না-কাচা পোশাক পরে টানা ২০ দিন শ্যুটিং! তারক মেহতার সেটে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জেনিফারের
গত কয়েক মাস ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে হিন্দি টেলিভিশনের জনপ্রিয় শো ‘তারক মেহতা কা উলটা চমশা’। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দর্শকদের বিনোদনের রসদ জুগিয়ে আসছে এই সিটকম। কিন্তু বিতর্ক যেন বেড়েই চলেছে ‘তারক মেহতা’ পরিবারকে ঘিরে। গত মে-মাসে এই শো ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী জেনিফার মিস্ত্রি বনসিওয়াল (Jennifer Mistry Bansiwal)। শুধু শো ছাড়েননি তিনি, জানিয়েছিলেন বাধ্য হয়েছেন শো ছাড়তে। প্রযোজকদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পর্যন্ত আনেন পর্দার ‘মিসেস রোশন সোধি’। ফের নতুন করে প্রযোজকদের বিরুদ্ধে সরব হলেন জেনিফার।
তাঁর কথায় ‘তারক মেহতা’র সেটের পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর এবং শ্যুটিংয়ের অযোগ্য। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘প্রোডাকশন টিম কোনওদিন কাপড় জামা কাচত না, আমাদের একটানা ২০ দিন ধরে ওই নোংরা পোশাক পরতে হত। সারাদিন শ্যুটিং চলত, আমরা ওই পোশাক পরে থাকতাম, স্বাভাবিকভাবেই দুর্গন্ধ আসত পোশাক থেকে। এমনও দিন গিয়েছে আমরা নিজেরা সেই জামাকাপড় কেচে ড্রায়ারে শুকিয়ে নিয়েছি। কিছু নির্দিষ্ট অভিনেতা-অভিনেত্রীরা রয়েছেন, যাঁদের পোশাক কাচা হত, আমাদের তো এইভাবেই কাজ চালাতে হয়েছে বছরের পর বছর।’
নির্মাতাদের বিরুদ্ধে পুলিশে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করে তাঁকেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ জেনিফারের। তাঁর কথায়, পুলিশ সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না, পালটা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য উৎসাহ জোগাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘আমি মর্মাহত। সুবিচারের জন্য লড়াই করতে গিয়ে আমাকে এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামলাতে হচ্ছে।’
মহিলা শিল্পীদের জন্য ‘তারক মেহতা কা উলটা চশমা’র সেট একেবারেই উপযুক্ত নয়, বলে মত জেনিফারের। তিনি বলেন, ‘বিনা কস্টিউম আর বিনা খাবারে, ঘন্টার পর ঘন্টা আমাদের অপেক্ষা করতে হত, অনেক সময় জলও মিলত না। হাতে গোনা জলের বোতল থাকত সেটে, কেউ বেশি চাইলে তাঁকে কথা শোনাতো প্রোডাকশনের লোকজন। এক প্যাকেট বিস্কুটও জুটত না, ডিনার তো ভুলেই যান’।
শ্যুটিংয়ে অভিনেত্রীদের গয়না-জুতো পর্যন্ত দিত না প্রযোজকরা, সবটাই নিজেদের জোগাড় করতে হত। জেনিফার জানান, ‘আমি তো যতদিন ওই শো করেছি নিজের গয়না, জুতো বলেছি। জুতোর টাকা ২-৩ বছর আগে থেকে দেওয়া শুরু করেছিল। তার আগে যে সব জুতো শ্য়ুটিংয়ে পরতে দিত সেগুলো ছেঁড়া, পরার অযোগ্য। শিশু শিল্পীদের কোনও পোশাকও দেওয়া হত না। সবাই নিজেদের জামা-কাপড় পরত’।
গত মে মাসে ‘কর্মক্ষেত্র যৌন হেনস্থার’ অভিযোগ এনেছিলেন জেনিফার। এরপর প্রযোজকরা অভিযোগ তোলেন অভিনেত্রী অপেশাদার এবং টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়া চেষ্টা করছেন। জেনিফারের অভিযোগ করেছিলেন, অতীতে বহুবার জেনিফারকে যৌন ইঙ্গিত করেছেন প্রযোজক অসিত মোদী, তবে কাজ হারানোর ভয়ে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। যদিও শো-এর এক নির্মাতা বসোহেল রমানি অভিযোগ উড়িয়ে পালটা জানান, ‘আমরা জেনিফারের চুক্তি বাতিল করেছি। তিন মাস ধরে কাজ খুঁজে না পেয়ে মনগড়া কাহিনি ফাঁদছে। ওর অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন, আসলে ও হঠাৎ করেই মরিয়া হয়ে উঠেছে’।
For all the latest entertainment News Click Here