ISL 2021-22: পাঁচ মরশুম পর কেরালার ফাইনালে পৌঁছনোর পাঁচ কারণ জেনে নিন

প্রথম তিন মরশুমে দুইবার ফাইনালে পৌঁছেও খেতাব জয় হাতছাড়া, তারপর পাঁচ মরশুমের দীর্ঘ অপেক্ষা। অবশেষে রবিবার পাঁচ মরশুম পর আবার আইএসএলের ফাইনালে নামছে কেরালা ব্লাস্টার্স, লক্ষ্য প্রথম খেতাব জয়। গত চার মরশুমে দুইবার লিগ তালিকায় শেষ থেকে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করার পর এই যাত্রাপথটা কিন্তু কেরালার জন্য একেবারেই সহজ ছিল না।

মরশুমের শুরুটাও এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ২-৪ ব্যবধানে হেরে করেছিল কেরালা। তবে সার্বিয়ান কোচ ইভান ভুকোমানোভিচ কোনও সময়ই দলের খেলোয়াড়দের মাথা নীচু হতে দেননি। বরং পদে পদে তাদের উৎসাহিত করেছেন এবং ম্যাচের পর ম্যাচ আইএসএল সাক্ষী থেকেছে তাঁর কোচিং দক্ষতার। ঠিক কী কী কারণে এবার ফাইনালে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে দক্ষিণ ভারতের পাওয়ার হাউসরা?

ভাল প্রাক-মরশুম প্রস্তুতি:-

যে কোনও মরশুম শুরুর আগে ভাল প্রস্তুতিটা ভীষণ জরুরি। তাই তো বিশ্বের সমস্ত সেরা ক্লাবগুলি মরশুম শুরুর আগে বেশ কয়েকটা কঠিন ম্যাচ খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়। হয়তো প্রাক মরশুম ম্যাচে দলগুলি নিজেদের সেরা খেলাটা খেলেনা, তবে গোটা মরশুমে যাতে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে, সেই কারণে প্রাক মরশুমে কঠোর পরিশ্রমটা খুবই জরুরি।

এই জায়গাতেই জোর দিয়েছেন কেরালা কোচ ভুকোমানোভিচ। কেরালা ব্লাস্টার্স আইএসএল শুরুর আগে ডুরান্ড কাপে অংশগ্রহণ করে। ফল একদমই আশানুরূপ ছিল না। মাত্র একটি ম্যাচ জিতে সেমিতেই পৌঁছতে পারেনি তাঁরা। তবে দলের শক্তি-দুর্বলতা বুঝতে, খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করতে এই প্রাক মরশুম প্রস্তুতিটা ভীষণ জরুরি।

ভারতীয় খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা:-

এ মরশুমের আইএসএলে পাঁচের বদলে চার বিদেশি খেলানোর নিয়ম চালু করা হয়েছিল। ফলে একদিকে যেমন ভাল ভারতীয় ফুটবলাররা থাকায় লাভ পেয়েছে কেরালার ফাইনালের প্রতিপক্ষ হায়দরাবাদ এফসি, তেমনি কেরালার মতো দলগুলিও ভারতীয় ফুটবলারদের প্রাধান্য দিয়েছে। যে সব দলে ভারতীয়রা ভাল খেলেছেন, সেই দলগুলিই ভাল করেছে, তা মোহনবাগান হোক বা কেরালা বা হায়দরাবাদ। রুইভা হরমিপাম, প্রভসুখন গিল,সাহাল আব্দুল সামাদরা এই মরশুমে নিজেদের জাত চিনিয়েছেন। ফলে কেরালার গাড়িও তড়তড়িয়ে এগিয়েছে।

মরশুমে সবথেকে বেশি ক্লিনশিট রাখা কেরালা গোলকিপার প্রভসুখন গিল। ছবি- আইএসএল।
মরশুমে সবথেকে বেশি ক্লিনশিট রাখা কেরালা গোলকিপার প্রভসুখন গিল। ছবি- আইএসএল।

তুখর ডিফেন্স ও দারুণ গোলরক্ষক:-

গত মরশুমে কেরালার ডিফেন্সিভ রেকর্ড একেবারে যাচ্ছেতাই ছিল, তবে এ মরশুমে তাঁর ভোল পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। কথায় আছে, ‘আক্রমণ ম্যাচ জেতায়, কিন্তু রক্ষণ খেতাব জেতায়।’ কেরালার ক্ষেত্রে এই বিষয়টা একেবারে সত্যি। মার্কো লেসকোভিচ-রুইভাদের গোলের আগে প্রাচীর তৈরি করা হোক বা প্রভসুখনের তুখর মরশুম। সবাই দলের রক্ষণভাগকে মজবুত করতে বড় ভূমিকা নিয়েছেন, যা দলকে সাফল্য এনে দিয়েছে। এ মরশুমে যে প্রভসুখনের দখলে সবথেকে বেশি ক্লিনশিট (৭) রয়েছে, তা কেরালার রক্ষণের পরিচয়বাহক।

সাহাল আব্দুল সামাদ:-

২৪ বছর বয়সী সাহাল যে ভারতীয় ফুটবলের সেরা প্রতিভাদের মধ্যে পড়ে, তা নিশ্চয়ই কারুর অজানা নয়। তবে কোনও না কোনও ভাবে সাহাল বিগত কয়েক মরশুমে নিজেকে সঠিকভাবে মেলে ধরতে পারেননি। তবে এবার সেই ছবিটা বদলেছে। দলের আক্রমণ বিভাগের মধ্যমণি সাহাল ছয় গোল করেছেন। তাঁর সঙ্গে আদ্রিয়ান লুনার বোঝাপড়া চোখে পড়ার মতো। হালকা স্থান বদলেই সাহালের ভাগ্য করে দিয়েছে। এ মরশুমে একেবারে মাঝমাঠ নয়, বরং উইং ধরে সাহালকে খেলান ভুকোমানোভিচ। তাতে একদিকে যেমন সাহাল বাড়তি একটু সময় পেয়েছেন, তেমনই ম্যাচের ওপর অনেক বেশি প্রভাবও ফেলতে পেরেছেন।

বল পায়ে কেরালার সাহাল আব্দুল সামাদ। ছবি- আইএসএল।
বল পায়ে কেরালার সাহাল আব্দুল সামাদ। ছবি- আইএসএল।

ব্যক্তি নির্ভর নয়, দল নির্ভর পরিকল্পনা:-

এ মরশুমে আক্রমণ বিভাগে কেরালার প্রধান আকর্ষণ লুনা-সাহাল জুটি। খেলা তৈরি হোক, সেমিফাইনালে গোল হোক বা কঠিন ম্যাচে ব্যক্তিদত দক্ষতায় ম্যাচের রঙ বদলে ফেলা, এরা দুইজনেই এই কাজ করে এসেছেন। তবে সব থেকে বেশি ক্লিনশিট (৮) রাখা দলের মোট পাঁচটি ভিন্ন সেন্টার ব্যাক পার্টনারশিপ ব্যবহার বা, প্রথম পাঁচ সর্বোচ্চ গোলদাতার মধ্যে একজনও কেরালা ফুটবলারের নাম না থাকা, একটি জিনিস প্রমাণ করে দেয়, কেরালা, ব্যক্তি নির্ভর নয়, দল নির্ভর ফুটবল খেলে ফাইনালে নিজেদের জায়গা পাকা করেছে।

এইসব কারণগুলিতেই ভর করেই তো একসময় নাগাড়ে ১০ ম্যাচ অপরাজিত থেকে লিগ তালিকার শীর্ষে পৌঁছেছিল কেরালা ব্লাস্টার্স। হ্যাঁ, শেষমেশ তারা চতুর্থ হয় বটে, তবে ফাইনালে এই কারণগুলিই তাদের পৌঁছতে সাহায্য করেছে।

For all the latest Sports News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.