‘সে এক অন্য কলকাতা, রাতের ক্লাবে আমায় শাড়িতে দেখেই শুরু ফিসফাস…’
পরনে শাড়ি, কপালে ‘ক’ লেখা টিপ, মাইক হাতে ৭,৮ ও ৯-এর দশকে এভাবেই মঞ্চ কাঁপিয়েছেন। ধীরে ধীরে কলকাতাবাসীর কাছে হয়ে উঠেছেন তাঁদের প্রিয় ‘দিদি’। বাংলার বাইরে থেকে এসেও এই বাংলাকে এবং কলকাতাকে ভালোবেসে মিলেমিশে গিয়েছেন। তবে শুরু থেকেই কলকাতার ছবিটা মোটেও এমনটা ছিল না। সম্প্রতি, কলকাতাতেই আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন পুরনো সেই দিনের কথা। একসময় এই কলকাতার বুকেই শাড়ি পরার জন্য কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছিল। কথাটা শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সে এক অন্য কলকাতা, অন্যরকম রাতের কথা বললেন ঊষা উথুপ।
সালটা ১৯৬৯, পার্কস্ট্রিটের বুকে এক নামী রেস্তোরাঁ এবং বার। সেখানেই গায়িকা হিসাবে নিজের কেরিয়ারের শুরুর দিকে গান করতে এসেছিলেন। সেসময়ের স্মৃতি থেকে কিছু কথা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন ঊষা উথুপ। বলেন, ‘রাতের কলকাতা তখন অন্যরকম, নাইটক্লাবের শহর। আমি শাড়ি পরতাম। আর তা নিয়ে প্রায়ই লোকজনের ফিসফাস শুনতাম, অনেকেরই বিস্মিত প্রশ্ন, এই আম্মা এখানে কী করছেন? তবে আমি যখন গান গাইতে শুরু করি, তখন ছবিটা বদলে গেল। তাঁরা আমার আর আমার গানের সঙ্গে মিশে গেলেন, আমাকে আমার মতো করেই গ্রহণ করলেন। আমিও কলকাতার সঙ্গে ধীরে ধীরে মিলে মিশে গিয়েছিলাম।’ এদিন কথা বলার সময় নিজের স্বামীর প্রশংসাও করেন শিল্পী। জানান, কীভাবে তাঁর কেরিয়ারে তিনি নিজের স্বামীকে পাশে পেয়েছেন। উষা উথুপের কথায়, , ‘উনি আমাকে বড় হতে দিয়েছেন, উড়তে দিয়েছেন। পারিবারিক এই সমর্থন মানুষকে জায়গায় পৌঁছে দেয়।’ উঠতি শিল্পীদের জন্য তাঁর বার্তা, ভালো কিছুর জন্য সব সময়ই ধৈর্য ধরতে হয়।
এদিন ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়েও মুখ খোলেন ঊষা উথুপ। তাঁর কথায়, ‘এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে বিশ্বের সমস্ত সঙ্গীতশিল্পীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং শান্তির জন্য কিছু করতে হবে। কারণ, সর্বপ্রথম আমরা বিশ্বের নাগরিক’। জানান, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের আগে তিনি যখন পূর্ব ইউরোপে গিয়েছিলেন, সেসময় স্থানীয় ভাষায় তাঁর গাওয়া ‘ডার্লিং, আঁখোঁ সে আঁখিঁ চার করনে দো’ গানটি রাশিয়ান ও ইউক্রেনিয়, উভয়পক্ষই উপভোগ করেছিল। তবে তখনও যুদ্ধ শুরু হয়নি।
For all the latest entertainment News Click Here