হোটেলে যুগলরা যেখানে সঙ্গম করে তার পাশেই গীতা রাখা থাকে, ওপেনহাইমার বিতর্কে শোভা
যৌনসঙ্গমের সময়ই গীতা পাঠ! ক্রিস্টেফার নোলানের বহু আলোচিত ছবি ‘ওপেনহাইমার’-এ এমনই বিতর্কিত দৃশ্য় উঠে এসেছে। যা নিয়ে সমালোচনার শেষ নেই। ছবির শুরুর দিকেই একটি দৃশ্য রয়েছে যেখানে নোলানের নায়ক রবার্ট ওপেনহাইমারকে (কিলিয়ান মার্ফি) দেখা গিয়েছে তাঁর প্রেমিকা জিন ট্যাটলকের (ফ্লোরেন্স পিউ) সঙ্গে সঙ্গমরত অবস্থায় দেখা গিয়েছে। বুক শেলফ থেকে একটা পুরনো বই বার করে আনেন জিন। পাতা খুলে দেবনাগরী হরফে লেখা ভগবত গীতার শ্লোক পাঠ করার নির্দেশ ওপেনহাইমারকে। তা মেনে নেন নায়ক। দৃশ্য বলতে শুধু এটুকুই। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীদের হজম হচ্ছে না নোলানের ছবির এই দৃশ্যায়ন।
শয্যাদৃশ্যে গীতা পাঠ দেখিয়ে হিন্দু ধর্মের অপমান করেছেন নোলান, এমন অভিযোগ এনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের কাছে ছবির স্ক্রিনিং বন্ধের দাবি তুলেছেন অনেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঝড়। অনেকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছেন ভারতীয় সেন্সর বোর্ডকেও। কীভাবে এমন দৃশ্য ছবিতে রাখার অনুমতি দিল তারা?
গোটা ঘটনায় এবার নিজের মতামত জাহির করলেন লেখিকা শোভা দে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে ট্যাগ করে ‘ওপেনহাইমার’-এর যৌনসঙ্গমের দৃশ্য় নিয়ে টুইটও করেন লেখিকা। নোলানের ছবিতে মুগ্ধ শোভা দে লেখেন- ‘আমি ওপেনহাইমার ছবিটি দেখে বাকরুদ্ধ। এক কথায় অসাধারণ। আর সেক্সের দৃশ্যে ভগবত গীতার পাঠ নিয়ে যে বিতর্ক হচ্ছে…. আরে…. প্রচুর পাঁচতারা হোটেল রয়েছে যারা প্রত্যেক রুমে গীতা এবং বাইবেল রাখেন। বিছানার একদম পাশে, যেখানে যুগলরা যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়। কেউ প্রতিবাদ জানায় না…অনুরাগ ঠাকুর’।
শোভা দে-র এই টুইট নতুন করে ওপেনহাইমার বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালল। একজন টুইটারবাসী শোভা দে-কে ট্যাগ করে লেখেন- ‘ছবিতে কোথাউ ভগবত গীতা দেখানো হয়নি। একটি বই থেকে গীতা শ্লোক পাঠ করা হয়েছে’। অপরজন শোভাকে সমর্থন করে জানান, ‘আমার একটাই প্রশ্ন, যৌনতার মধ্যে কি সত্যিই অশ্লীলতা রয়েছে? এটা কি অপরাধ? যৌনতাকে তো আমাদের দেশের নানান মন্দিরের স্থাপত্যে তুলে ধরা হয়েছে, তার বেলায়?’ অপর এক নেটিজেন লেখেন-‘কখনও তো পাঁচতারা হোটেলে ভগবত গীতা চোখে পড়েনি, তবে হ্যাঁ, অনেক রুমে বাইবেল রাখা থাকে’।
এএনআই সূত্রে খবর, এই বিতর্কিত দৃশ্য নিয়ে ইতিমধ্যেই হস্তক্ষেপ করে ফেলেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। তিনি ফিল্ম সার্টিফিকেশন বডি তথা সিবিএফসি-র নিন্দে করেন এমন একটি দৃশ্যে কাঁচি না চালানোর জন্য। গোটা ঘটনায় বিরক্ত মন্ত্রী।
সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন বা সেন্সর বোর্ড কীভাবে এমন একটা দৃশ্যে কাঁচি না চালিয়ে ছবিকে ছাড়পত্র দিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী। অবিলম্বে ছবি থেকে ওই দৃশ্যটি মুছে ফেলার কথা নির্মাতাদের জানিয়েছেন তিনি। এমনকী, গাফিলতির কারণে সেন্সর বোর্ডের যে সকল সদস্য ওপেনহাইমারের স্ক্রিনিং-এ হাজির ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও খবর।
ভারতীয় দর্শকদের কথা মাথায় রেখে এই ছবির বেশকিছু দৃশ্যে আগেই পরিবর্তন এনেছিলেন নির্মাতারা। ছবিতে ফ্লোরেন্স পিউ-কে একাধিকবার নগ্ন অবস্থাতে দেখা গিয়েছে, যে দৃশ্যগুলিতে ভিএফএক্স-এর মাধ্যমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তার পরেও বিতর্ক এড়ানো গেল না।
For all the latest entertainment News Click Here