‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ প্রযোজনা করার বদলে শর্ত ছিল রাজ কাপুরের, রাজি হননি সত্যজিৎ
কথায় বলে ‘রতনে রতন চেনে’। ছবির দুনিয়ায় সত্যজিৎ রায়কে নিজের ‘গুরু’ বলে মানতেন বলিউডের ‘দ্য গ্রেটেস্ট শোম্যান’ রাজ কাপুর। সত্যজিতের ‘পথের পাঁচালী’ দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন ‘মেরা নাম জোকার’ এর পরিচালক যে নিজের কাঁধে গোটা মহারাষ্ট্রে এই ছবির পরিবেশনার দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, নিজের প্রতিটি ছবির প্রিমিয়ারে রাজ আমন্ত্রণ জানাতেন সত্যজিতকে। তবে জানেন কি একবার ‘রে’ পরিচালিত একটি কালজয়ী ছবির প্রযোজক হতে চেয়েছিলেন রাজ কাপুর? তবে এত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্বেও বলিউডের ‘শোম্যান’ এর সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ‘নায়ক’ এর স্রষ্টা।
ছবির নাম? গুপী গাইন বাঘা বাইন। আজ্ঞে হ্যাঁ। মেয়ের বিয়েতে ‘গুরু’-কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ‘রাম টেরি গঙ্গা মইলি’-এর পরিচালক। সাড়াও দিয়েছিলেন অস্কারজয়ী নির্দেশক। সত্যজিতের মুখে এই ছবি তৈরির পরিকল্পনা শুনেই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন রাজ। এককথায় জানিয়েছিলেন তিনি গুপী গাইন বাঘা বাইন’ প্রজেক্টে টাকা ঢালতে চান। আর বাজেট? স্বয়ং পরিচালক যেটা বলবেন। তবে তার বদলে রেখেছিলেন একটি শর্ত। সত্যজিতকে রাজ জানিয়েছিলেন এর বদলে তাঁর বড় ছেলে রণধীর কাপুরের ডেবিউ ছবির নির্দেশনা দিতে হবে সত্যজিতকে! অর্থাৎ সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরেই রণধীরের ডেবিউ, এই ছিল রাজ কাপুরের স্বপ্ন। এমনকি সেই ছবির বিষয় নিয়ে দু’জনের মধ্যে চলেছিল জোর আলোচনাও। তবে শেষপর্যন্ত রাজি হননি ‘ফেলুদা’-র লেখক। রাজের সেই ছবির বিষয় বিলকুল মনে ধরেনি তাঁর। তাই বাধ্য হয়েই সরে আস্তে হয়েছিল তাঁকে।
পরবর্তী সময়ে সত্যজিতের এই ‘স্বপ্নের ছবি’-র কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন কলকাতা নিবাসী অসীম দত্ত নামের এক ভদ্রলোক। তিনিই প্রস্তাব দেন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির প্রযোজক হওয়ার।বাকিটা ইতিহাস। বলা হয়, ১৯৬৯ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবি শুধু সত্যজিৎ রায়ের তৈরি একটি ‘মাস্টারপিস’-নয় বরং ভারতীয় সিনেমায় তা একটি নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছিল। উল্লেখ্য, পুত্র সন্দীপ রায়ের অনুরোধেই ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিটি তৈরির পরিকল্পনা রচনা করেছিলেন সত্যজিৎ।
For all the latest entertainment News Click Here