GT vs KKR: ড্রেসিংরুম থেকে নাইটদের হোটেল- রিঙ্কুকে ঘিরে আবেগের বিস্ফোরণ- ভিডিয়ো
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বাইরে কান পাতলে ভেসে আসছিল একটাই নাম- রিঙ্কু, রিঙ্কু..। আর হবে নাই বা কেন! রবিবার আমেবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে যে অসাধ্য সাধন করেছেন রিঙ্কু। কার্যত হারতে বসা ম্যাচকে জিতিয়ে দিয়েছেন তিনি। অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়, তা বেল এ ভাবে! অসম্ভব চাপের মাঝে ম্যাচের শেষ পাঁচ বলে ৫টি ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জেতানো, কোনও অলৌকিক ঘটনার চেয়ে কম কিছু নয়!
যে কারণে গুজরাট টাইটান্সের ঘরের মাঠে তাদের হারিয়ে উৎসবের আনন্দে মাতে কেকেআর শিবির। আর এই উদযাপনের কেন্দ্রে এক জনই রিঙ্কু সিং। দু’শোর উপর রান তাড়া করতে নেমে ৪০ বলে ৮৩ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন বেঙ্কটেশ আইয়ার। কিন্তু তাঁর লড়াইও রিঙ্কুর কাছে ম্লান হয়ে যায়। কারণ রিঙ্কু যদি শেষ ৫ বলে ৫টি ছক্কা না হাঁকাতেন তবে জয় অধরাই থাকত কেকেআর-এর। কাজে লাগত না বেঙ্কটেশের রানও। ঠাণ্ডা মাথায় যশ দয়ালের ওভারের শেষ পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে বাজিমাত করা রিঙ্কুই যে শনিবারের আসল হিরো, তা নিয়ে কারও কোনও সন্দেহ নেই!
আরও পড়ুন: এক ওভারে ৫ ছক্কা- গেইল, জাদেজাদের সঙ্গে একই আসনে KKR-এর রিঙ্কু
নীতিশ রানারা ড্রেসিংরুমে ফিরেই উৎসবে মাতেন। তাঁরা ড্রেসিংরুমেই গান ধরেন। সঙ্গে উদ্দাম নাচ। কেকেআর-এর অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রধান কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার, ভরত অরুণ এবং ‘শো-স্টপার’ রিঙ্কু সিং সহ সব প্লেয়াররাই আনন্দে গান ধরেছেন। ড্রেসিংরুম থেকে বের হওয়ার সময়ে ‘রিঙ্কু, রিঙ্কু’ শব্দব্রহ্মে তখন গমগম করছে গোটা স্টেডিয়াম।
কেকেআর ইনিংসের ১৭তম ওভারে রশিদ খানের হ্যাটট্রিক নাইট রাইডার্সকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। সেখান থেকে জয় পাওয়া কার্যত অসম্ভব ধরে নিয়েছিল কেকেআর-এর অতি বড় সমর্থকও। নাইট ডাগআউটে তখন ঘনিয়ে এসেছিল নিকষ অন্ধকার। কিন্তু সব হিসেব পাল্টে দেন রিঙ্কু।
স্বাভাবিক ভাবেই রবিবার নাইটদের উচ্ছ্বাসটা একটু বেশিই ছিল। উৎসব তাই ড্রেসিংরুমে শেষ হয়ে যাইনি। হোটেল পর্যন্ত গড়িয়েছিল। আমদাবাদের হোটেলের কর্মী এবং হোটেলে থাকা কেকেআরের সদস্যরা বিশেষ ভাবে স্বাগত জানান নীতীশ রানাদের। দলের বাস পৌঁছানোর আগেই উৎসবের আয়োজন সেরে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাসেল, নারিন, শার্দুল- পরপর ৩ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক রশিদের, তবে হিসেব বদলালেন রিঙ্কু
কেকেআর কোচ চন্দ্রকান্ত পন্ডিত ক্রিকেটারদের নিয়ে হোটেলে ঢুকতেই সকলে করতালি দিয়ে তাঁদের স্বাগত জানান। হোটেলের উপরের তল থেকে হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হয় বেগুনি বেলুন। তৈরি ছিল দলের অন্যতম স্পনসর সংস্থার পাঠানো বিশেষ কেক। ছিল শ্যাম্পেনও।
প্লেয়াররা একে একে বাস থেকে নেমে হোটেলে ঢুকতেই তারা দলের সদস্যদেহ সঙ্গে একে একে হাত মেলাম। জড়িয়ে ধরেন। করতালি আর উচ্ছ্বাসের জোয়ার তখন উপচে পড়ছে আমদাবাদের কেকেআর-এর হোটেলে। রিঙ্কু বাস থেকে নেমে হোটে ঢুকতেই সেই উচ্ছ্বাস আরও বেড়ে যায়। কেক কাটেন রিঙ্কু নিজে। তাঁকে কেকের ক্রিম মাখিয়ে ভূত করে, শ্যাম্পেনে ভিজিয়ে একেবারে উচ্ছ্বাসের বোমা ফাটে। রিঙ্কু হাসিমুখে ভালোবাসার সব অত্যচারই সহ্য করে নেন।
হোটেলের লবিতে উৎসব শেষে যে যাঁর ঘরে যান প্লেয়াররা। তবে রবিবারের গুজরাট টাইটান্স এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের ম্যাচটি যে আইপিএলের ইতিহাসে সেরাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। রিঙ্কুর জন্যই এই ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। লখনউয়ের দেওয়া ২০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেষ ওভারে নাইটদের প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। ক্রিজে ছিলেন রিঙ্কু সিং এবং উমেশ যাদব। বল করতে এসেছিলেন যশ দয়াল। প্রথম বলে স্ট্রাইকে ছিলেন উমেশ যাদব। তিনি ১ রান নেন। শেষ ৫ বলে নাইটদের দরকার ছিল ২৮ রান। এই পরিস্থিতিতে শেষ পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকান রিঙ্কু। সেই সঙ্গে নাইট রাউডার্সকে ৩ উইকেটে জয় এনে দেন।
রিঙ্কু রবিবার রাতে মনে করালেন কার্লোস ব্রেথওয়েটকে। একই ভাবে ইডেনে বেন স্টোকসের শেষ ওভারে পরপর ছয় মেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার। এ দিন যেন আইপিএলের মঞ্চে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটল।
For all the latest Sports News Click Here