IPL-র ফর্ম্যাটে কবে WPL খেলা হবে? HT-তে মুখ খুললেন BCCI সচিব
বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। দেশের বিভিন্ন কোনা থেকে উঠে আসছে প্রতিভা সম্পন্ন মহিলা ক্রিকেটাররা। শুধু তাই নয়, গতবছর প্রথমবার উইমেন্স প্রিমিয়র লিগ চালু করে বিসিসিআই। সেই টুর্নামেন্টও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে প্রথম বছরই। উইমেন্স প্রিমিয়র লিগের সাফল্য অনেকটাই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে বোর্ড কর্তাদের। নিজের মুখেই স্বীকার করে নিলেন বিসিসিআই সচিব জয় শাহ। হিন্দুস্তান টাইমসের সঙ্গে একান্ সাক্ষাৎকারে এই নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। পাশাপাশি আগামী পরিল্পনা রয়েছে বোর্ডের, তাও প্রকাশ্যে এনেছেন বোর্ড সচিব।
সেই সাক্ষাৎকারে জয় শাহকে ভারতীয় বোর্ডের নতুন নীতি এবং প্রত্যেক ক্রিকেটারকে সমান বেতন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে যখন আমি প্রথমবার ভারতীয় বোর্ডের সচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করি সেই সময় আমার মূল লক্ষ্য ছিল মহিলা ক্রিকেটে উন্নতি করা। আমার এই মেয়াদকালে আমি মহিলা ক্রিকেটের জন্য অনেক কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি ওদের সমস্যা দূর করতে। প্রথম উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি ২০২১ সালে। তখন ঘরোয়া ক্রিকেটারদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়। বলতে গেলে মহিলা ক্রিকেটারদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেই সময়। প্রত্যেক ভারতীয় ক্রিকেটারদের সমপরিমাণ বেতনের সিদ্ধান্ত আগে নেওয়া পদক্ষেপেরই একটা নতুন দিক বলে আমি মনে করি। ভারতীয় ক্রিকেটের এটা একটা ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেয়।’
এই বছরেই ভারতীয় বোর্ড উইমেন্স প্রিমিয়র লিগ শুরু করেছে। যথেষ্ট সাফল্যের সঙ্গেই শেষ হয়েছে এই টুর্নামেন্ট। সেই বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দেন, ‘ভারতীয় উইমেন্স প্রিমিয়ম লিগকে সবদিক থেকে সার্থক করতে ভারতীয় বোর্ড প্রায় দুই তিন বছর ধরে নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিল। আমরা শুধু একটা আদর্শ সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম। সত্যি বলতে প্রথম বছরের এই সাফল্য আমাদেরকে অবাক করেনি। আমরা মাঠে নেমে নিজেদের কাজ করেছি। ৫৫ কোটি খরচ করা হয়েছিল এর পিছনে। ব্র্যান্ড ভ্যালু থেকে মার্কেট তৈরি করা, সবটাই হয়েছে একটা সঠিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে। এর ফল আমাদের সকলের সামনেই রয়েছে। ভারতীয় বোর্ড যে উচ্চ দক্ষতায় এই লিগকে পরিচালনা করছে তাতে আমি খুব আশাবাদী আগামীতে বিশ্বের সেরা মহিলা ক্রিকেট লিগ হতে চলেছে এটা। উইমেন্স প্রিমিয়র লিগ ৪৬৬৯.৯৯ কোটি ক্রমবর্ধমান বিড করেছে। ৯৫১ কোটি টাকায় মিডিয়া স্বত্ব বিক্রি হয়েছে। এই লিগ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিকেট লিগ হয়ে উঠছে। আইপিএলের পরেই রয়েছে। আমি সত্যিই খুশি যে সবাই এখানে বিনিয়োগ করেছে।’
মহিলাদের খেলার পরিধি বাড়াতে বিসিসিআই কী পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জিজ্ঞাসা করা হলে জয় শাহ বলেন, ‘আমরা মহিলা ক্রিকেটের কাঠামোকে শক্তিশালী করতে এবং তাদের অংশগ্রহণের আরও সুযোগ দিচ্ছি। আমরা আরও প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের তুলে আনার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে কঠোর পরিশ্রম করছি। আমরা সম্প্রতি অবসরে যাওয়া ক্রিকেটারদের জন্য সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা তাদের কোচিং বা এই সংক্রান্ত জায়গায় নিজেদেরকে কেরিয়ার গড়ে তোলার সুযোগ দিচ্ছি। এখন মহিলা আম্পায়ার এবং ম্যাচ রেফারি আছে। অনেক অল্পবয়সী মেয়েকে অফিসিয়াল স্কোরারদের ভূমিকায় দেখা সত্যি উৎসাহজনক। আমি মনে করি না ক্রিকেটে এমন কোনও মাঠ আছে যেখানে মহিলারা নেই।’
শোনা যাচ্ছে পরবর্তী মরশুমে মহিলা প্রিমিয়র লিগকে দিওয়ালির সময় শুরু করা হবে এবং হোমওয়ে ম্যাচে করা হবে। সেই বিষয়ে তিনি জানান, ‘আমরা পাঁচটি দল নিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছি এবং দ্বিতীয় সংস্করণেও পাঁচটি দল থাকবে। শুধুমাত্র এক মরশুমের পর ফরম্যাটে পরিবর্তন করা আদর্শ নয়। হ্যাঁ, দিওয়ালি একটা ভাল সময়। সেই সময় উইমেন্স প্রিমিয়র লিগ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হোম এবং অ্যাওয়ে ফরম্যাটে করার আগে আমাদের বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করতে হবে।’
আগামী বছর উইমেন্স প্রিমিয়র লিগের আগে মিনি নিলাম হবে কিনা তা জানতে চাওয়া হলে বোর্ড সচিব জানান, ‘হ্যাঁ, এই টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগে আইপিএলের মতো মিনি নিলাম হবে।’ আসন্ন ঘরোয়া মরশুমে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য বিসিসিআইয়ের পরিকল্পনা কী জানতে চাওয়া হলে, বোর্ড সচিব বলেন, ‘২০২৩-২৪ মরশুমে আমাদের ১৮৩৭টি ঘরোয়া খেলা হবে। যার মধ্যে ৮৩১টি মহিলাদের ম্যাচ। অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৯, অনূর্ধ্ব-২৩ এবং সিনিয়র স্তরে আটটি মহিলা টুর্নামেন্ট হবে।’
For all the latest Sports News Click Here