‘৩ হাজার বছর ক্ষমতায় থাকুন মমতা’, অর্পণাদের চিঠির পালটা জবাব তৃণমূলপন্থী সুমনদের
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত বাংলা। চারিদিকে হিংসা, খুন-জখমের ছবি দেখে শিউরে উঠেছেন বিশিষ্টরা। মমতা-সরকার এই হিংসার দায় এড়াতে পারে না, দাবি বিদ্বজনেদের একাংশের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাঠগড়ায় তুলে খোলা চিঠি পর্যন্ত লিখেছেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্যের মতো বামমনস্ক ব্যক্তিত্বরা। ভোট ঘোষণা থেকে ভোট গগণা, রাজ্য জুড়ে হিংসার বলি হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন। হিংসার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে তুলোধনা করেছেন রাজ্যপাল, আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা।
গোটা বিষয় নিয়ে চুপ থাকার কারণে যখন তোপের মুখে পড়েন বিদ্বজনেরা, তখনই নড়েচড়ে বসেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেনরা। খোলা চিঠিতে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রীকে। এবার সেই চিঠির পালটা জবাব দিতে আসরে নামল তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীরা। বুধবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে নাম না করে সেই খোলা চিঠির বিরোধিতায় সরব হলেন কবীর সুমন, হরনাথ চক্রবর্তীরা। তাঁদের কথায় উঠে এল মমতা সরকারের ভাল কাজের খতিয়ান।
অভিনেত্রী অপর্ণা সেনদের ‘এই পরিবর্তন চাইনি’ মন্তব্যকে বিঁধে দিদির সমর্থক কবীর সুমনের পালটা প্রশ্ন, ‘সাদা থানের কথা ভুলে যায় কী করে? বলতেই পারেন এই পরিবর্তন চাইনি, কিন্তু কী চেয়েছিলেন? আমি চাই ৩ হাজার বছর মমতা ক্ষমতায় থাকুন।’ ৩৪ বছরের বাম শাসনে নির্বাচন মোটেই হিংসামুক্ত ছিল না, সেই কথাই স্মরণ করান তৃণমূলের বিদ্বজনেরা। শাসকের সুরে সুর মিলিয়ে তাঁদের বক্তব্য় নির্বাচনী হিংসায় সবচেয়ে বেশি প্রাণ গিয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। এর আগে তৃণমূলের তরফেও জোর দিয়ে বলা হয়েছে হিংসার পিছনে রয়েছে বিরোধীদের চক্রান্ত, সেই তত্ত্বেই এদিন জোর দিলেন কবীর সুমন। তাঁর দাবি, ‘ভোটে তো গোলমাল হবেই, ভোট হয়ে যায় না, করাতে হয়। নল দিয়ে ভোট হয়, যেদিন থেকে বোধবুদ্ধি, সেদিন থেকেই দেখছি।’
রাজ্যের উন্নয়নে তৃণমূল সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন কবীর সুমন। তিনি বলেন-‘কলকাতা শহরের যে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে, তা নজরে পড়ে? আগে তো অনেক রাস্তায় হাঁটতে হত, নাকে রুমাল চাপা দিয়ে। এখন তো সে অবস্থা নেই। ইতিবাচক দিক গুলোও তো দেখা উচিত। রাজ্য তো কাজও হচ্ছে, শুধু কি আর মারামারি কাটাকাটি হচ্ছে?’ সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন আবুল বাশার, যোগেন চৌধুরীরা।
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার প্রতিবাদে মহাবোধি সোসাইটি হলে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে পরিচালক অপর্ণা জানিয়েছিলেন, ‘এ রাজ্যে পরিবর্তন দরকার ছিল। কিন্তু তাঁর বদলে এমন ঘটবে তা চাওয়া হয়নি।’
খোলা চিঠিতে অপর্ণা সেনরা স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, ‘আপনি অবগত আছেন যে ৮ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত গত ৩৭ দিনে পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ৫২ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এবং বহু মানুষ নিখোঁজ। আপনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব অস্বীকার না করেও, এই কথা অবশ্যই বলা যায় যে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রিক হত্যালীলা, এবং অরাজকতার দায়িত্ব মূলত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এবং আপনার।’ বাংলার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ’ বলেও বিঁধতেও ছাড়েননি অপর্ণা সেন। এবার সেই কটাক্ষের কড়া জবাব দিলেন কবীর সুমন।
For all the latest entertainment News Click Here