IND vs SA: আরও ১টি T20 সিরিজ জয় ভারতের,এ বার কোহলির রেকর্ডও গুঁড়িয়ে দিলেন রোহিত
রবিবার রাতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৬ রানে হারানোর পরে ভারত সিরিজে ২-০ অপ্রতিরোধ্য লিড পেয়েছে। এর ফলে রোহিত শর্মা অধিনায়ক হিসেবে টানা সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের নজির গড়েছেন। ভেঙে দিয়েছেন বিরাট কোহলির রেকর্ড।
রোহিত শর্মা ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর দলের দায়িত্ব নেন এবং তার পর থেকে তাঁর অধিনায়কত্বে দল কোনও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি। রোহিতের নেতৃত্বে ভারত টানা ১১টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল। এর আগে টানা সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল কোহলির নামে। তাঁর নেতৃত্বে ভারত ১০টি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল।
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়েরও নজির গড়েছেন রোহিত শর্মা। এর আগে মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলি বা ঋষভ পন্তরা অধিনায়ক হিসেবে যে কাজটা করতে পারেননি, সেটাই করে দেখিয়েছেন রোহিত। ভারত এর আগে কখনও ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারায়নি। এই প্রথম বার রোহিতের নেতৃত্বে সিরিজ জিতে ইতিহাস গড়ল ভারত।
আরও পড়ুন: ডেথ ওভারে মিলার ঝড়,ভাঙলেন ধোনির রেকর্ড,৫-এ নেমে একাধিক দলের বিরুদ্ধে শতরানেরও নজির
২০১৫ সালে প্রথম বার দক্ষিণ আফ্রিকা ভারত সফরে এসে একটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছিল। সেই সময় ধোনির নেতৃত্বে ভারত ০-২ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল। এর পরে, বাকি দু’টি সিরিজ ২০১৯ এবং ২০২২ সালে খেলা হয়েছিল। এবং এই দুটি সিরিজই ড্র হয়েছিল। ২০১৯ সালে কোহলির নেতৃত্বে ২ ম্যাচের সিরিজ ১-১ ড্র হয়েছিল। ২০২২-এ আবার পন্তের নেতৃত্বে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-২ ড্র হয়েছিল, সিরিজের একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে ভেসে গিয়েছিল।
রবিবার গুয়াহাটিতে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারই ভারতের ভিত শক্ত করে দেন। প্রথম উইকেটে ৯৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে রোহিত-রাহুল জুটি। ২৮ বলে ঝড়ো ৫৭ রান করেন রাহুল। কেএল রাহুলের কিছু আগেই ৩৭ বলে ৪৩ করে আউট হন রোহিত শর্মাও। ভারতের দুই ওপেনারকেই ফেরান কেশব মহারাজ। ভারতের দুই ওপেনার আউট হলেও ভারতের রানের গতি কিন্তু থামেনি। বরং বেড়েছে। কারণ তার পরেই শুরু হয় সূর্যকুমার যাদবের সাইক্লোন। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন বিরাট কোহলি। যার জেরে ২০০ রানের গণ্ডি টপকে যায় ভারত।
সূর্য অবশ্য তবে ২২ বলে ৬১ করে রান আউট হয়ে যান। তবে ইনিংস শেষ করে মাঠ ছাড়েন বিরাট কোহলি। ২৮ বলে অপরাজিত ৪৯ করেন বিরাট। আর ৭ বলে ঝড়ো ১৭ করে অপরাজিত থাকেন দীনেশ কার্তিক। যার জেরে ভারত এ দিন টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্কোর করে। ভারত এ দিন ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৭ রানের বিশাল স্কোর করে।
আরও পড়ুন: ঘরের মাঠে T20 সিরিজে প্রোটিয়াদের হারিয়ে ইতিহাস অধিনায়ক রোহিতের
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই প্রোটিয়া ব্রিগেডকে বড় ধাক্কা দিয়েছিলেন আর্শদীপ সিং। তবে বিধ্বংসী মেজাজে ডেভিড মিলার সব হিসেবই উল্টে দিচ্ছিলেন। কানের কাছ ঘেষে বেরিয়ে গিয়েছে ভারত। এ দিন দুরন্ত সেঞ্চুরি হাঁকান মিলার। একা হাতেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে দু’শোর গণ্ডি পার করান তিনি। কিন্তু তাঁর শতরানেও হার আটকাতে পারেনি প্রোটিয়ারা। কারণ নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানেই শেষ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ২১ রানে ম্যাচ জিতে ইতিহাস লেখে ভারত। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ জিতে গেলেন রোহিত শর্মারা।
আর্শদীপ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতেই এসেই তেম্বা বাভুমা (৭ বলে ০) এবং রিলি রোসোউকে (২ বলে ০) প্যাভিলিয়নে পাঠান। এক ওভারে দুই উইকেট নিয়ে চাপে ফেলে দেন প্রোটিয়াদের। তবে ওপেন করতে নেমে হাল ধরেছিলেন কুইন্টন ডি’কক। তিনি এবং চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা এডেন মার্করাম দুরন্ত ছন্দে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৯ বলে ৩৩ করে মার্করামও আউট হলে, ফের ধাক্কা খায় প্রোটিয়া ব্রিগেড। এর পর পাঁচে ব্যাট করতে আসেন ডেভিড মিলার।
গুয়াহাটিতে এ দিন ভারতীয় সমর্থকেরাও মিলার ঝড়ের সাক্ষী থাকতে পেরে অভিভূত। প্রত্যেকেই উপভোগ করলেন ডেভিড মিলারের চোখ ধাঁধানো অনিন্দ্য সুন্দর ইনিংসটিকে। ঝড়ের গতিতে ব্যাট করে প্রোটিয়াদের প্রায় জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে দিয়েছিলেন মিলার। অল্পের জন্য ফস্কে গেল লক্ষ্য। উল্টেদিকে উইকেট আঁকড়ে দর্শক হয়ে মিলারের ইনিংস উপভোগ করলেন কুইন্টন ডি’কক। ৪৭ বলে ঝড়ো ১০৬ রান করে অপরাজিত থাকেন মিলার। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৮টি চার এবং ৭টি ছক্কা। স্ট্রাইকরেট ২২৫.৫৩। ডি’কক আবার ৪৮ বলে ৬৯ করে অপরাজিত থাকেন। এত লড়াইয়েরও পরেও ২১ রানে ম্যাচ হারতে হল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
For all the latest Sports News Click Here