Pathaan Movie Review- উড়ন্ত খানের দুরন্ত ছবি
কোনও ঘুর কথা নয়। সোজা কথা সোজা ভাবেই বলছি প্রথমে। কেন পাঠান দেখতে যাবেন না? প্রথমত, শাহরুখের হট লুক দেখে ধপাধপ ক্রাশ খাবেন। এই ৫৭ বছরের লোকটার যে এই রকমের ফিজিক হতে পারে দেখলে মাথা ঘুরে যাবে, জিমে যাওয়ার নেশাও ধরতে পারে! দীপিকাকে দেখে অবচেতনেই ‘উফ’ বলে ফেলবেন বারবার। যাঁরা ভেবেছিলেন হলে গিয়ে ঘুমাবেন, তাঁরা ঘুমনোর জন্য একদম যাবেন না, কারণ ঘুমাতেই পারবেন না। যাঁরা ভেবেছিলেন শাহরুখের নিন্দে করবেন বলে হলে যাবেন, তাঁরাও যাবেন না। কারণ, ইয়ে ওই স্কোপটাই পাবেন না। আর ও হ্যাঁ, এত হাততালি আর সিটির আওয়াজ পাবেন যে কিছু সংলাপ মিস করেও যেতে পারেন! ফলে বুঝে গেছেন কেন ‘যাবেন না’ এই সিনেমা দেখতে?
এবার আর সিনেমার কথায়, চার বছরের অপেক্ষা সার্থক! কিং নিজের ফর্মে ফিরে এসেছেন। না কেবল ফিরে আসেননি। তিনি এসেছেন, অভিনয় করেছেন, আর জয় করে নিয়েছেন। ‘৫ সেকেন্ড’ বলে প্রথম দৃশ্যে ওই এক চিলতে রোদ পড়া রক্তচক্ষু শাহরুখ চেনা মেজাজেই পাঠান ছবিতে ধরা দিলেন।
পাঠানে শাহরুখ খানকে র-এর এজেন্টের ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। কোভিড ১৯ -এর পর আরেক অতিমারি হতে পারে এমন ভাইরাস সহ আরও অনেক কিছুর বিরুদ্ধে কীভাবে তিনি লড়াই করেন সেটাই এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে। অবশ্য দেশের জন্য লড়াই করতে গিয়ে প্রেম করতে ভোলেন না পাঠান! আর পাঠান যাঁর প্রেমে পড়েছেন তাঁর চরিত্র নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তিনিই কী আসল ভিলেন? না, এই উত্তর আমি দেব না। বরং এই উত্তর খুঁজতেই আপনার হলে যাওয়া উচিত।
এবার আসি, মূল ভিলেনের কথায়। শাহরুখের থেকে কিছু কম নজর কাড়েননি জন আব্রাহাম ওরফে জিম। তাঁর ফার্স্ট লুক আর সঙ্গে বাঁশির শব্দ আপনাকে মুগ্ধ করবেই। তাঁর দুই চোখে প্রতিশোধের হিংসের বদলে সেই রাগ, ক্ষোভ বুঝতে এতটুকু অসুবিধা হবে না আপনার। এখানে তাঁকে দেখা যাবে এক প্রাক্তন ভারতীয় সেনার চরিত্রে। কিন্তু এক ভারতীয়, তাও আবার দেশের বীর সন্তানই কিনা শেষ পর্যন্ত নিজের দেশের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরল! হ্যাঁ, ধরল। আর তার নেপথ্যে আছে এক বিশাল বড় কারণ। সেই কারণই তাঁকে তাড়া করে বেরিয়েছে প্রতিশোধ নেওয়ানোর জন্য।
ফলে ছবি মূল তিন চরিত্রকে দুরন্ত বললেও কম বলা হবে। আর ইয়ে, শাহরুখ আর দীপিকার রসায়ন না বড়ই হট আর সিজলিং! এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে ডিম্পল কাপাডিয়াকে অনবদ্য লেগেছে। তিনি এখানেও একদম অচেনা অবতারে ধরা দিয়েছেন। বাদ যাননি আশুতোষ রানাও।
আরে, ভাইজানকে কী করে বাদ দিই! একটি বিশেষ দৃশ্যে, পূর্ব ঘোষণা মতোই সলমন খানকে দেখা গেল। দুই খানের যুগলবন্দী অ্যাকশন দৃশ্য আপনার নজর কাড়বেই! একই সঙ্গে টাইগার ছবিতে যে পাঠানকে দেখা যাবে সেই আভাসও পেয়ে যাবেন।
ফাটাফাটি অ্যাকশন দৃশ্য রয়েছে এখানে। সে প্রথম দৃশ্যে শূন্য থেকে নায়কের বন্দুক লুফে নেওয়া হোক বা গুন্ডাকে একহাতে টানতে টানতে নিয়ে যেতে গিয়ে শত্রুপক্ষকে গুলি ছোঁড়া হোক, সবেতেই তিনি সাবলীল। বেশ কিছু হেলিকপ্টার শট আছে এই ছবিতে, যা আপনার বিপি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট। গাড়ি, লরি, ট্রেন, হেলিকপ্টার সব কিছুর উপর যুযুধান দুই পক্ষকে লড়াই করতে দেখবেন এই ছবিতে। বলা ভালো এই অ্যাকশন দৃশ্যগুলোই হচ্ছে এই ছবির ইউএসপি।
সিনেমাটোগ্রাফি দুর্দান্ত এই ছবির। টানটান স্ক্রিপ্ট একদম। এতটুকু ঝিমিয়ে পড়েনি কোথাও। কিছু জায়গা প্রেডিকটেবল মনে হলেও, কিছু জায়গায় একদম চমকে যাবেন। আবার কিছু জায়গায় আপনার হাতের নখ কামড়াতে ইচ্ছে করবে, এতটাই রুদ্ধশ্বাসময় অবস্থা সেখানে। তবে হ্যাঁ, দর্শকরা একটি জায়গায় হ্যাপি নিউ ইয়ার ছবির দৃশ্য ফিরে পাবেন।
তবে সে সব বাদ দিলে, বেশরম রং গানে পাঠান কেন দর্শকরাও ‘ঝুমে’ উঠবে। তাই এসব অত্যাচার সহ্য করে সিদ্ধার্থ আনন্দের ছবির সাক্ষী থাকতে চাইলে নির্দ্বিধায় চলে যান। আর উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করুন কে বেশি ভালোবাসতে পারে বা কার ভালোবাসায় জোর বেশি, সন্তান নাকি প্রেমিকের?
For all the latest entertainment News Click Here