Bunty Aur Babli 2 Review: তওবা তওবা! খুব কি দরকার ছিল এই সিক্যুয়েলের?
‘বান্টি অউর বাবলি’ বলিউডের হিট ফ্রাঞ্চাইসি। ষোলো বছর আগে তৈরি এই ‘ব্র্যান্ড নেম’কে ফের একবার বক্স অফিসে ক্যাশ ইন করতে চেয়েছে প্রযোজক সংস্থা যশ রাজ ফিল্মস। হিরোর মুখ পালটালেও (অভিষেকের জায়গায় সইফ) হিরোইন সেই রানি। সঙ্গে নতুন প্রজন্মের দুই তারকা, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী এবং শর্বরী। সিক্যুয়েল ছবি তৈরি হলে, তা নিয়ে বাড়তি উন্মাদনা আর প্রত্যাশা দুটোই থাকে, এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। উপরোন্তু দীর্ঘদিন পর ‘হাম তুম’ জুটির কামব্যাক। সব মিলিয়ে ‘বান্টি অউর বাবলি ২’-কে ঘিরে প্রত্যাশার পারদ যে চড়চড়িয়ে বেড়েছিল তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু প্রত্যাশা কতটা পূরণ করলেন নতুন বান্টি-বাবলি? বা আদৌ করতে পারলেন?
আসলে কিছু কিছু জিনিসে নতুন করে না হাত দেওয়াই বড্ড বেশি ভালো। হারাল ২ ঘণ্টা ১৮ মিনিটের ‘বান্টি অউর বাবলি ২’ দেখতে বসলে প্রথম ১৫ মিনিটেই আপনার মনে এই ধারণা গেঁথে যাবে। পরিচালক বরুণ ভি শর্মা-র বোধহয় এই কথাটা মনে রাখা উচিত ছিল।
এই ছবিতে এক জোড়া বান্টি আর বাবলি। কুণাল আর সোনিয়া (সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী ও শর্বরী) একদম বান্টি আর বাবলির কায়দাতে লোক ঠকানো শুরু করে। চুরি শেষে রেখে যায় বিখ্যাত ‘বি-বি’ লোগো! অন্যদিকে চুরিবৃত্তি ছেড়ে সাধারণ ছাপোষা মধ্যবিত্ত জীবন কাটাচ্ছে অরিজিন্যাল বান্টি অউর বাবলি। কিন্তু বেকায়দায় পরে ফের একবার পুরোনো খেলায় নামতে বাধ্য হয় তাঁরা। এখানে পুলিশ অফিসার দশরথ সিংহের (অমিতাভ বচ্চন) পরিবর্তে জটায়ু সিংহ (পঙ্কজ ত্রিপাঠী)। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলবার ফাঁদ পাতেন জটায়ু সিং। এই ছন্দেই এগিয়েছে গল্প, তবে ছবির চিত্রনাট্য এক্কেবারে দুর্বল। যেই গল্পের গরু কখনও চড়চড়িয়ে গাছে উঠছে আবার কখনও ধপাস করে পড়েছে।
ছবির প্রথমার্ধ মারাত্ম ধীর গতিতে এগিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে যখন আপনার মনে হবে এবার গল্পটা জমবে… তখনই ফের খেই হারাবে চিত্রনাট্য। এমনকি চুরির যে ছকগুলো নতুন বান্টি আর বাবলিকে ফাঁদতে দেখা গিয়েছে তা দেখে এরপর কী? এই ভাবনার পরিবর্তে আপনি হলে বসে হাই তুলতে পারেন। কখনও তাঁরা যৌনতায় লিপ্ত হতে মরিয়া লোককে বিদেশের ভুয়ো ট্রিপ বেচছে, কখনও আবার গঙ্গা নদীর লিজ দিচ্ছে, যা দেখে আপনি সত্যি বললেন- ‘গল্পের গরু সত্যি গাছে ওঠে’।
ছবিতে সেফ-রানির কমিক টাইমিং বেশ কিছু জায়গায় দুর্দান্ত, তবুও একটা কমেডি ছবির জন্য যথেষ্ট নয়। পুরোনো বান্টি আর বাবলির চুরিবৃত্তির নেপথ্যের কাহিনিটা জোরালো, কিন্তু সিদ্ধান্ত-শর্বরীর ক্ষেত্রে সেইরকম কোনও কারণ আপনি খুঁজে পাবেন না। ছবির সিক্যুয়েল এনজয় করবার পরিবর্তে দুটো ছবির তুলনা টানতে আপনি বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। রাকেশের চরিত্রে সইফ ঠিকঠাক, এর চেয়ে ঢের ভালো পারফরম্যান্স কমেডি জঁর ছবিতে দিয়েছেন নবাব।
এই ঝিমানো আর প্রাণহীন ছবির একমাত্র প্রাণভ্রমরা রানি মুখোপাধ্যায়- চুলবুলি, মজাদার। ভিম্মি আপনাকে একটু হলেও নস্ট্যালজিয়ায় ডুব দিতে সাহায্য করবে। ‘গাল্লি বয়’-এর এমসি শের-কে এই ছবিতে তেমন খুঁজে পাওয়া গেল না, শর্বরী ওয়াঘের অভিনয় মন্দ নয়। পুরো নম্বর নিয়ে পাশ না করলেও পঙ্কজ ত্রিপাঠী আপনার চোখ টানবেন কিছু দৃশ্যে। তবে আপনি পঙ্কজের ভিতর থেকে নতুনত্ব কিছু পাবেন না। ছবির মিউজিকও একদমই মন কাড়ে না। ‘কজরা রে’, ‘ধড়ক ধড়ক’-এর মতো কালজয়ী গানের ধারকাছ দিয়েও হাঁটে না নতুন ছবির একটাও গান। এটা জানতে তো হলে যাওয়ারও দরকার নেই।
সবশেষে বলা যায়, একটা দুর্দান্ত পদ তৈরির সব উপাদন মজুত থাকলেও রান্নাটা ঠিকঠাক না হওয়ার খাবার ঘেঁটে ঘ। বড়মাপের অভিনেতারাও এই ছবিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ। তবে যদি আপনি রানি মুখোপাধ্যায়ের ভক্ত হন, তাহলেই একমাত্র হলে গিয়ে এই ছবি দেখুন।
For all the latest entertainment News Click Here