‘ফোন পড়ে গিয়েছিল’, বিরাট কন্যাকে ধর্ষণের হুমকি নিয়ে ধৃতের আজব যুক্তি, সরব বরুণ
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারের পর বিরাট কোহলির ৯ মাসের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছিল এক টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে। সেই নিয়ে হইচই পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুরুতে ভাবা হয়েছিল ওই সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টটি কোনও পাকিস্তানির, কিন্তু পুলিশি তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বুধবার ভামিকাকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া যুবককে হায়দরাবাদ থেকে গ্রেফতার করল মুম্বই পুলিশ।
২৩ বছর বয়সী রামনাগেশ আলিবাতিনিকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সে, পড়াশোনা করেছে আইআইটি হায়দরাবাদ থেকে। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিল সে, কিন্তু মার্কিন মুলুকে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিতে চাকরি ছাড়ে। গ্রেফতারির পর হতচকিত রাম নাগেশের পরিচিতরা। ক্রিকেটপাগল ছেলেটা এমন কাণ্ড ঘটাতে পারে তা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করেনি কেউ। ছেলের গ্রেফতারির পর ভেঙে পড়েছেন তাঁর রামনাগেশের বাবা শ্রীনিবাস। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমি সেইসময়ই বলেছিলাম ম্যাচ হারলে ক্রিকেটারকে নিয়ে মন্তব্য করতে পারো কখনই তাঁর মেয়েকে হুমকি দিতে পারো না’। তবে গোটা বিষয় নিয়ে যে যুক্তি খাড়া করতে চাইছে অভিযুক্ত ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা সেই অজুহাত নিয়ে সরব হলেন কমেডিয়ান-লেখক বরুণ গ্রোভার।
রামনাগেশের বাবার বন্ধু জানিয়েছেন, ‘আসলে ম্যাচ শেষে ও ভীষণ রেগে ছিল এবং অনলাইনে চ্যাট করছিল, সেইসময় ভুলবশত ওই টুইট করে ফেলে রামনাগেশ। এরপর সঙ্গে সঙ্গে ওই টুইট মুছে ফেলতে চেয়েছিল কিন্তু হাত ফসকে ফোনটা পড়ে যায়। এরপর ড্যামেজ কন্ট্রোল করবার আগেই ভাইরাল হয়ে যায় ওই টুইট। তারপর থেকেই ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছে ও’।
এই প্রসঙ্গে বরুণ গ্রোভার লেখেন, ‘হ্যাঁ, ফোনটা হাত ফসকে পড়ে গিয়েছিল তাই টুইটটা হয়ে গিয়েছে। তারপর আবার ফোনটা ফসকে গিয়েছিল এবং ওর প্রোফাইলটা একটা ভুয়ো পাকিস্তানি অ্যাকাউন্টে পরিবর্তিত হয়ে যায়। তারপর ফের ফোনটা ফসকে যায় এবং পুরোনো টুইট সব ডিলিট হয়ে যায়’। বিদ্রুপ করে বরুণ স্পষ্টই বুঝিয়ে দেন আইআইটি-র ওই স্নাতকের অজুহাত এক্কেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ‘হাত ফসকে ফোন পড়লে’ এত কাণ্ড হওয়া কী সম্ভব?
গত ২৪ অক্টোবর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের শোচনীয় পরাজয়ের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন কোহলিরা। আক্রমণ থেকে বাদ যাননি ভারতীয় ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যরাও। বিরাট এবং অনুষ্কা শর্মার নয় মাসের মেয়েকেও ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘Amena @criccrazygirl’ (বর্তমানে ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে) নামে একটি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে বিরাটের মেয়েকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে দাবি করা হয়েছিল, অ্যাকাউন্টটি আদতে পাকিস্তানি বট অ্যাকাউন্ট। যদিও পরে তথ্য-যাচাইকারী পোর্টাল অল্ট নিউজের তরফে দাবি করা হয়, টুইটটি কোনও পাকিস্তানি করেনি, বরং করেছে এক ভারতীয়।
এরপর গত ৮ নভেম্বর বিরাটের ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে মুম্বই পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪এ (যৌন হেনস্থা) এবং ৫০৬ (অপরাধমূলক প্রবণতা) ধারায় মামলা রুজু করা হয়। সেইসঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৭ (বৈদ্যুতিন মাধ্যমে কোনও অশ্লীল জিনিস প্রকাশ করা বা প্রেরণ করা) এবং ৬৭ বি ধারায় (শিশুদের যৌন আচরণে লিপ্ত দেখিয়ে কোনও জিনিস প্রকাশ করা) মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
For all the latest entertainment News Click Here