৩৭ বছর আগের উপহার পাওয়া অডি গাড়ি দেখে উচ্ছ্বসিত রবি শাস্ত্রীর মেয়ে
দেখতে দেখতে প্রায় ৩৭ বছর পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই অভিজ্ঞতাটা এখনও উজ্জ্বল তাঁর মনে। ১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বেনসন অ্যান্ড হেজেস কাপে ‘চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়ন্স’ হয়ে অডি গাড়ি জিতেছিলেন রবি শাস্ত্রী। মেলবোর্নে প্রথম বার সেই গাড়ি চালিয়েছিলেন। তার পর ভারতে নিয়ে এসেছিলেন।
সেই গাড়িটি এ বার রবি শাস্ত্রীর মেয়ে প্রথম বার দেখেন। আর সেটা নিয়ে নিজের বিভিন্ন আবেগের কথা লিখেছেন ভারতের প্রাক্তন কোচ। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পাকিস্তানকে হারিয়ে তখন সদ্য চালু হওয়া রঙিন জার্সির ক্রিকেটে বিজয়ী হয়েছিল ভারত। প্রতিযোগিতার সেরা ক্রিকেটার হয়ে গাড়িটি জিতেছিলেন শাস্ত্রী।
সেই ম্যাচের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছেন রবি শাস্ত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘ফাইনাল জিততে তখন আমাদের ১৫-২০ রান বাকি। জাভেদ মিয়াঁদাদ কী ফিল্ডিং সাজিয়েছে, সেটা দেখছিলাম। ও নিজে মিড-উইকেটে দাঁড়িয়েছিল। ভাবল, আমি বোধ হয় গাড়িটা দেখছি। কটাক্ষ করে বলে, বার বার ও দিকে তাকিয়ে কী দেখছ? গাড়ির দিকে তাকাচ্ছো কেন? ওটা তুমি জিততে পারবে না। এর পর আমি গাড়ির দিকে এমন করে তাকালাম, যাতে ও দেখতে পায়। বললাম, ওটা কিন্তু আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। গাড়ির চাবি পাওয়ার আগে এ ভাবেই কিছুটা মজা শুরু হয়ে গিয়েছিল।’
এর পরেই শাস্ত্রী লিখেছেন, ‘আমার জীবনে যা কিছু, তার মধ্যে এই গাড়ি সবার উপরে থাকবে। ছ’টা ছয় মেরেছি। তার গুরুত্ব জানি। কিন্তু গাড়ি পাওয়া সবার উপরে থাকবে। সময়টা ভেবে দেখুন। এক দিনের ক্রিকেট চলছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে এসে দিন-রাতের ম্যাচ খেলছি, প্রথম বার ভারতে আসছে চ্যানেল নাইন, ১৯৮৩-তে সাদা জার্সিতে খেলার পর রঙিন জার্সিতে খেলা, দুর্দান্ত সম্প্রচার, তার উপর পাকিস্তানকে ফাইনালে হারিয়ে জেতা। কেউ কোনও দিন এ জিনিস ভুলতে পারবে না।’
এর পরেই শাস্ত্রী লিখেছেন, ‘ওটা আমার গাড়ি নয়, দেশের সম্পদ। ভারতীয় দলের গাড়ি। মেলবোর্নে ওই গাড়ি চালানো সবাই মনে রেখেছে। বিশ্বকাপজয়ী দল ঠিক তার পরেই আর একটা বড় প্রতিযোগিতায় জিতে ৫০ হাজার দর্শকের সামনে গাড়ি চেপে ঘুরছে। বহু মানুষ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই জিনিস মনে রেখেছে।’
শাস্ত্রী লিখেছেন, ফাইনালে মাঠে গাড়ি চালানোর পর সেই গাড়িতে অনেক দাগ হয়ে গিয়েছিল। সংস্থার তরফে নতুন একটি গাড়ি পাঠানো হয়। তাঁর বাবা মাঝেমাঝে রবিবার ওই গাড়ি নিয়ে বেরোতেন। তখনও লোকের ধারণা হত, শাস্ত্রীই বোধ হয় গাড়ির ভিতরে রয়েছেন। ভিড় জমে যেত। ফলে শাস্ত্রীর বাবাও এক সময় ওই গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, এখন ওই গাড়ি নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। তাঁর মেয়ে প্রথম বারের জন্য সেই গাড়ি দেখতে পেয়েছেন। শাস্ত্রীর ইচ্ছে, মেয়েকে নিয়ে এক বার অন্তত সেই গাড়িতে চড়ে ঘুরবেন।
For all the latest Sports News Click Here