২-১-০-W-২-১- শেষ ওভারে বুড়ো হাড়ের ভেল্কি, হার্দিকদের রুখে চমক ইশান্তের
কথায় আছে, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। সেটাই আর একবার প্রমাণ করলেন ইশান্ত শর্মা। তাঁর জাদুতেই গুজরাটের ঘরের মাঠে গিয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বধ করে অক্সিজেন পেল দিল্লি ক্যাপিটালস।
শেষ ওভারে আসল কাজটা করে গেলেন ইশান্ত শর্মাই। গুজরাট টাইটান্সের জিততে হলে দরকার ছিল ১২ রান। ক্রিজে ছিলেন হার্দিক পাণ্ডিয়া এবং রাহুল তেওয়াটিয়া। রাহুল ভয়ঙ্কর মেজাজে ছিলেন। আগের ওভার অর্থাৎ ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে এনরিখ নরকিয়াকে পিটিয়ে ছক্কা হাঁকানোর হ্যাটট্রিক করেন রাহুল। সেই সঙ্গে বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান এক লাফে অনেকটা কমিয়ে নিয়ে আসেন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শেষ ওভারে ১২ রান করাটা কোনও বড় বিষয়ই ছিল না। আকছার এই রান তাড়া করে জিতছে বিভিন্ন টিম। কিন্তু ডেভিড ওযার্নার এই রান ডিফেন্ড করার দায়িত্ব তুলে দেন ইশান্তের হাতে। আর অধিনায়কের ভরসার যথাযোগ্য মর্যাদা দেন ইশান্ত।
আরও পড়ুন: কোহলি-গম্ভীরের মধ্যে ধুন্ধুমার, টেনশনে পড়ে মাঠেই সকলকে নিয়ে বৈঠক লখনউ কর্তাদের
ইশান্ত বল করতে এলে হার্দিক ছিলেন স্ট্রাইকে। প্রথম বলে হয় ২ রান। দ্বিতীয় বলে হয় ১ রান। স্ট্রাইকে আসেন রাহুল তেওয়াটিয়া। তিনি তৃতীয় বলে রান নিতে পারেননি। পরের তিন বলে প্রয়োজন ছিল ৯ রান। কিন্তু এর পর রাহুলকে স্লোয়ার লেন্থ বল দেন ইশান্ত। সেটা মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন রাহুল। রিলি রসৌ সেই ক্যাচ মিস করেননি। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে রাহুলের এই উইকেট হারানোটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়।
রাহুলের বদলে ক্রিজে আসেন রশিদ খান কিন্তু তিনি স্ট্রাইকে এসে পঞ্চম বলে নেন ২ রান। শেষ বলে জিততে ৭ রান প্রয়োজন ছিল। আর ছক্কা হলেও ম্যাচ সুপার ওভারে গড়াত। কিন্তু শেষ বলটি হাঁটুর উপরে ফুলটস দেন ইশান্ত। রশিদ মারার চেষ্টা করলেও, সেটা বেশি দূর যায়নি। এক রান হয়। ম্যাচটি দিল্লি ৫ রানে জিতে যায়। সৌজন্য ইশান্ত শর্মা।
ইশান্ত শর্মাকে ব্রাত্যের তালিকাতেই ফেলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিল্লির জার্সিতে আইপিএলে তিনি ফুল ফোটাচ্ছেন। ইশান্তের জন্যই মাত্র ১৩০ রান করেও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে জয় ছিনিয়ে নিতে পারলেন ডেভিড ওয়ার্নাররা।
আরও পড়ুন: প্রথম বলে উইকেট নিয়ে রেকর্ড শামির, ছুঁলেন মালিঙ্গা-বোল্টকে, একাই গুঁড়িয়ে দিলেন সৌরভের দিল্লিকে- ভিডিয়ো
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মহম্মদ শামির বিধ্বংসী বোলিংয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। দিল্লির টপ-অর্ডারের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে চার জনকেই ফেরান শামি। একমাত্র ডেভিড ওয়ার্নার (২) রানআউট হন। প্রথম বলেই শামি সাজঘরে ফেরান সল্টকে (শূন্য)। এর পর রিলি রসৌ (৮), মণীশ পাণ্ডে (১) এবং প্রিয়ম গর্গকে (১০) আউট করে দিল্লির কোমর ভেঙে দেন শামি।
তবে সাতে ব্যাট করতে নেমে আমন হাকিম খান ৪৪ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৫১ রান করেন। ৩০ বলে ২৭ করেন অক্ষর প্যাটেল। এ ছাড়া রিপল প্যাটেল ১৩ বলে ২৩ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন। যে কারণে দিল্লি ক্যাপিটালস নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩০ রানে পৌঁছতে পারে। শামির চার উইকেট ছাড়া মোহিত শর্মা ২ উইকেট নিয়েছেন। ১ উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান।
হার্দিক পাণ্ডিয়া ছাড়া গুজরাট টাইটান্সের ব্যাটিং অর্ডারের দশাও তথৈবচ। তিনে নেমে হার্দিক ৫৩ বলে ৫৯ রান করেন। তিনি শেষ পর্যন্ত অপরাজিতও থাকেন। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেননি। এ ছাড়া অভিনব মনোহর ৩৩ বলে ২৬ রান করেন। রাহুল তেওয়াটিয়া ৭ বলে ঝোড়ো ২০ রান করেন। বাকিরা কেউ দুই অঙ্কের ঘরেই পৌঁছাননি। নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৬ রান করে গুজরাট। দিল্লির ইশান্ত এবং খালিল আহমেদ ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। কুলদীপ যাদব এবং এনরিখ নরকিয়া ১টি করে উইকেট নেন।
For all the latest Sports News Click Here