IND vs PAK: মাঠে অনুপ্রবেশকারীকে ৬ লাখ জরিমানা,ভারত অভিযোগ জানালে কঠোর হত শাস্তি
রবিবার আবেগপ্রবণ হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের হাইভোল্টেজ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এক ভক্ত মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল। এই অপরাধের জন্য তাঁকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে টিম ইন্ডিয়া কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। যদি তারা অভিযোগ জানাত, তবে অনুপ্রবেশকরীর শাস্তি আরও কঠোর হতে পারত।
এ দিন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি হয়ে গেল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচটি। কখনও জয়ের পাল্লা পাকিস্তানের দিকে, আবার কখনও ভারতের দিকে। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে উপস্থিত প্রায় লাখ খানেক দর্শক তখন দারুণ উৎকণ্ঠায়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ভারতই জিতে যায়। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। নাটকীয় শেষ ওভারের পর শেষ হাসি হাসে টিম ইন্ডিয়া।
এর আগে পাকিস্তানের ছুঁড়ে দেওয়া ১৬০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে চাপের মুখে পড়ে ভারত। ৩১ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছে ভারত, ঠিক তখন দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি এবং হার্দিক পান্ডিয়া।
আরও পড়ুন: জানি, ক্রিকেট কতটা নিষ্ঠুর আর অন্যায্য হতে পারে-রামিজ রাজার টুইটে ঝরে পড়ল হতাশা
এর আগে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এর আগে টস হেরে শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। তবে সেখান থেকে ঘুড়ে দাঁড়িয়ে ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে পাক ব্রিগেড। প্রথম ওভারে পাকিস্তান তুলতে পারে মাত্র ১ রান। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই তারা হারিয়ে বসে অধিনায়ক বাবর আজমকে। গোল্ডেন ডাক (১ বলে ০) করে সাজঘরে ফেরেন বাবর।
দলীয় ১ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারানোর পর ১৫ রানে দ্বিতীয় উইকেটের পতন হয় পাকিস্তানের। এ বারও সেই আর্শদীপ সিং। ভারতীয় পেসারকে হুক খেলতে গিয়ে ফাইন লেগ বাউন্ডারিতে ভুবনেশ্বরকে ক্যাচ দেন রিজওয়ান (১২ বলে ৪)। পাওয়ার প্লে-তে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩২ রান করে পাকিস্তান।
এরপর দলের হাল ধরেন ইফতিখার আহমেদ এবং শান মাসুদ। পাওয়ার প্লের শেষে ২ উইকেটে ৩২ রান ছিল পাকিস্তানের। ৫০ রানে পৌঁছতে ৯ ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। তারপর খোলস ছেড়ে বেরোন ইফতিখার। শান মাসুদের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৭৬ রান যোগ করেন।
আরও পড়ুন: কাঁধে চড়তে ভালোইবাসেন কোহলি-রোহিতের আগে যুবি, ভাজ্জির কাঁধে চড়েও মাঠে ছেড়েছেন
তবে শান মাসুদ আর ইফতিখার আহমেদ হাল ধরে। ১০ ওভারে পাকিস্তানের বোর্ডে উঠে বল সমান ৬০ রান। ১৫ রানেই সাজঘরে ফিরেছিলেন দুই ব্যাটিং স্তম্ভ বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান। স্বাভাবিকভাবেই খাদের কিনারায় ছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে উইকেট টেকানোর চেষ্টা করেন ইফতিখার আহমেদ আর শান মাসুদ।
৩৪ বলে ৫১ রান করে আউট হন ইফতিকার। পার্টনারশিপ ভাঙেন মহম্মদ শামি। এর পর অহেতুক বেহিসেবী শট খেলতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে দেন শাদাব খান (৫) এবং হায়দার আলি (২)। জোড়া উইকেট নিয়ে আবার ভারতকে ম্যাচে ফেরান হার্দিক। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে একপ্রান্ত আঁকড়ে রাখেন শান মাসুদ। মহম্মদ নওয়াজ (৯) এবং আসিফ আলি (২) ব্যর্থ হলেও শেষ দিকে শাহিনকে নিয়ে দেড়শো রানের গণ্ডি পার করেন শান। ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান তোলে পাকিস্তান। ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন শান মাসুদ। তিনটে করে উইকেট নেন অর্শদীপ সিং এবং হার্দিক পাণ্ডিয়া।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ে ভারত। মাত্র ১০ রানে ২ উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। ফ্লপ দুই ওপেনার কেএল রাহুল (৪) এবং রোহিত শর্মা (৪)। তবে এবার শাহিন জুজুতে ভরাডুবি নয়, ভারতের টপ অর্ডার ভাঙেন নাসিম শাহ এবং হ্যারিস রউফ। শুরুতেই দুই উইকেট হারানোর পর মনে হয়েছিল ভারতকে ম্যাচে ফেরাবে বিরাট কোহলি-সূর্যকুমার যাদব জুটি। প্রথম বলে সুদর্শন স্ট্রেট ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি। কিন্তু ১৫ রানে হ্যারিস রউফের বলে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন। পাওয়ার প্লের শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ছিল ৩১।
ম্যাচটা ধরতে হার্দিকের পরিবর্তে অক্ষরকে পাঠান রোহিত। কিন্তু লাভ হয়নি। ব্যক্তিগত ২ রানে রানআউট হন অক্ষর। ৩১ রানে ৪ উইকেট হারায় ভারত। এই জায়গা থেকে প্রত্যাবর্তন সহজ নয়। এককথায় অসম্ভব। অবিশ্বাস্যকে একমাত্র সম্ভব করতে পারতেন বিরাট কোহলি। করলেনও। মিরাকেল করে দেখালেন প্রাক্তন অধিনায়ক। ঠাণ্ডা মাথায় হার্দিককে নিয়ে লক্ষ্যে অবিচল থাকলেন কোহলি। ৪৩ বলে ৫০ রান সম্পূর্ণ করেন বিরাট। তারপরই ধরেন রুদ্রমূর্তি। বাকিটা ইতিহাস।
For all the latest Sports News Click Here