হেতমায়ারের তিন ছক্কায় কাটল ৪৯-এর ফাঁড়া, ৫৯ করে সর্বকালের তৃতীয় সর্বনিম্ন RR-এর
ঘরের মাঠে মুখ পোড়াল রাজস্থান রয়্যালস। রবিবার সোয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে ২০২৩ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ৬০তম ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিপক্ষে রাজস্থান রয়্যালস মাত্র ৫৯ রানে গুটিয়ে যায়। যা এই মরশুমে কোনও দলের করা সর্বনিম্ন স্কোর। সেই সঙ্গে আরও এক লজ্জার তালিকায় নাম লেখাল তারা।
আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর করে ফেলল রাজস্থান। কোনও মতে সর্বনিম্ন স্কোরের হাত থেকে বাঁচলেন সঞ্জু স্যামসনরা। ভাগ্যিস শিমরন হেতমায়ের চারটি ছক্কা এবং একটি চারের সাহায্যে ১৯ বলে ৩৫ করেছিলেন। তা না হলে তো আরও আগেই গুটিয়ে যেত রাজস্থান।
সর্বনিম্ন স্কোরের তালিকায় একে রয়েছে আরসিবি-র করা ৪৯ রান। ২০১৭ সালে ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৪৯ করেছিল আরসিবি। যা আইপিএলের ইতিহাসে বিরাট কোহলিদের লজ্জার নজির। এ দিন অষ্টম ওভারের তৃতীয় চতুর্থ এবং পঞ্চম বলে পরপর তিনটি ছক্কা হাঁকিয়ে রাজস্থানের স্কোর ৫০-এ নিয়ে যান হেতমায়ের। আরসিবি-র করা লজ্জার নজির সেই ওভারেই টপকে যায় রাজস্থান। তবে তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোরটি করে ফেলে তারা।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: RCB-র হয়ে ২৫০ ম্যাচ খেলে অনন্য রেকর্ড কোহলির, নজিরের দিনেই অবশ্য ব্যর্থ কিং
২০০৯ সালে কেপটাউনে আরসিবি-র বিরুদ্ধে ৫৮ রান করেছিল রাজস্থান। সেটা আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। আর এ দিন জয়পুরে করল তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। ২০১৭ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে দিল্লি ক্যাপিটালস ৬৬ রান করেছিল। যা চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর।
এ দিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আরসিবি। আইপিএলের শেষ প্রান্তে চলে এসেও তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতার ছবিটা পাল্টায়নি। গোটা প্রতিযোগিতা ধরে বিরাট কোহলি, ফ্যাফ ডু’প্লেসি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল দলের বেশির ভাগ রান তুলেছেন। রবিবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে ম্যাচেও অবশ্য কোহলি ফ্লপ হলেন। রান করলেন ম্যাক্সি এবং ফ্যাফ। বিরাট ১৯ বলে ১৮ করে সাজঘরে ফিরলে, দলের হাল ধরেন ফ্যাফ এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
দ্বিতীয় উইকেটে তাঁরা ৬৯ রান যোগ করেন। ৪৪ বলে ৫৫ করে আউট হন ফ্যাফ। আর ৩৩ বলে ৫৪ করেন ম্যাক্সি। বাকি শেষ পাতে মিষ্টি দইয়ের মতো ছিল অনুজ রাওয়াতের ইনিংস। তিনি ১১ বলে ২৯ রান করে আরসিবি-র স্কোর নিয়ে যান ৫ উইকেটে ১৭১ রানে। যা নিঃসন্দেহে প্রতিযোগীতামূলক একটি স্কোর। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরের পৌঁছাননি। মহিপাল লোমরোর (২ বলে ১), দীনেশ কার্তিক (২ বলে ০), ব্রেসওয়েলরা (৯ বলে ৯) চূড়ান্ত হতাশ করেন। রাজস্থানের কেএম আসিফ এবং অ্যাডাম জাম্পা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ১টি উইকেট নিয়েছেন সন্দীপ শর্মা। দু’জনই রান করলেন। বাকিরা সবাই ব্যর্থ।
আরও পড়ুন: ১৪ বছর আগে ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধেই লজ্জার নজির গড়েছিল রাজস্থান, ফিরে এল সেই কালো দিনের স্মৃতি
জবাবে ব্যাট করতে নেমে থরথর করে কাঁপছিল রাজস্থানের ব্যাটিং অর্ডার। একের পর এক উইকেট তারা হারাতে থাকে। পাওয়াপ প্লে-তেও মাত্র ২৮ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল। ০-০-৪-১০-৪- এটা আসলে আরআর-এর প্রথম পাঁচ ব্যাটারের রান। ব্যতিক্রম বলতে শিমরন হেতমায়েরের ১৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটি। আর জো রুট ১০ করেছেন। দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছানো তো দূরের কথা, এর বাইরে ৫ রানও কেউ করতে পারেননি। মাত্র ১০.৩ ওভারে খড়কুটোর মতো ভেসে যায় রাজস্থান। ৫৯ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা।
আরসিবি-র বোলারদের দাপটেই ১১২ রানে হেরে প্লে-অফের লড়াই মারাত্মক জটিল করে ফেলল রাজস্থান। ওয়েন পার্নেল তিন উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন ব্রেসওয়েল এবং কর্ণ শর্মা।
রাজস্থানের এখনও সামান্য আশা বেঁচে থাকলেও, সেই পথ বড় দুরুহ। ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে উঠে এল আরসিবি। রাজস্থান একই ম্যাচে একই পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেল ছয়ে। আগের ম্যাচে ইডেনে কলকাতাকে হারিয়ে যে রানরেট সংগ্রহ করেছিল রাজস্থান, এ দিন বিশাল ব্যবধানে হেরে তার সবটাই জলে দিল।
For all the latest Sports News Click Here