৭ বছর বয়সেই গিলের টাইমিং লারাকে মনে করিয়েছিল- শুভমনের কোচ সুখবিন্দর টিঙ্কু
শুভব্রত মুখার্জি: বর্তমানে ভারতীয় সিনিয়র দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার শুভমন গিল। স্বপ্নের ফর্মে ব্যাটিং করছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। মাত্র ২৩ বছর বয়সেই ২২ গজে তাঁর ব্যাটিং নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের। সদ্য শেষ হওয়া নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে হাঁকিয়েছেন একটি শতরান এবং একটি দ্বিশতরান। সেই শুভমন ছোটবেলা থেকেই ব্যাটে বলে টাইমিংয়ের বিষয়ে আলাদা প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। মাত্র ৭ বছর বয়সেই এমন টাইমিং করে বল মারতে পারতেন তিনি, যা দেখে মনে হত যেন ডানহাতি ব্রায়ান লারা ব্যাটিং করছেন। এ কথাটাই জানিয়েছেন তাঁর ছোটবেলার কোচ সুখবিন্দর টিঙ্কু।
আরও পড়ুন… WPL 2023- দল কেনার পরে বদলাল RCB-র লোগো, বিশেষ বার্তা কোহলির
প্রসঙ্গত ভারতের হয়ে অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও খেলেছেন টিঙ্কু। ১৯৮৮ যুব বিশ্বকাপে ব্রায়ান লারাকে তাঁর বোলিংয়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার সমস্যায়ও পড়তে হয়েছিল। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে টিঙ্কু জানিয়েছেন, ‘ও (গিল) আমার অ্যাকাডেমির সবথেকে ছোট ক্রিকেটার ছিল। ওঁর শটের টাইমিং অনবদ্য ছিল। আমি ওঁকে কৌতুহলবশত ডেকে ওঁর ব্যাট পরীক্ষা করেছিলাম। ব্যাটটা ছিল কাঠের ব্যাট। সাধারণভাবে দোকানে যে সব ব্যাট আমরা কিনতে পাই সে রকম ব্যাট নয়। ওঁর বাবা ওঁকে ব্যাটটা বানিয়ে দিয়েছিল। নীচ থেকে ছয় ইঞ্চি উপরে ওঁর ব্যাটে ক্রিকেট বলের সাইজের একটা গর্ত করা ছিল। আমি অবাক হয়ে গেছিলাম। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। লাখবিন্দর (গিল, শুভমনের বাবা) তখন জানায় এই ব্যাট দিয়েই ওঁকে দিনে ৫০০-৭০০ বল অনুশীলন করায় সে।’
আরও পড়ুন… বিডে হারলেও হাল ছাড়তে রাজি নয় KKR, শপথ নিল ভবিষ্যতে WPL-কে ইডেনে আনার
টিঙ্কু আরও জানিয়েছেন, ‘গিলের শেখার ইচ্ছা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। ওঁকে কোন জিনিস দ্বিতীয়বার বলতে হত না। আজকে যদি আপনি ওঁকে কোন ত্রুটির কথা বলে দেন তাহলে কালকে ও সেটা ঠিক করে ফেলবে। ওঁর উন্নতিতে লাখবিন্দর পাঁজির দারুণ ভূমিকা রয়েছে। নেটে অনুশীলন হয়ে গেলে সমস্ত বাচ্চারা এবং তাঁদের অভিভাবকরা বাড়ি চলে যেত। ওঁর বাবা কিন্তু ওখানে থাকত। ওঁকে পরবর্তীতে ৩৫-৪০ মিনিট থ্রো ডাউন অনুশীলন করাত। আমি ওকে স্পেশাল কিছু কোন দিন শেখাইনি। ও ভগবানপ্রদত্ত প্রতিভা। কোন জিনিস শেখাতে ওঁর আগ্রহ ছিল দেখার মতন। প্রতিদিন ও উন্নতি করেছে ওঁর খেলায়। এখনও উন্নতি করে চলেছে।’
উল্লেখ্য শুভমন প্রথমবার একবার দুসপ্তাহ অনুশীলন মিস করেছিলেন। সেই কাহিনী ও শুনিয়েছেন তিনি। শুভমনের ছোট বেলার কোচ জানিয়েছেন, ‘ও খুব নিষ্পাপ ছিল। আমার কাছে ছয় মাস অনুশীলনের পরে ও আমাকে না জানিয়ে দু সপ্তাহ অনুপস্থিত ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করি কি হয়েছিল? জানায় আমি ‘পিন্ড’ (গ্রামে) গেছিলাম। আমি রেগে গিয়ে বলি তাহলে এখানে কি করছ? তোমার গ্রামেই ফিরে যাও। ও নিজের কিটব্যাগ উঠিয়ে তখন চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়। কান্নাভেজা চোখে গিল যখন চলে যাচ্ছিল আমি দৌড়ে ওঁর কাছে যাই। ওঁকে আলিঙ্গন করি। ৩০ মিনিট সময় লেগেছিল ওঁকে বোঝাতে যে এটা মজা করেছিলাম ওঁর সাথে। তবে আমি এখনও মনে করি গিলের সেরাটা আমরা দেখিনি। মাত্র ৭ বছর বয়সেই ও যেভাবে বল টাইম করত আমাকে ব্রায়ান লারার কথা মনে করিয়ে দিত। আমি তাই মনে করি এটা গিলের কেরিয়ারের সবেমাত্র শুরু হয়েছে, ওর সেরা খেলাটা আসা এখনও বাকি রয়েছে।’
For all the latest Sports News Click Here