ISL জিততেই সাহসী ফুটবলেই আস্থা ATK মোহনবাগানের, আত্মবিশ্বাসে ফুটছে বেঙ্গালুরু
আর মাত্র একটা ম্যাচ জিততে পারলেই ফের কলকাতায় আসতে চলেছে আইএসএল ট্রফি। শনিবার গোয়ায় জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে আইএসএল ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছে এটিকে মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু এফসি। আইএসএলে এই দুই দলই নিজেদের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। সেই ধারাবাহিকতা এবারের ফাইনালেও দেখাতে মরিয়া এটিকে মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু।
গোটা মরশুমে এই দুই দল দাপিয়ে ফুটবল খেলে। তবে মোহনবাগান মরশুমের শুরুতে ভালো ফুটবল উপহার দিলেও টুর্নামেন্টের মাঝামাঝি দিকে তাল কাটে। একটা সময় পরপর ম্যাচ হার এবং ড্রয়ের ফলে প্লে-অফ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল বাগানের। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা চালায় জুয়ান ফেরান্দোর দল। বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতে প্লে-অফে জায়গা করে নেয়।
তবে প্লে-অফে জায়গা করে নিলেও গত ম্যাচের ফলাফল চিন্তায় রাখছে বাগান টিম ম্যানেজমেন্টকে। গত ম্যাচে নির্ধারিত সময়ে একটিও গোল করতে পারেনি সবুজ-মেরুন। টাইব্রেকারে ফলাফল হয়। ফলে ফাইনালের আগে গোলের মুখ দেখতে না পারাটা মোটেই ভালো ভাবে দেখছেন না কোচ ফেরান্দো। তবে গত ম্যাচের ফলাফল নিয়ে খুব একটা যে চিন্তিত নন, তিনি তা পরিস্কার।
বিপক্ষ দলকে ভয় করে নয়, বরং সতর্কতা অবলম্বন করেই মাঠে নামতে চাইছে ফেরান্দোর ছেলেরা। তিন মরশুমে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ছ’বার। তার মধ্যে চারবারই জিতেছে এটিকে মোহনবাগান, একবার বেঙ্গালুরু ও একটি ম্যাচে ড্র হয়। এই মরশুমে প্রথম পর্বে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের গোলে জেতে বাগান। গত মাসে ফিরতি লিগে ২-১-এ জিতে মধুর প্রতিশোধ নেয় বেঙ্গালুরু। গত মরশুমে সুনীল ছেত্রী-হীন বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ৩-৩-এ ম্যাচ অমীমাংসিত রেখে মাঠ ছাড়ে সবুজ-মেরুন বাহিনী। প্রথমার্ধে ২৫ মিনিটের মধ্যে চারটি গোল হয় ও দ্বিতীয়ার্ধে ১৪ মিনিটের মধ্যে দু’টি গোল করে দুই দল। হাফ ডজন গোলের মধ্যে পাঁচটিই আসে সেট পিস মুভ থেকে। সেবার দ্বিতীয় লিগে মনবীর সিং ও লিস্টন কোলাসোর গোলে জেতে কলকাতার দল। ২০২০-২১ মরশুমে প্রথমে এটিকে মোহনবাগান ডেভিড উইলিয়ামসের গোলে জেতে ও পরেরবার রয় কৃষ্ণা ও মার্সেলো পেরেরার গোলে জেতে।
অন্যদিকে বেঙ্গালুরু এফসিও প্রস্তুত মোহনবাগানকে রুখে দিতে। এবারের মরশুমের শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি সুনীল ছেত্রীদের। হারতে হারতে বেশ চাপেই থাকে তারা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে যায় বেঙ্গালুরু। একের পর এক জয় আর লিগ টেবলে লাফিয়ে লাফিয়ে উত্থান। অবিশ্বাস্য এই উত্থানের পিছনে তাদের ইংরেজ কোচ সাইমন গ্রেসনের অবদান সবচেয়ে বেশি।
খারাপ সময়েও দলের প্রতি এতটুকু আস্থা হারাননি। বরং দলের ফুটবলারদের আরও উৎসাহিত করেছেন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য। তাঁদের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো যে সত্যিই সম্ভব, তা বারবার বুঝিয়েছেন রয় কৃষ্ণা, হাভিয়ে হার্নান্ডেজদের। আর যাদের ড্রেসিংরুমে সুনীল ছেত্রীর মতো একজন কিংবদন্তি ও তুখোড় মোটিভেটর থাকে, তাদের পক্ষেই এমনভাবে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। আত্মবিশ্বাসের স্তর কোন জায়গায় থাকলে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে পেনাল্টি শুট আউটে সব ক’টি শটে গোল করা যায়, সেটাই ভেবে দেখুন। এই আত্মবিশ্বাসটাই ফাইনালে তফাৎ গড়ে দিতে পারে।
প্রথম দশটি ম্যাচে মাত্র তিনটি জয় ও ছ’টি হারই তাদের শুরুতেই অনেকটা পিছিয়ে দেয়। ইস্টবেঙ্গল এফসিও তাদের দুই ম্যাচেই হারায়। ইস্টবেঙ্গলের কাছে ফিরতি লিগে হারের পর থেকেই ঘুরে দাঁড়ান সুনীলরা এবং টানা আটটি ম্যাচে জিতে লিগ টেবলে চার নম্বরে থেকে প্লে অফে পৌঁছায় তারা। এই সাফল্যের দৌড় এখনও চলছে। শনিবারও এই ছন্দ বজায় রাখার জন্যই মরিয়া হয়ে উঠবে তারা।
মোহনবাগানকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ তারা। নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে ভারত সেরা হওয়াই টার্গেট সুনীল ছেত্রীদের। পাশাপাশি বাগানও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ কোনওভাবেই হাতছাড়া করতে চায় না। একটা সময় পরপর ম্যাচ হারের ফলে ফেরান্দোকে নিয়ে যে সমালোচনা তৈরি হয়েছিল, সেই সব সমালোচনা জবাব দিতে চান বাগান হেড স্যার। প্রথমবার মোহনবাগানকে আইএসএল জয়ের স্বাদ পাইয়ে দিতে চান তিনি।
কিক অফ- ১৮ মার্চ, সন্ধ্যা ৭.৩০, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম, ফতোরদা, গোয়া সম্প্রচার- স্টার স্পোর্টস নেটওয়ার্ক, হটস্টার ও জিও টিভি
For all the latest Sports News Click Here