ভিডিয়ো-বিশ্বমানের ফ্রি-কিকের গোল পেলেকে উৎসর্গ করলেন ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক ক্লেটন
বছরের শেষে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন ক্লেটন সিলভা। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার যুবভারতীতে বাজিমাত করেছে কনস্ট্যানটাইনের ছেলেরা। চলতি আইএসএলে একবারও ঘরের মাঠে জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। বছরের শেষ ম্যাচে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে শাপমুক্তি ঘটাল লাল হলুদ ব্রিগেড। হারের হ্যাটট্রিক আটকে দিলেন কনস্ট্যানটাইনের ছাত্ররা। জোড়া গোল করে ম্যাচের নায়ক হয়েছেন ক্লেটন সিলভা।
এদিন প্রথম গোল আসে ম্যাচের ৩৯ মিনিটে। বেঙ্গালুরুর বক্সের দিকে বল নিয়ে উঠে আসছিলেন সুহের। ক্লিয়ার করতে গিয়ে বলে হাত ছুঁইয়ে ফেলেন রোশন। পেনাল্টির সুযোগ পেয়ে যায় ইস্টবেহ্গল। শট নিতে এসে ঠাণ্ডা মাথায় গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ক্লেটন সিলভা। এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে লাল হলুদ ব্রিগেড।
আরও পড়ুন… উনুনের রান্নার স্বাদই আলাদা- রাজস্থানের খাঁটি খাবার উপভোগ করলেন সচিন তেন্ডুলকর
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের তীব্রতা বাড়ান রয় কৃষ্ণ, সুনীল ছেত্রীরা। গোল লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি শট মারেন বেঙ্গালুরুর ফুটবলাররা। শেষ পর্যন্ত গোল শোধ হয় ৫৫ মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে একাই বল নিয়ে উঠে আসেন কৃষ্ণ। বক্সের ডানদিক ঘেঁষে দৌড়ে এসে বল বাড়িয়ে দেন জাভিকে। সোজা গোলে বল ঠেলে দেন জাভি। ৬৫ মিনিটের পর দুই দলই পরিবর্ত নামায়। তবে নির্ধারিত সময়ে গোলের সংখ্যা বাড়াতে পারেনি কেউই। অতিরিক্ত সময়ে গোল লক্ষ্য করে অসাধারণ বাঁক খাওয়ানো শট মারেন ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক ক্লেটন সিলভা। তাঁর শেষ মুহূর্তের গোলেই তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করল ইস্টবেঙ্গল।
শেষ মুহূর্তে ওই ফ্রি-কিক নেওয়ার সময় ক্লেটনের মাথায় ঠিক কী চলছিল জিজ্ঞাসা করা হলে ক্লেটন সিলভা বলেন, ‘আমি ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। এর আগেও ফ্রি কিক থেকে গোল করেছি আমি। ডুরান্ড কাপেও ফ্রি কিক থেকে গোল পেয়েছি। যখনই ফ্রি কিক মারতে যাই, আমি ইতিবাচক থাকি।’ ক্লেটনকে নিয়ে বেশ আশাবাদী লাল হলুদ কোচ। গোটা মরশুমে যদি দশটা গোলের জন্যও ক্লেটনের ওপর নির্ভর করতে রাজি ইস্টবেঙ্গল এফসি-র ব্রিটিশ কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন। তিনি বলেন, ‘মানসিকতাই একজন পেশাদার ফুটবলকে সাফল্য এনে দেয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দৌড় শেষ করেনি ও। পেলের জীবনাবসানের দিনে ওর এই গোল এক জন ব্রাজিলীয় হিসেবে যথার্থ শ্রদ্ধার্ঘ্য। সে জন্য ওকে ধন্যবাদ।’
আরও পড়ুন… পেলে গেট তৈরি হবে বাগানে- ব্রাজিলের কিংবদন্তির স্মৃতিতে ডুবে সবুজ-মেরুন
এদিকে জোড়া গোল নিয়ে ক্লেটনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনি তাঁর গোল প্রয়াত কিংবদন্তি পেলেকে উৎসর্গ করতে চান। ক্লেটন সিলভা বলেন, ‘অবশ্যই। ম্যাচের আগে সুহেরকে বলেছিলাম, আজ গোল করতে পারলে ‘৭০-এ পেলে যে ভাবে সেলিব্রেট করেছিলেন, সে ভাবেই করব। আমার মনে হয়, পেলের কখনও মৃত্যু হতে পারে না। উনি চিরকাল আমাদের মধ্যে থেকে যাবেন।’ এদিকে কলকাতা ময়দান ফ্রি-কিকে অনেক স্মরণীয় গোল দেখেছে। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলার দক্ষিণ কোরিয়ার ডো ডং হিউন ২০১৫ সালে কলকাতা ডার্বিতে ফ্রি-কিকে জোড়া গোল করেছিলেন। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ক্লেটন সিলভাও ফ্রি-কিকে বিশ্বমানের গোল করে দলকে জেতালেন। ক্লেটনের এই অসাধারণ গোল, বহুদিন ধরে লাল-হলুদ জনতার স্মৃতিতে এই গোল থেকে যাবে। সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকে বলতে শুরু করেছেন যে এটা ISL-এর চলতি মরশুমের অন্যতম সেরা গোল।
For all the latest Sports News Click Here