স্মিথ কি রান আউট ছিলেন? নীতিন মেনন কি সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন? উত্তর দিল MCC
ওভালে ২০২৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ২৮৩ রান করেছিল। জবাবে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে যায় ২৯৫ রানে। এভাবে অস্ট্রেলিয়ার মোট ১২ রানের লিড পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এখন সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে। এমন সময়ে অ্যাশেজ সিরিজ এবং ওভালে অনুষ্ঠিত হওয়া শেষ টেস্টের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিষয় সকলের সামনে উঠে আসছে। এই টেস্টে ‘রান আউট’ একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশ্ব বাইশ গজ তোলপাড় হচ্ছে।
এসবই ঘটেছে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের সময়। ৭৭.৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ মিড-উইকেটে বল খেলেন। প্যাট কামিন্সের সঙ্গে দুই রান পূর্ণ করতে দৌড়ে যান স্মিথ, কিন্তু তারপরই ফিল্ডার জর্জ ইলহাম বলটি বাউন্ডারি লাইনের কাছে ধরে ফেলেন ও উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোর দিকে ছুড়ে দেন। জনি বল সংগ্রহ করেন এবং স্টাম্পে আঘাত করেন।
সেই সময় রান পূর্ণ করার জন্য এবং রানআউট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্টিভ স্মিথও ডাইভ দেন। রানআউটের হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছিলেন স্মিথ। এরপর রানআউটের আবেদন জানায় পুরো ইংল্যান্ড দল। এরপরেই মাঠের আম্পায়ার সিদ্ধান্তটি জানার জন্য তৃতীয় আম্পায়ারের দিকে নজর দেন। যখন তৃতীয় আম্পায়ার আউটটি দেখতে স্ক্রিন দেখছিলেন তখন স্টিভ স্মিথ একবার ভেবেছিলেন যে তিনি আউট হয়ে গিয়েছেন। তাই তিনি প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটতে থাকেন। কিন্তু তখন মাঠের আম্পায়াররা তৃতীয় আম্পায়ার (টিভি আম্পায়ার) নীতিন মেননের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। নীতিন মেনন বিভিন্ন দিক থেকে রানআউটের আবেদন পর্যালোচনা করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্টিভ স্মিথকে নটআউট দেন। নীতিন মেননের এমন সিদ্ধান্ত দেখে ইংল্যান্ডের ফিল্ডাররাও অবাক হয়েগিয়েছিলেন।
আম্পায়ার নীতিন মেননের সিদ্ধান্তে খুশি হননি ইংলিশ খেলোয়াড়রা। তাদের অভিব্যক্তি থেকেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। পরে সংবাদ সম্মেলনে স্টুয়ার্ট ব্রডও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এমন পরিস্থিতিতে ব্রডের আম্পায়ারিং নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণে ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে। একইসঙ্গে রানআউটের এই সিদ্ধান্তে বিভক্ত হয়ে পড়ে গোটা ক্রিকেট মহল। এখন জেনে নেওয়া যাক স্টিভ স্মিথকে কেন নট আউট দেওয়া হল? এই বিতর্কে এবার ক্রিকেটের নিয়ম প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)ও ঢুকে পড়েছে। এমসিসি বলেছে এর জন্য ক্রিকেটের নিয়ম কি বলে?
এমসিসি নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছে, যে ভিডিয়োটি দেখানো হচ্ছে তা নিয়ে আমরা অনেক প্রশ্ন পেয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে, আইন ২৯.১ বলে – যখন উইকেট পড়ে যায়, অন্তত একটি গিলি (ক্রিকেট বেইল) স্টাম্পের পাশ থেকে উপড়ে ফেলা উচিত ছিল। অথবা এটা হতে পারে যে মাটি থেকে এক বা একাধিক স্টাম্প সরানো হয়েছে। এই বিষয়ে স্পষ্টীকরণ দেওয়া হয়েছে অন্য একটি টুইটে।
এমসিসির অফিশিয়াল ইন্টারপ্রিটেশন অফ দ্য ল অফ ক্রিকেট এবং টম স্মিথের ক্রিকেট আম্পায়ারিং এবং স্কোরিংও রান আউট না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছে। লিখতে গেলে উভয় দিক থেকে গিলি (ক্রিকেট বেইল) ফেলতে হবে। অর্থাৎ যেখানে স্টাম্পের সঙ্গে লাগানো আছে, সেই অংশটুকু ফেলে রাখা উচিত ছিল। অর্থাৎ এমসিসি বলতে চেয়েছে, বেইলটিকে উইকেট থেকে একবারে আলাদা হতে হবে, তবেই এটাকে আউট মানা যাবে। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যাচ্ছে যতক্ষণ স্মিথ ক্রিজের বাইরে ছিলেন ততক্ষণ পর্যন্ত বেইলটি উইকেটের সঙ্গে যুক্ত ছিল। স্মিথ ক্রিজে ঠুকতেই বেইলটি পড়ে যায়। তবে এসবের মাঝে আম্পায়ার নীতিন মেননকে সমর্থন দেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি নীতিনের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন।
এর আগে, অ্যাশেজ ২০২৩-এর অধীনে, লর্ডস টেস্টেও জনি বেয়ারস্টো রানআউট হয়ে গেলে অনেক হট্টগোল হয়েছিল। জনি বল ডেড হওয়ার আগেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তার পরই সুযোগ দেখে রান আউট করেন অস্ট্রেলিয়ান উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি। এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীরাও পরে মন্তব্য করেছিলেন।
For all the latest Sports News Click Here