FIFA WC 2022: টাইব্রেকারে স্পেনকে রুখে নায়ক বুনো- অঘটন ঘটিয়ে শেষ আটে মরক্কো
টাইব্রেকারে ফের ডোবাল স্পেন। এ বারও ভাগ্য ফিরল না। স্পেনের তিন জন ফুটবলার পেনাল্টি নিয়েছিলেন। এক জনও গোলে রাখতে পারলেন না। পাবলো সারাবিয়ার শট লাগলো পোস্টে। কার্লোস সোলের এবং সের্জিয়ো বুসকেতসের শট বাঁচিয়ে দিলেন মরক্কো গোলকিপার ইয়াসিন বোনো। ক্রোয়েশিয়ার লিভাকোভিচের পর এ বার স্পেনকে রুখে নায়ক হলেন ইয়াসিন বোনো।
টাইব্রেকার যেন স্পেনের কাছে বিভীষিকা হয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে বিশ্বকাপের মঞ্চে পাঁচ বার টাইব্রেকারে ম্যাচ গিয়েছিল স্পেনের। চার বারই হেরেছে তারা। টাইব্রেকার আশঙ্কা থেকেই শেষ ষোলোর লড়াইয়ের আগের দিন স্পেনের কোচ লুই এনরিকে জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের শিবিরে যোগ দেওয়ার আগে দলের ফুটবলারদের তিনি নাকি ১০০০ পেনাল্টি কিক প্র্যাকটিস করে আসতে বলেছিলেন। তবে হোমওয়ার্ক করেও কোনও লাভ হল না। একটা শটও গোলে রাখতে না পেরে কাতার বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেল স্পেন।
আরও পড়ুন: টাইব্রেকারে ছন্দপতন, সূর্যাস্ত জাপানের, লিভাকোভিচ মান বাঁচালেন ক্রোটদের
সাত গোলের ধামাকা দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা স্পেনকে অঙ্ক কষে আটকে দিল মরক্কো।পুরো ১২০ মিনিট তারা স্পেনকে খেলতে দিয়েছে। যত খুশি পাস খেলেছে স্পেন। বল পজেশনে এগিয়ে ছিল এনরিকের দল। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে দেয়নি মরক্কো। বুটের জঙ্গলে বারবার প্রতিহত হয়েছে স্পেনের যাবতীয় আক্রমণ। ১২০ মিনিট স্পেনকে আটকে রেখে গোলশূন্য ভাবে ম্যাচ শেষ করে মরক্কো। সেই সঙ্গে তারা ম্যাচ নিয়ে যায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে স্পেনের দুর্বলতার কথা মরক্কো ভালো ভাবেই জানত। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে বাজিমাত করেছে মরক্কো।
মঙ্গলবার এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে মরক্কোর কাছে ৩-০ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয় স্পেনের। এ দিন কার্যত ঘরের ছেলের গ্লাভসেই স্বপ্নের জলাঞ্জলি। প্রসঙ্গত বোনো সাভিয়ায় খেলেন। বিশ্বমঞ্চে টাইব্রেকারে ব্যর্থতার তালিকায় সবার উপরে স্পেন। অন্যদিকে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় আফ্রিকান দেশ হিসেবে পেনাল্টি শুট-আউটে অংশ নেয় মরক্কো। ২০১০ বিশ্বকাপে উরুগুয়ের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল ঘানা। কিন্তু এ দিন আফ্রিকানদের স্বপ্ন জিইয়ে রাখল অ্যাটলাস লায়ন্সরা। প্রথম বার বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠে ইতিহাস লিখল মরক্কো। প্রথম আফ্রিকার দেশ হিসেবেও তারা শেষ আটে জায়গা করে নিল।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গোলশূন্য। অতিরিক্ত সময়ের শেষেও পাল্টাল না স্কোরলাইন। ক্রোয়েশিয়া-জাপান ম্যাচের পর এটি ছিল দ্বিতীয় ম্যাচ, যেটি অতিরিক্ত সময়ের পর টাইব্রেকারে গড়ায়।
আরও পড়ুন: চোট সারিয়ে ফিরেই গোল করলেন নেইমার, ছুঁলেন পেলে-রোনাল্ডোর নজির
তবে এ দিন টাইব্রেকারে একটি ভুল করে ফেলেছিলেন এনরিকে নিজেই। ১২০ মিনিটের অন্তিমলগ্নে সিটার মিস করেন সারাবিয়া। তাঁর নার্ভ শান্ত হওয়ার আগেই তাঁকে টাইব্রেকারে প্রথম শট মারতে পাঠান স্পেনের কোচ। স্বাভাবিক ভাবেই সেই চাপের প্রতিফলন ঘটে মাঠে। পোস্টে মারেন সারাবিয়া। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়।
তবে নির্ধারিত সময় যে ফুটবল খেলেছিল স্পেন, অনায়াসেই ম্যাচটা শেষ করে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু মিসের বন্যা। প্রথম ম্যাচেই সাত গোল করে গোলের কোটা বোধহয় শেষ করে ফেলে তারা। পরের তিন ম্যাচে হয় মাত্র দু’গোল।
বিশ্বকাপের সারপ্রাইজ প্যাকেজ নিঃসন্দেহে মরক্কো। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ড্র করার পর বেলজিয়ামকে হারিয়ে চমক দিয়েছিল। গ্রুপ পর্বে অপরাজিত অ্যাটলাস লায়ন্স। কিন্তু তাই বলে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালেও স্পেনের মতো হেভিওয়েট টিমের বিরুদ্ধে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারবে মরক্কো, এমনটা হয়তো ভাবেনি কেউই। অঘটনের বিশ্বকাপের নকআউটে একমাত্র অঘটন ঘটালেন ইয়াসিন বোনোরাই।
For all the latest Sports News Click Here