সৌরিশের ‘জুতো’ জার্নি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালদের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিলেন তথাগত
‘জুতো’ নিয়ে আসছেন পরিচালক সৌরিশ দে। পূর্ণ দৈর্ঘ্যের নির্বাক ছবিতে দুই মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভাস্কর দত্ত এবং চলন্তিকা গঙ্গোপাধ্যায়। আগেও চারটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের নীরব ছবি বানিয়েছেন তিনি। কিন্তু এই প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি বানালেন সৌরিশ।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালদের ক্ষেত্রে ছবি তৈরির পর থাকে আরও একটা লড়াই। প্রেক্ষাগৃহে ছবি মুক্তি পাওয়া নিয়ে লড়াই। প্রেক্ষাগৃহ দর্শকদের টেনে আনা, ছবি টিকিয়ে রাখার বিষয়। এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নতুন উদ্যোগ নিলেন অভিনেতা-পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়। নির্মাণ করলেন ক্যাফে চেইন। যেখানে একের পর এক ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালকের ছবি মুক্তি পাবে।
পরিচালক তথাগত মুখোপাধ্যায়ের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘের ছবি ‘ভটভটি’। ছবি মুক্তির সময় কিছু বিষয় নিজে অনুভব করেছেন তিনি। তাই ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালদের কথা মাথায় রেখে এই অভিনব উদ্যোগ তথাগতর। যেখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পরিচালকদের ছবি দেখতে পাবেন দর্শক।
এই ছবি বানানোর নেপথ্যে একটা দীর্ঘ লড়াই রয়েছে সৌরিশের। ২০১৬ সালের শেষের দিকে এই ফিচার ফিল্মের স্ক্রিপ্ট লেখা শুরু করেন তিনি। এই ছবি তৈরির কথা মাথায় কী করে এল? এ বিষয় হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘সেই সময় সলমন খানের একটি ছবি মুক্তি পেয়েছিল। তা নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশ একটা উন্মাদনা চলছিল। ঠিক সেই সময় এক প্রেক্ষাগৃহের সামনে দুই মূক-বধির ব্যক্তিকে দেখতে পাই। এক কোণায় দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে আকারে-ইঙ্গিতে আলোচনায় ব্যস্ত তাঁরা। কিন্তু ওই পোস্টার বা সলমনের ছবি সম্পর্কে ওঁদের কোনও উত্তেজনাই ছিল না। আমার মনে দাগ কাটে। মনে হয়েছিল ওঁরা হয়তো এই বিষয়টাকে বা মিউজিকগুলি উপভোগ করে না বা করতে পারে না। তাই ছবিটি নিয়ে হয়তো তাঁদের কোনও উত্তেজনাও ছিল না।’
আরও পড়ুন: পূর্ণ দৈর্ঘ্যের নির্বাক ছবি, ‘জুতো’র ভাবনা কীভাবে এল সৌরিশের মাথায়
এই সকল বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষের ভেবেই নির্বাক ছবি বানানোর কথা মাথায় আসে সৌরিশের। কিন্তু স্ক্রিপ্ট প্রস্তুত থাকলেও মেলেনি প্রযোজক। ফলে ছবি তৈরির ক্ষেত্রে লড়াইটা আরও কঠিন হয়ে পড়ে তাঁর। তিন বছর ধরে অল্প অল্প করে অর্থ সঞ্চয় করে ছবিটা তৈরি করেন। প্রেক্ষাগৃহ না পেলে ছবি মুক্তি করতে পারবেন না, সেই নিয়ে চালিয়ে যান লড়াই।
প্রসঙ্গত, ছবির আসল হিরো একটি জুতো। অন্যদিকে, ছবির নামও ‘জুতো’। ৮০ মিনিটের পূর্ণ দৈর্ঘ্যের এই নির্বাক ছবি সর্বসাধারণের কাছে আনতে চেয়েছিলেন সৌরিশ। ছবিতে তথাকথিত কোনও তারকা নেই। ফলে বাণিজ্যিক ছবির ভিড়ে এই ছবি হাতে নিয়ে সুযোগ পাওয়াটা বেশ কঠিন।
অবশেষে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নজরুল তীর্থে দেখানো হবে ‘জুতো’। ৫০ জন মূক-বধির ব্যক্তিদের জন্য ছবি দেখানোর বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ‘ওহানা ফিল্ম ক্লাব’ ক্যাফেতে এই ছবি দেখানোর সুযোগ পান সৌরিশ। যদিও এই ক্যাফেতে প্রতি শনিবার এবং রবিবার ছবির স্ক্রিনিং হয়। কিন্তু পরিচালকের অনুরোধে ২৫ তারিখ থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা প্রতিদিন একটি করে শো-টাইম রাখা হয়েছে ‘জুতো’র।
For all the latest entertainment News Click Here