পায়ে কালশিটে, ঘুঙুরে কত যে পাজামা ছিঁড়েছে, আমি যে এখন বিনোদিনী : রুক্মিণী
‘চ্যাম্প’, ‘ককপিট’, ‘কবীর’, ‘কিডন্যাপ’, ‘পাসওয়ার্ড’-এর মতো বাণিজ্যিক ছবির পর এবার একেবারেই অন্যধারার ছবিতে ধরা দিতে চলেছেন রুক্মিণী মৈত্র। থুড়ি, রুক্মিণী নন, তিনি এখন বিনোদিনী দাসী। আপাতত রুক্মিণীর খোলস ছেড়ে আপাদমস্তক বিনোদিনীতে ঢুকে পড়েছেন অভিনেত্রী। নতুন রূপ ধরে কীভাবে দিন কাটছে? সেসব নানান টুকিটাকি কথা নিয়েই কথা বললেন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার সঙ্গে…
কেমন আছেন আর বিনোদিনীর জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
রুক্মিণী মৈত্র : (হাসতে হাসতে) ভালো আছি, তবে ভীষণ ব্যস্ত। আর পুরোটাই বিনোদিনী নিয়ে। এই ছবির জন্য নানা রকমভাবে প্রস্তুত হতে হচ্ছে। সাধারণত একটা ছবি করি, একটি চরিত্র, বড়জোর দ্বৈত চরিত্র থাকে। আর এখানে প্রায় ৭-৮টা চরিত্র রয়েছে। বিনোদিনী তো রয়েছেই, তারপর উনি যে যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, সেগুলিও রয়েছে। জানা যায়, উনি নাকি একটা নাটকে ৭-টি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, এখানে আমার জার্নিটাও ঠিক তেমনই…।
বিনোদিনীর শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর চরিত্রটা নিয়ে কী বলবে?
রুক্মিণী মৈত্র : বিনেদিনীর শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর চরিত্রে অভিনয়ের বিষয়টা এই ছবিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ছবির পোস্টারে আমার লুকটাই সেটা ছিল। আর এটা নিয়েও নানান প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে, তবে সবটা এখনই ফাঁস করতে চাই না… (হাসি)
আপনি নাকি বিনেদিনীর জন্য বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না?
রুক্মিণী মৈত্র : সকাল ৯-১১ টা পর্যন্ত আমার এখন বিভিন্ন রকম প্রস্তুতি চলে। প্রথমে পায়ের এক্সারসাইজ, তারপর সুদীপ্তা দি-র কাছে অ্যাক্টিং ওয়ার্কশপ ৩-৪ ঘণ্টার, নাচের রিহার্সাল, পুরো দিনটাই এখন আমার বিনোদিনীর। তাই কোথাও যাচ্ছি না। কিছুদিন আগে আমার এক কাছের এক বান্ধবীর বিয়েতে গিয়েছিলাম, নচেৎ কোথাও না। প্রস্তুতিটা কঠিন, কিন্তু সুন্দর। তবে বিনোদিনীকে যত চিনছি নারী হিসাবে গর্ব হচ্ছে।
সুদীপ্তা চক্রবর্তী ওঁর ছাত্রী রুক্মিণীর প্রশংসা করেছেন? কী বলবেন?
রুক্মিণী মৈত্র : সত্যিই… (হাসি)। সুদীপ্তা দি এখন আমার পিলার অথ স্ট্রেন্থ। উনি না থাকলে কী যে করতাম! ওঁর শেখানোর প্রসেসটা অপূর্ব। কত কিছু শেখা যায়, ওঁর কাছ থেকে। নিজেকে নতুনভাবে চেনা যায় ওঁর কাছ থেকে।
কিছুদিন আগেই তো হাঁটুতে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন, তাই বিনোদিনীর জন্য নাচের অনুশীলনে কোনও কি সমস্যা হচ্ছে?
রুক্মিণী মৈত্র : এখন আমার দিন শুরু হয় পায়ের এক্সরসাইজ দিয়েই, যাতে পায়ে জোর বাড়ে। এখনও আমি পুরো ফিট নই, মাত্র ৭০ শতাংশ সুস্থ, সবসময় নি ব্রেস পরে থাকতে হচ্ছে। তার মধ্য়েই এখন রোজ ৩-৪ ঘণ্টা নাচের মহড়া চলে। বিরজু মহারাজের শিষ্য সৌভিক চক্রবর্তীর কাছে আমি কত্থক শিখছি। এছাড়াও এই মুহূর্তে আমার ক্লাসিক্যাল ডান্সের গুরুজি হলেন মনীষা বসু। এরপরে কোরিওগ্রাফার টিমের সঙ্গেও অনুশীলন করব। তবে ফিজিওথেরাপিও চলছে।
চোট তো আছেই, নাচতে নাচতে পায়ে এখন কালসিটে তে ভর্তি, ঘুঙুর পরে নাচতে গিয়ে কত যে পাজামা ছিঁড়েছে, তা আর কীই বা বলব… । ম্যাম একটা এর ছবিও তুলেছেন, পোস্ট করব (হাসি)। তবে এই কষ্টের মধ্যে দিয়েই আমি কিছু অর্জন করতে চাই। এটাই তো অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জীবন…।
আপনি নাকি এখন সব ছেড়ে শুধু শাড়ি পরছেন?
রুক্মিণী মৈত্র : হাহাহা (হেসে), হ্যাঁ। কোনও অনুষ্ঠান কিংবা শ্যুটে যাওয়া ছাড়া আমি সাধারণত জিন্স, টি-শার্টেই থাকি। কিন্তু বিনোদিনী তো শাড়ি পরতেন, ওঁর সেই ওই বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা নিজের মধ্যে নিয়ে আসা, সেটা আয়ত্ত করতেই আমার ওয়ারড্রব বদলে ফেলে পুরোপুরি ইন্ডিয়ান করে ফেলেছি। বাড়ি থাকলে সবসময়ই এখন শাড়ি পরি, তাও সেফটিপিন ছাড়া (কাচুমাচু গলায়)। আর সেই রুক্মিণী নেই। পাগল পাগল লাগছে, তবে এই পাগলামিতে ভীষণ মজা।
পরিচালক রাম কমল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে কিছু বলবেন?
রুক্মিণী মৈত্র : ওঁর কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। উনি এটা সঙ্গে ভীষণভাবে জড়িয়ে রয়েছেন। আমিও নিজের ৫০০ শতাংশ দিয়ে চেষ্টা করছি, এবার দেখা যাক কী হয়…
For all the latest entertainment News Click Here