ISL 2022-23: ত্রাতা ম্যাকহিউ, ১০ জনের কেরালাকে হারিয়ে সেরা ছয় নিশ্চিত করল ATKMB
অবশেষে স্বস্তি ফিরে পেল বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। উচ্ছ্বসিত সবুজ-মেরুন সমর্থকেরাও। তিন ম্যাচ পরে জয়ে ফিরল এটিকে মোহনবাগান। ডার্বির আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। কার্ল ম্যাকহিউয়ের জোড়া গোলে কেরালা ব্লাস্টার্সকে ঘরের মাঠে ২-১ হারাল তারা। তবে জয়সূচক গোলটি হয়েছে, কেরালা দশ জন হয়ে যাওয়ার পর। এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গে লিগ টেবলের ছয় নম্বর থেকে এক লাফে পয়েন্ট তালিকার তিনে উঠে এল বাগান শিবির। ১৯ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট এটিকে মোহনবাগানের। তবে এই জায়গা ধরে রাখতে হলে মোহনবাগানকে ডার্বি জিততেই হবে।
প্লে-অফে জেতে হলে কেরালার কাছে হারলে চলত না। কারণ শেষ ম্যাচ ডার্বি। সেই ম্যাচের ফল সব সময়েই অনিশ্চিত। তাই যুবভারতীতে শনিবারের ম্যাচ মোহনবাগানের কাছে ছিল মরণ-বাঁচন লড়াই। এ দিন ম্যাচের শুরুর দিকে এক গোলে পিছিয়েও পড়েছিল বাগান। তার পর দুরন্ত কামব্যাক করে জুয়ান ফেরান্দোর টিম। তাদের আক্রমণের ঝাঁজে বারবার নড়ে যায় কেরালার রক্ষণ। আর এই আক্রমণের ঝাঁজ এ দিন বাড়িয়ে দেন কার্ল ম্যাকহিউ। তিনি চোটের জন্য হায়দরাবাদ ম্যাচে খেলতে পারেননি। তা না হলে হয়তো সেই ম্যাচে হেরে মাঠ ছাড়তে হত না সবুজ-মেরুনকে।
আরও পড়ুন: ফেরান্দোর পারফরম্যান্সে অখুশি ATKMB কর্তৃপক্ষ, পুরনো কোচকে ফেরানোর ভাবনা
তবে এ দিন মাঠে ফিরেই তাঁর দাপট দেখালেন ম্যাকহিউ। বেশ কয়েক ম্যাচ পর আবার দৃষ্টিনন্দন ফুটবলও খেলতে দেখা গেল মোহনবাগানকে। প্রথমার্ধে দুই দলেরই সমান আধিপত্য ছিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ প্রায় পুরোটাই বাগানের দখলে চলে যায়। বিশেষ করে ম্যাচের ৬৪ মিনিটে কেরালা দশ জন হয়ে যাওয়ার পর, বাগান যেন তাদের চেপে ধরে।
এ দিন জয়ের লক্ষ্যে সেই পুরনো ছকে ফিরে যান ফেরান্দো। দিমিত্রি পেত্রাতোসকে সামনে রেখে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে দল সাজান জুয়ান। ম্যাচের শুরুতে একটু ম্লান লেগেছিল। এমন কী ১৬ মিনিটের মাথায় পিছিয়েও পড়ে সবুজ মেরুন। অ্যাপোসটোলোসের পাস থেকে গোল করেন দিয়ামান্টাকোস দিমিত্রিয়স। তার আগেই অবশ্য গোলের সুযোগ পেয়েছিল হুগো বৌমাস এবং আশিক কুরুনিয়ান। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি।
তবে সমতা ফেরাতে খুব বেশি সময় নেয়নি বাগান শিবির। ম্যাচের ২৩ মিনিটের মাথায় দিমিত্রির ফ্রিকিক থেকে হেডে ১-১ করেন কার্ল ম্যাকহিউ। এ দিন প্রথম একাদশে ফিরলেও বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি হুগো। ম্যাচের ২৬ মিনিটে তাঁকে ফাউল করেন রাহুল কেপি। কেরলের ফরোয়ার্ডকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। হুগোকে বিরতিতে তুলে নেন ফেরান্দো। পরের ম্যাচই ডার্বি। তাই কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি।
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুর কাছে ISL 2022-23-এ প্রথম হার মুম্বইয়ের, সুনীলরা চাপে ফেললেন ATKMB-কেও
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই নামান গাল্লেগোকে। বিরতির পর আশিক, মনবীরদের প্রেসিং ফুটবলে ব্যাকফুটে চলে যায় কেরালা। ৫২ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত সবুজ মেরুন। পেত্রাতোসের ক্রস থেকে মনবীরের হেড পোস্টে লাগে। ৬৪ মিনিটে ম্যাচের রং পুরো বদলে যায়। আশিককে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদকার্ড (লাল) দেখে মাঠ ছাড়েন রাহুল কেপি। দশ জনের কেরালাকে পেয়ে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ায় সবুজ মেরুন। ৭১ মিনিটে জয়সূচক গোলটিও করেন কার্ল ম্যাকহিউ। কার্লের গোলেই বহু প্রত্যাশিত জয় আসে সবুজ-মেরুনে। জোড়া গোল করে ম্যাচের সেরা হন সবুজ মেরুন মিডিয়ো।
প্লে-অফে উঠলেও এটিকে মোহনবাগানের পারফরম্যান্সের গ্রাফ কিন্তু মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। ঘরের মাঠে শেষ জয় ছিল ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে। তার পর থেকেই চলছিল খরা। শেষ তিন ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি ফেরান্দোর দল। দু’টিতে হেরেছে, একটি একটি ড্র করেছে। তবে কেরালার বিরুদ্ধে জয় হয়তো ডার্বির আগে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। এবং ডার্বি জিতলে সেই আত্মবিশ্বাস আবার প্লে-অফে ভালো খেলতে সাহায্য করবে বাগানকে। এখন তাই সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা ডার্বি জয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
ইস্টবেঙ্গল তো আগেই প্লে-অফ থেকে ছিটকে গিয়েছে। মোহনবাগানও ছিটকে গেলে, বাংলার কোনও ক্লাবই আর আইএসএলের প্লে-অফে থাকত না। তাই বাংলার ফুটবলের জন্য সবুজ-মেরুনের জয়টা ছিল নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
For all the latest Sports News Click Here