মাথায় আঘাতের চিহ্ন! বেডরুম থেকে উদ্ধার বাণী জয়রামের দেহ,রহস্যমৃত্যুর মামলা দায়ের
গত মাসেই ‘পদ্মভূষণ’ সম্মান পেয়েছিলেন বর্ষীয়ান সঙ্গীত শিল্পী বাণী জয়রাম। শনিবার চেন্নাইয়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় ৭৮ বছর বয়সী শিল্পীর মরদেহ। ঘটনায় চাঞ্চল্য দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে। ঘটনায় রহস্যমৃত্যর মামলা রুজু করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ। ২০১৮ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে চেন্নাইয়ের হ্যাডোস রোডের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন গায়িকা। ঘরের কাজ সামলানোর জন্য এক পরিচারিকা প্রতিদিন সকালে আসত। এদিন সকাল ১১টায় সেই পরিচারিকা এসে ডাকাডাকি করে সাড়া পায়নি। এরপর বাণী জয়রামের দুই বোন উমাকে ফোন করে সেই পরিচারিকা। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা খোলেন উমা দেবী। এরপর বেডরুমের মেঝে থেকে উদ্ধার হয় ‘আধুনিক ভারতের মীরা’ বাণী জয়রামের দেহ।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছানোর পর চেন্নাইয়ের কিলপাউক হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় গায়িকার দেহ। পরে বাণী জয়রামের ফ্ল্যাটে পৌঁছায় ফরেনসিক দল। ট্রিপলিকেনের ডিসিপি শেখর দেশমুখ জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে তবেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। তবে প্রয়াত গায়িকার মাথায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ঝুলিতে আসে বাণী জয়রামের। সম্মান পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন বাণী জয়রাম। কিন্তু কে জানতো সশরীরে এই সম্মান গ্রহণ করতে পারবেন না তিনি! নিজের জীবদ্দশায় দশ হাজারেরও বেশি গান রেকর্ড করেছেন শিল্পী।
বাণী জয়রামের জন্ম তামিল নাড়ুর ভেলোরে এক তামিল পরিবারে। ১৯৪৫ সালের ৩০ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন শিল্পী, জন্মসূত্রে তাঁর নাম ছিল কলাইবাণী। সঙ্গীত তাঁর রক্তে, ছোট থেকেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিয়েছেন। মায়ের অনুপ্রেরণা নিয়েই গুরু রঙ্গ রামানুজ আয়েঙ্গারের কাছে গানের সাধনা শুরু করেন ‘আধুনিক ভারতের মীরা’। পরবর্তীতে কাদালুর শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার, টি আর বালাসুব্রহ্মণিয়ান এবং আর এস মণির মতো গুরুদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্ণাটকী সঙ্গীতের প্রশিক্ষণ নেন।
১৯৬০ এর দশকের শেষে বিয়ের পর স্বামী জয়রামের হাত ধরে মুম্বইতে হাজির হন বাণী। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘গুড্ডি’ ছবিতে বলিউড প্লে-ব্যাকে ডেবিউ হয়েছিল তাঁর। জয়া ভাদুড়ির (এখন বচ্চন) লিপে বাণী কন্ঠের ‘বোল রে পাপিহরা’ গান আজও জনপ্রিয়। হেমা মালিনী অভিনীত গুলজারের ‘মীরা’ ছবির সব গানে কন্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। সুর ছিল রবি শঙ্করের। লতা জমানায় বলিউডে প্লে-ব্যাকের দুনিয়ায় অনেকটাই কোণঠাসা ছিলেন। তবে দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে গান করেছেন তিনি। গেয়েছেন বাংলা গানও। বাণী জয়রাম আধুনিক বাংলা গান রেকর্ড করেছিলেন, গেয়েছিলেন ‘আমার রাধা হওয়া আর হল না…’। শেষ বয়সে প্রচারের অন্তরারেই দিন কেটেছে প্রায় ১৯টি ভাষায় গান গাওয়া বাণী জয়রামের।
For all the latest entertainment News Click Here