বিশ্বজয় করে ঘরে ফিরে আবেগে ভাসলেন তিতাস-হৃষিতা, ফিরতে পারলেন না রিচা
বিশ্বজয় করে এ বার ঘরে ফিরলেন বাংলার কন্যারা। বাংলার তিন মেয়ে তিতাস সাধু, হৃষিতা বসু এবং রিচা ঘোষ ছিলেন বিশ্বকাপের দলে। তবে বৃহস্পতিবার ফিরলেন শুধু তিতাস আর হৃষিতা। ফেরেননি রিচা। তিনি ভারতীয় সিনিয়র দলে যোগ দেবেন বলে আর কলকাতায় ফিরতে পারেননি।
এই বছর প্রথম বার মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বসেছিল বিশ্বকাপের আসর। আর প্রথম বারেই বাজিমাত করেছেন শেফালি বর্মারা। বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। গোটা দেশকে গর্বিত করেছেন রিচা ঘোষ-তিতাস সাধুরা।
বুধবারই আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ভারত-নিউজিল্যান্ড চলতি তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচের আগেই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় শেফালিদের। সেই সংবর্ধনা নিয়েই এ বার ঘরে ফিরলেন তিতাস আর হৃষিতা। প্রসঙ্গত, তিতাস ফাইনালে ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং মেরুদণ্ড একাই ভেঙে দেয় চুঁচুড়ার তিতাস। ফাইনালে ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিতও হন তিনি।
আরও পড়ুন: উমরানের ঘণ্টায় ১৫০ কিমি গতিতে বল, স্টাম্প ছিটকে উড়ে গেল ৩০ গজের বাইরে
এ দিন বিমানবন্দরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তিতাস আর হৃষিতাকে বিশেষ ভাবে স্বাগত জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস, সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা বিমানবন্দরে পা রাখতেই পুষ্পস্তবক দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলার দুই ক্রিকেটারকে। সঙ্গে তাঁদের শুভেচ্ছা জানাতে বিমানবন্দরে ছিলেন অগণিত ভক্ত।
ফাইনালের সেরা তিতাস সাধু কলকাতায় নামার পর বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতাটা আমাদের মেয়েদের জন্য খুব দরকার ছিল। সবাই খুব খুশি। পরবর্তী লক্ষ্য আইপিএল আর জাতীয় দল। তবে ফাইনালে নিজের পারফরমেন্স নিয়ে কিছু ভাবিনি। টিম হিসেবেই মাঠে নেমেছিলাম। দলগত সাফল্যেই বিশ্বসেরা হয়েছি।’ আমেদাবাদে সচিন তেন্ডুলকর সংবর্ধিত করেন তিতাসদের। সেই প্রসঙ্গে বাংলার পেসার বলেন, ‘সচিন স্যার বলেন, এই সফর থেকে আমরা যেটা শিখেছি সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে সেটাকে হাতিয়ার করেই এগোতে।’
আর পড়ুন: পুলিশের ভূমিকায় পাওয়া গেল ধোনিকে- 2023 IPL-এর আগে CSK অধিনায়ক করছেনটা কী!
বিশ্বজয়ের পর কি বদলে গিয়েছ তিতাস, হৃষিতাদের জীবন? এই প্রশ্নের উত্তরে হৃষিতার স্পষ্ট জবাব, ‘এর আগে আমায় কেউই চিনত না। তবে বিশ্ব জয়ের পর এখন লোকজন আমায় চিনেছে। বদল বলতে এইটুকুই।’ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বজয় করা হয়ে গিয়েছে। এর পরে পাখির চোখ সিনিয়র দলের হয়ে বিশ্বকাপ জয়। ভারতীয় দল যে এখনও সিনিয়রদের বিশ্বকাপ জেতেনি সে কথা মনে করিয়ে দিলেও, হৃষিতার আশা এ বার সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে।
পাশাপাশি নিজের আগামী লক্ষ্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য আইপিএলে ভালো পারফর্ম করা। এর পাশাপাশি ২০২৫ সালে ভারতে যে সিনিয়রদের বিশ্বকাপ আয়োজিত হবে, সেই বিশ্বকাপ খেলতে চাই এবং জাতীয় দলের হয়ে টুর্নামেন্ট জিততেও চাই।’
বিশ্বকাপজয়ী তিন কন্যাকে বিশেষ স্বীকৃতি দিচ্ছে বঙ্গ ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, তিন ক্রিকেটারকে ১০ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে। বুধবার সিএবি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলে তিন জন বাংলার মেয়ে ছিল, এটা আমাদের কাছে সত্যিই গর্বের মুহূর্ত। তিতাস, রিচা এবং হৃষিতা বাংলার ক্রিকেটের মুখ উজ্জ্বল করেছে। ওরা আরও অনেক সাফল্য এনে দেবে বাংলা তথা ভারতীয় ক্রিকেটকে। ওদের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা করে পুরস্কার দেব আমরা।’
For all the latest Sports News Click Here