‘মোবাইল আর সঙ্গে রাখি না, প্রয়োজনে মেসেজ করবেন’, কেন এমন পদক্ষেপ করলেন পরীমনি?
সোমবার সকাল সকাল নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে ফোন নিয়ে লম্বা পোস্ট করেন পরীমনি। জানিয়ে দেন, তিনি আজকাল শোওয়ার ঘরে কিংবা নিজের সঙ্গে ফোন একেবারেই রাখছেন না, আর কারণটা হল তাঁর ছেলে রাজ্য। বাংলাদেশের ‘পরী’ ছেলে রাজ্য যাতে ফোনের প্রতি বেশি কৌতুহলী না হয়ে পড়ে, সেকারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ঠিক কী লিখেছেন পরীমনি?
পরীমনি লেখেন, ‘আমি আমার সাথে বা বেড রুমে আমার মোবাইল ফোন রাখিনা এখন। কারন, রাজ্য মোবাইল ফোন নোটিস করে নানা কারনেই। এটাতে ওর আগ্রহ বাড়ে এমন সব খুব সচেতন ভাবেই এড়িয়ে যেতে হচ্ছে। কারো সাথে কথা বলার সময় ছাড়া আমি মোবাইল ফোন রাজ্যের সামনে আনি না বললেই চলে। তাই হয়তো সব সময় সব ফোন কল এটেন্ড করতে পারি না যখন তখন। আপনাদের দরকারে আমাকে একটা মেসেজ করে রাখবেন। আমি চেষ্টা করবো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কল ব্যাক করার। আশা করবো বিষয়টি অবশ্যই আপনারা কেয়ার করবেন। থ্যাংক ইউ।’
আরও পড়ুন-‘ছবি তুললে ফোন ভেঙে দেব’, মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে অনুরাগীকে হুমকি নয়নতারার…
অভিনেত্রী পরীমনির এমন পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। কেউ লিখেছেন, ‘খুব ভালো অভ্যাস।’ কেউ বলেছেন, ‘যথাযথ উদ্যোগ’, কেউ আবার পরীমনিকে ‘সচেতন মা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কেউ বলেছেন, ‘শুরুতেই এভাবে দূরে রাখলে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যায়। আমি পেয়েছি। আমার ছেলের মোবাইলের প্রতি কোনো আগ্রহ নাই।।। কিপ ইট আপ…..সবার আগে নিজের সন্তান।’ বিষয়টা শিক্ষনীয় বলেও লিখেছেন অনেকেই। পরীমনির প্রশংসা করেছেন তাঁর পরীমনির পাতানো মা বাংলাদেশের পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী। কমেন্টে তিনি লেখেন, ‘বাচ্চাদের মোবাইল ধরা না ধরা পুরোটাই মা বাবা এবং পরিবারের উপর নির্ভর করে।১০০%.ওকে যা শেখানো হবে জন্মের পর থেকে ও তাই ই করবে।খুব খুব মুগ্ধ হয়েছি আমি।দেখে নিজের চোখে। পরিমণি মা।’
আরও পড়ুন-প্রেমে পড়েছেন নাকি! কে সেই ব্যক্তি? কঙ্গনার পোস্ট ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে…
আরও পড়ুন-ভারতীয় সিনেমার স্বর্ণযুগের গল্প বলে ‘জুবিলি’, ছাপোষা বিনোদ হন তারকা ‘মদন কুমার’
শুধু কমেন্ট বক্সেই নয়, চয়নিকা চৌধুরী পরীমনির ছেলে শাহিম মহম্মদ রাজ্যের ৮ থেকে ৯ মাসে পা রাখা নিয়ে লম্বা একটি পোস্ট করেছেন। তাঁর ফেসবুকের দেওয়ালে লাগানো সেই পোস্ট ঘিরেও রয়েছে মা পরীমনির প্রশংসা। চয়নিকা লিখেছেন, ‘আজ রাজ্য ৮ মাস পূর্ণ হয়ে ৯ মাসে পরলো। কিন্ত আজ আমার লেখাটা একদম পরীকে নিয়ে। আমি পরী মণি কে দেখে মুগ্ধ বেশ কয়েকটি কারণে।সিনেমা বানানো, ডাবিং, পোষ্ট প্রডাকশনের কাজ সবকিছু মিলিয়ে গত একমাস ধরে যাওয়াই হয়নি ওর বাসায়। কিন্ত যোগাযোগ ছিল।লাষ্ট দুইদিন প্যানেল না থাকায় ওর বাসায় ইফতার করা,সেহরি করা আড্ডা দেয়া হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। দেখলাম অন্য এক পরীমণিকে। কিন্ত আমি একটুও অবাক হইনি রাজ্যের সব কাজ, সবজি মাছ চাল ডাল চিকেন দিয়ে খিচুড়ি রান্না,কাপড় গুছানো,কাপড় ধোয়া,ইস্ত্রি করা, সব কাজ সে নিজ হাতে এখনো করে।খেয়াল করে দেখলাম,সে রাজ্যকে খিচুড়ি খাওয়ানোর সময়ে ইংলিশ কার্টুন বা গান ছেড়ে খাওয়ায় তা শিশু উপযোগী গান।তার রুমের ধারে কাছেও মোবাইল ফোন থাকেনা। কখনই না।বরং সুকুমার রায় এবং রবীন্দ্রনাথের কবিতা, ছড়া বা ছোটদের গান ছেড়ে রাখে। তার এক্টাই কথা মোবাইলে আসক্ত করাবে না ছেলেকে, কান তৈরী হবে, রুচি শিখবে, সবাই ঘরে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলে এখন থেকেই এবং এখন থেকেই বুঝাতে হবে কোনটা রাজ্য ধরবে, কোনটা ধরবেনা।ওর সব কিছু দেখে আমার নিজের ছেলে মেয়ের কথা মনে পড়ে গেলো। আমরাও এইভাবেই বাচ্চাদের মানুষ করেছি।একদিন পরী আমাকে প্রশ্ন করেছিল, আচ্ছা মা বলোতো অনন্য আর সৃষ্টি এত ভালো বাচ্চা কেমন করে হলো?” তখন বুঝিনি বুদ্ধিমতি পরী গল্পের ছলে কত কী জেনে নিচ্ছে তার রাজ্যের জন্যে।তাকে একটা কথাই বলেছিলাম জন্মের পর থেকে তার আসল শিক্ষা শুরু হয়ে যায়।কারণ হচ্ছে অভ্যাস।’
চয়নিকা তাঁর পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘আহা! সত্যি পরী এক অনন্য মা।রাজ্য অনেক অনেক ভাগ্যবান যে পরীর মত দায়িত্ববান একজন মা পেয়েছে যে ক্যারিয়ারের সব স্যাক্রিফাইস করে পুরাই মন দিয়েছে মা হয়ে।রাজ্য যে কী শান্ত!! ভদ্র মার্জিত এক বাচ্চা।অপ্রয়োজনীয় কিছু হাতে নিলেই পরী বলে, না বাবা নিতে হয় না।এবং রাজ্য দিলে বলে, থ্যাংক ইউ বাবা। জ্বী এইভাবেই শেখে। বাচ্চারা স্বাদ, গন্ধ, ব্যাবহার কিছুই জানেনা।যা দেখে তাই-ই শিখে ফেলে। রাজ্যের জন্যে এত্ত আদর প্রার্থনা ভালোবাসা।পরী, আমার দেখা তুমি শ্রেষ্ঠ মাদের একজন।স্যালুট তোমাকে। অনেক ভালো থেকো রাজ আর রাজ্যকে নিয়ে। আর আমাকে এমন করেই ভালোবেসো অনন্তকাল ধরে।’
পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীর পোস্টের নিচেও অনেকে পরীর ছেলে রাজ্য ও ‘মা’ পরীমনির জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, অনেকেই অভিনেত্রীর পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। অনেকেই লিখেছেন ‘মা হওয়ার পর সত্যিই বদলে গিয়েছেন পরীমনি।’
প্রসঙ্গত বাংলাদেশের পরিচালক, নাট্য নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর সঙ্গে পরীমনির সখ্যতা অবশ্য বহু আগে থেকেই। পরীমনি মা হওয়ার আগে অন্তঃসত্ত্বা পরীমনিকে সাধ খাওয়াতেও দেখা গিয়েছিল চয়নিকা চৌধুরীকে। অভিনেত্রীর বাড়ির সব অনুষ্ঠানেই দেখা যায় তাঁকে।
For all the latest entertainment News Click Here