স্রোতের বিপরীতে হাঁটতে বরাবর পছন্দ করেন তাহিরা কশ্যপ। তিনি শুধু একজন তারকা পত্নী নন, অদম্য জেদ নিয়ে মারণরোগ ক্যানসারকে হারিয়েছেন তাহিরা, দুই সন্তানের মা তথা আয়ুষ্মান খুরানার স্ত্রী একজন সফল লেখিকাও। সদ্যই প্রকাশিত হয়েছে তাহিরার লেখা বই ‘দ্য সেভেন সিনস অফ বিয়িং এ মাদার’ (The 7 Sins Of Being A Mother), আর এই বইতেই নিজের ব্যক্তিজীবনের কিছু চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতার কথা মলাটবন্দি করেছেন আয়ুষ্মান ঘরনি।
তাহিরা লিখেছেন সেই সময়কার কথা, যখন সাত মাসের ছেলেকে বাবা-মা’র কাছে ফেলে আয়ুষ্মানের সঙ্গে ব্যাংককে ‘হানিমুন’-এ গিয়েছিলেন তিনি। নিজের ইনস্টাগ্রামের দেওয়ালে ব্যাংকের সেই হানিমুনে ঘটা ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। ‘দ্য আনসেক্সি স্টোরি অফ মাই ব্যাংকক হানিমুন’ শীর্ষক বইয়ের এই অধ্যায়ে তাহিরা লিখেছেন ছয় মাস পর্যন্ত নিজের ছেলেকে স্তন্যপান করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। এরপর তিনি তা বন্ধ করে দেন, এর জন্য পরিবার ও পরিচিতদের সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন তিনি। ব্যাংককে রওনা দেওয়ার আগে ব্রেস্ট পাম্পের সাহায্যে ছেলের জন্য বুকের দুধ বেশ কিছু বোতলে জমা করে রেখে এসেছিলেন তাহিরা। কিন্তু এয়ারপোর্টে পৌঁছানো মাত্র তাঁর মা তাঁকে জানায় ছেলে একদম ঠিকঠাক রয়েছে কিন্তু বোতলে রেখে আসা সব দুধ ইতিমধ্যেই শেষ। এই কথা শুনে চিন্তায় পড়ে যান তাহিরা।
ব্যাংককে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দের মাঝেই ছেলের চিন্তা ঘিরে ধরে তাঁকে, ছেলে তিনদিন কী খাবে? কেমনভাবে থাকবে? এই অনুশোচনা ঘিরে ধরে তাহিরাকে। এমনকি এয়ারপোর্টে ব্রেস্ট পাম্পের সাহায্যে ফের দুধ বার করতে উদ্যোগী তাহিরাকে কোনওরকমে আটকে প্লেনে তোলেন আয়ুষ্মান। স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দের মাঝেও বেশ কিছু অস্বস্তিকর মুহূর্তের মধ্যে পড়তে হয় তাঁকে। তাহিরা লিখেছেন, হানিমুনে গিয়ে ‘সেক্সি ব্রা’ পরে মুশকিলে পরেন তিনি। কারণ সদ্য মা হওয়া তাহিরার অন্তর্বাস বুকের দুধে ভিজে যাচ্ছিল। সেই ‘আন-সেক্সি’, ‘আন-ব্যংকক’ পরিস্থিতির থেকে রেহাই পেতে বারে বারে ওয়াশরুমে ছুটছিলেন তিনি। ব্রেস্ট পাম্পের সাহায্যে বুকের দুধ বার করতে। তাহিরা লিখেছেন- ‘প্রত্যেক মা আমার পরিস্থিতিটা বুঝতে পারবে, কী কষ্ট করে কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে স্তন থেকে দুধ বার করতে হয়, আমার আরও খারাপ লাগছিল ওই দুধটা আমাকে ফেলে দিতে হচ্ছিল’। একবার ছেলের চিন্তায় ব্রেস্ট ফিডিং পাম্পে জমা দুধ ফেলে না দিয়েই রুমের ভিতর চলে আসেন তাহিরা। পরবর্তীতে মা-কে ফোন করে আরও মন খারাপ হয়ে যায় তাঁর। সাত মাসের ছেলে তাঁকে ছাড়া দিব্বি ভালো আছে, একদম কান্নাকাটি করছে না- এই কথা মোটে পছন্দ হয়নি আয়ুষ্মান পত্নীর। এরপর যে ঘটনার কথা তাহিরা লিখেছেন, তা পড়ে চোখ ছানাবড়া সকলের!
আচমকা আয়ু্ষ্মান ঘরনির মনে পড়ে ব্রেস্ট পাম্পে জমা দুধ ফেলতে ভুলে গেছেন, কিন্তু ওয়াশরুমে গিয়ে তাহিরা দেখেন মেশিন পুরোপুরি খালি। এরপর আচমকা আয়ুষ্মানকে প্রোটিন শেকের গ্লাস হাতে দেখতে পান তাহিরা, এবং বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশ্ন করেন ওয়াশরুমে পড়ে থাকা ব্রেস্ট পাম্প থেকে গায়েব হওয়া দুধ সম্পর্কে। গোঁফে লাগা দুধ মুছতে মুছতে মুচকি হাসেন আয়ুষ্মান। এরপর তাহিরা সরাসরি আয়ুষ্মানকে প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কি ওটা খেয়ে নিলে?’ পালটা জবাবে আয়ুষ্মান বলেন-‘ওই দুধটার তাপমাত্রা একদম সঠিক ছিল, ওটার পুষ্টিগত গুণমাণ খুব বেশি এবং প্রোটিন শেকের সঙ্গে খুব ভালোভাবে সেটি মিশে গিয়েছে!’
তাহিরা এই স্বীকারোক্তি বাহবা কুড়োচ্ছে নেটদুনিয়ায়। টুইঙ্কেল খান্না, দিব্যা দত্তারা কমেন্ট বক্সে লিখেছেন, ‘দুর্দান্ত’। সদ্য মা হওয়া নীতি মোহন লিখেছেন, ‘সব নতুন মায়েরাই তোমার বইটার সঙ্গে একাত্ম হতে পারবে, আমি তো ভীষণরকমভাবে পারছি’।
স্কুলজীবনের প্রেম আয়ুষ্মান-তাহিরার। দীর্ঘসময় ধরে প্রেম সম্পর্কে আবদ্ধ থাকবার পর ২০০৮ সালে বিয়ের পর্ব সারেন দুজনে। তাঁদের দুই সন্তান- বিরাজবীর এবং ভারুষ্কা।
For all the latest entertainment News Click Here
