত্রী, যাকে বলে ‘পাওয়ার হাউজ পারফর্মার’। প্রথমবার কাজ করলাম একসঙ্গে। আর হ্যাঁ, দিব্যেন্দু ভট্টাচার্যের কথা বলতে চাই। কী অসম্ভব ভালো অভিনেতা। চরিত্রের প্রতি কী অসম্ভব ডেডিকেশন। সেটের বাইরে চুটিয়ে আড্ডা দিয়েছি আবার একসঙ্গে তেমনই দুর্দান্ত কাজ করেছি। ওঁর সঙ্গে এই ছবিতে দারুণ কিছু সিকোয়েন্স শেয়ার করেছি।
প্রশ্ন: ‘লুপ লপেটা’ তো বিখ্যাত জার্মান ছবি ‘রান লোলা রান’ এর রিমেক। দর্শক কী পাবেন এখান থেকে?
খুব ভালো প্রশ্ন। দেখুন একটা ভালো গল্প তো আছেই। বেশ অন্যরকমের। আর এই ছবি তাঁর অফিসিয়াল রিমেক হলেও আমাদের দেশের দর্শকের কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে। মানে বলতে চাইছি ‘রান লোলা রান’ এর গল্পের ছাঁচটুকু নিয়ে পুরোপুরি দেশি ছবি তৈরি করেছি আমরা। তাই ভারতীয় ফ্লেভারটাও জমিয়ে পাবেন। হরেক কিসিমের রং পাবেন ছবি। ছবিতে খুব সুন্দর করে ভারতীয় সুরের ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রশ্ন: ‘লুপ লপেটা’-র ‘সত্যা’-কে নিয়ে কী বলবেন?
বিশ্বাস করুন, আমি ভেবে রেখেছিলাম যদি কোনওদিনও রোম্যান্টিক নায়ক হই তাহলে চিরাচরিত নায়কের যা সংজ্ঞা সেরকম কিছু করব না। একটু ‘আউট অফ দ্য বক্স’ কিছু করব। এই ‘সত্যা’ এক্কেবারে তাই। প্রেমে মজে থাকলে একরকম আবার ভয় টয় পেয়ে টেনশনে পড়ে গেলে অন্যরকম। মানে অনেক সময় ভালো করতে গিয়ে গন্ডগোল করে ফেলে। আবার কখন কী করে বসে ঠিক নেই। এককথায় বড্ড আনপ্রেডিক্টেবল। তবে বেশ মজার। তবে এটাও ঠিক ‘সাভি’ (তাপসী অভিনীত চরিত্র)-কে দারুণ ভালোবাসে ‘সত্যা’।
For all the latest entertainment News Click Here