‘সোজা গিয়ে বুম্বাদার পায়ে…আমার কেরিয়ার শেষ’, প্রকাশ্যে কেন কেঁদেছিলেন যিশু?
টলিউডের নায়কদের মধ্যে সম্পর্কটা ঠিক কেমন? আম জনতার মধ্যে মাঝেমধ্যেই উঁকি দেয় এই প্রশ্ন। তারকার ভক্তরা তো সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় তারকার জন্য জান-প্রাণ লড়িয়ে বাকযুদ্ধও চালান। ইন্ডাস্ট্রির অন্দর থেকে মাঝেমধ্যেই ইতিউতি ফিসফিসানি শোনা যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নাকি পলিটিক্স করে অনেক নায়কের কেরিয়ার শেষ করার চেষ্টা করেছেন। সেই তালিকায় একদম উপরের দিকে রয়েছেন যিশু সেনগুপ্ত। বুম্বাদা নাকি যিশুকে নিজের ভাই বানিয়েই রেখেছিলেন, হিরো হতে দেননি। এই অভিযোগ বহুদিনের। কিন্তু সত্যি কি তাই? একবার এই প্রশ্নের খোলাখুলি জবাব দিয়েছিলেন যিশু নিজে।
বনির টক শো-তে এসে যিশু বলেছিলেন, ‘যারা অ্যান্টি বুম্বাদা তাঁরা অনেক বলেছে বুম্বাদা তোকে ভাই করে রেখে দিয়েছে। তোকে হিরো হিসাবে উঠতে দেয়নি। বুম্বাদা আমার কাছে বড় দাদার মতো। উনি আমার জীবনের এমন একজন মানুষ, যিনি ছবির কাজের বাইরেও সারাক্ষণ আমার পাশে থেকেছেন। নিন্দকদের আমি সবসময় একটাই কথা বলেছি, বুম্বাদা আমার কপালে কোনওদিন বন্দুক ঠেকিয়ে বলেনি, এই কাজটা তোকে করতে হবে। আজ অবধি কোনওদিন বুম্বাদা ষড়যন্ত্র করে আমার কেরিয়ার নষ্ট করবার চেষ্টা করেননি। বরং আমাকে সবসময় গাইড করেছেন’।
এখানেই শেষ নয়, এই শো’তেই যিশু জানান একবার তাঁর দুটো ছবির ডেট ক্ল্য়াশ করে গিয়েছিল একদম অযাচিত কারণে। পরপর ডেটে কলকাতা ও মহীশূরে শ্যুটিং শেডিউল করেছিলেন যিশু। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হরনাথ চক্রবর্তীর ছবির শ্যুটিংয়ের দিন কলকাতায় একদিন বেড়ে যায়, অন্যদিকে পরদিন সকালেই মহীশূরে অনুপ সেনগুপ্তর ছবির শ্যুটিংয়ে পৌঁছাতে হবে যিশুকে। মহাফ্যাঁসাদে নায়ক, তাঁর কথা শুনতে রাজি নন দুই পরিচালকই। একদিনে কলকাতা ও মাহীশূরে শ্যুটিং সেটে হাজির থাকতে হবে তাঁকে। সিনিয়র ডিরেক্টরদের কাছ থেকে খানিক বকাঝকা শুনে প্রায় কাঁদোকাঁদো অবস্থা যিশুর। মহীশূরে আবার মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে শ্যুটিং সারতে হবে! উপায় কী? যিশু বললেন, ‘আমি তো শেষ…. কাঁদতে কাঁদতে সোজা বুম্বাদার পায়ে, এখনও মনে আছে ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে ফ্লোরের গেটটার কাছে বুম্বাদা বসেছিল। (কাঁদো কাঁদো গলায়) বুম্বাদা আমার কেরিয়ার শেষ। কিচ্ছু হবে না। এরপর দাদা বলল কী হয়েছে? আমি সবটা বলায় বলল, তুই এমনভাবে ডেট দিস কেন? তারপর অনুপদাকে নিজে ফোন করল। বলল, কাল সকালে ফার্স্ট হাফে এখানে শ্যুটিং করবে। আর সন্ধ্যার মধ্য়ে তোর ওখানে পৌঁছে যাবে। পরশু সকালে ওখানে শ্যুটিং করবে। যাই হোক বুম্বাদার কথা শুনে অনুপদা রাজি হন’।
গোটা ঘটনা বনির খুব ভালোভাবেই জানা, তিনি নিজে অনুপ সেনগুপ্ত পুত্র। তবুও হাসি থামেনি তাঁর। অন্যদিকে যিশু বলেন, ‘পরদিন হোটেলে তো আমি ভয়ে ভয়ে ঢুকছি। অনুপদা আমাকে দেখেই প্রথম প্রশ্ন, তুই কাঁদছিলি কেন বুম্বাদার সামনে? আমি আর কী বলব… বললাম আমি তো ভাবলাম আমার কেরিয়ার শেষ, ইন্ডাস্ট্রি থেকে বেরিয়ে যেতে হবে’।
সম্প্রতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের এক ফ্যান ক্লাবের তরফে এই ভিডিয়ো শেয়ার করে হয়েছে। যার কমেন্ট বক্সে ‘ইন্ডাস্ট্রি’র জন্য উপচে পড়ছে ভালোবাসা। নেটিজেনদের কথায়, ‘কেউ কারুর কেরিয়ার নষ্ট করতে পারে না। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটা মানুষ নিজের জায়গা ধরে রেখেছে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের যোগ্যতায়।’ অপর একজন লেখেন, ‘প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় হওয়া বড়ই কঠিন…. এই ভিডিয়োটা দেখে আরেকবার সেটাই বুঝলাম’।
For all the latest entertainment News Click Here