‘ওর বাবা নিজের মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিল’, কন্যাদান বিরোধী কথা বলে ট্রোলড আলিয়া
হিন্দুধর্মের বিবাহ-রীতির একটি অংশ ‘কন্যাদান’। কিন্তু মেয়েরা কোনও দান সামগ্রী নয়, তাই ‘কন্যাদান নয়! কন্যামান বলতে শিখুন….’ সম্প্রতি এক নামী পোশাকের ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনে এমন বার্তাই দিয়েছেন আলিয়া ভাট। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে কট্টরপন্থীদের রোষের মুখে নায়িকা। এর জেরে তাঁকে ‘হিন্দুবিরোধী’ থেকে শুরু করে ‘ভুয়ো নারীবাদী’ তকমা পেতে হয়েছে।
এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চিরাচরিত বৈবাহিক রীতিকে ‘ভাঙচুর’ করতে চেয়েছে বিজ্ঞাপনী সংস্থা, যার মুখ হিসাবে রয়েছেন আলিয়া। এই বিজ্ঞাপন সমাজের একটা শ্রেণির মানুষের কাছে প্রশংসা কুড়ালেও, একটা বড় অংশের তোপের মুখে পড়েছেন আলিয়া। আর এই নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে নায়িকাকে। তাঁর বংশ পরিচয় নিয়ে কটূক্তি থেকে শুরু করে, অভিনেত্রীর বাবার অতীতের বিস্ফোরক মন্তব্য তুলে ধরছেন নেটিজেনরা।
মহেশ ভাটের দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান আলিয়া ভাট। মহেশ ভাটের প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তান পূজা ভাট ও রাহুল ভাট। নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে এক নামী ফিল্ম ম্যাগাজিনের কভার পেজে ঠোঁটে ঠোঁট রেখে চুমু খেতে দেখা গিয়েছিল মহেশ ভাট এবং পূজা ভাটকে। সেই সাক্ষাত্কারে মহেশ ভাট যা বলেছিলেন তা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। ‘জখম’ পরিচালক জানিয়েছিলেন, ‘পূজা আমার মেয়ে না হলে আমি ওকেই বিয়ে করতাম’। সেই বিষয়টি এত যুগ পর ফের ট্রেন্ডিংয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই কটাক্ষ করে লিখছেন, ‘আলিয়ার বাবা নিজের মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছিল, আলিয়ার দিদি পূজা ভাটকে। আর ও এখন কন্যাদান প্রথা নিয়ে বড় বড় কথা বলছে’।
কন্যাদান যদি, সমাজিক কু-প্রথা হয় তাহলে নিকাহ-মেহর বা একের বেশি স্ত্রী রাখতে পারার মতো প্রথাগুলি কী? সেগুলি সমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে না? সেই প্রশ্নও তুলেছেন হিন্দু কট্টরপন্থীরা। উল্লেখ্য, এই ব্যাপারেও আলিয়ার বাবার অতীত অধ্যায় ঘেঁটে কটাক্ষ করা হয়েছে অভিনেত্রীকে। মহেশ ভাট কোনওদিনই ডিভোর্স দেননি, তাঁর প্রথম স্ত্রী কিরণকে (লরেন ব্রাইট)। সোনি রাজদানের সঙ্গে বিয়ে করার জন্য নিজের মা-এর ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন মহেশ ভাট। ইসলাম গ্রহণ করে আসরাফ ভাট নাম নিয়ে সোনি রাজাদানকে বিয়ে করেন ‘আশিকী’ পরিচালক।
কন্যাদান আদৌ যুক্তিযুক্ত কিনা সেই নিয়ে বেশকিছু ধরেই তর্ক জারি রয়েছে। সম্প্রতি বাংলা ছবি ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’তেও এই নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দিয়া মির্জা থেকে শুরু করে টলিপাড়ায়, দেবলীনা-গৌরব, ওম-মিমিরা বিয়ের রীতি থেকে বাদ দিয়েছেন ‘কন্যাদান’কে। তাঁরা সকলেই বার্তা দিয়েছেন, মেয়েরা দানের সামগ্রী নয়। কিন্তু আচমকা আলিয়ার বিজ্ঞাপন ঘিরে তৈরি হওয়া এই বিতর্ক বদলের জোয়ারে যেন কিছুটা হলেও ভাটার সূচনা করল।
For all the latest entertainment News Click Here