‘সেই জন্যই মিঠুনদা আমায় ভালোবাসে’, মিঠুন এবং তাঁর সম্পর্ক নিয়ে কী জানালেন দেব
২৫ ডিসেম্বর টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা দেবের জন্মদিন। কিছুদিন আগেই দেবের নতুন ছবি ‘প্রজাপতি’ মুক্তি পেয়েছে। তবে এবার প্রথম নয়, বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, বড়দিনের আগে বা ওই সময় দেবের একটা নতুন ছবি রিলিজ করেই। কিন্তু এবার প্রজাপতি ছবিটি ইতিমধ্যেই দারুন সাড়া পেয়েছে দর্শকদের থেকে। ফলে দুইয়ে মিলিয়ে অধিকারী বাড়িতে এখন আনন্দের আমেজ। তবে একদিকে আছে ছবির কাজ, তেমনই অন্যদিকে রয়েছে রাজনীতি। বাংলার শাসক দল, তৃণমূলের সাংসদ তিনি। ফলে চরম ব্যস্ততায় তাঁর দিন কাটে। এখন তিনি তাঁর ছবির প্রচারে ব্যস্ত।
কিন্তু প্রতি জন্মদিনের আগে কেন তাঁর নতুন ছবি মুক্তি পায়? এর নেপথ্যে কি কোনও জ্যোতিষীর পরামর্শ আছে? সম্প্রতি আনন্দবাজারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অভিনেতা এই প্রশ্নের উত্তরে জানান, ‘না না আমি এসব একদমই বিশ্বাস করি নাম আমার হাতে কোনও আংটি নেই। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করায় আমি বিশ্বাসী। একটা সময় তো মানুষের জুতো দেখে তাঁর বিচার করা হতো, তারপর এল কাদের সঙ্গে ওঠাবসা করা হচ্ছে সেটা দেখে। আর এখন ব্যবহার দেখে মানুষের বিচার করা হয়। ফলে আমার ব্যবহার হল আমার পরিচয়। হাতে পাথর নিলে তো আর মানুষ বদলাবে না! সময় বদলায়।’
জ্যোতিষ বিশ্বাস করেন না বোঝা গেল কিন্তু জন্মদিনের গিফট? সেটা? কোন জিনিস তাঁর উপহার হিসেবে পেতে ভালো লাগে? এই প্রশ্নের উত্তর অভিনেতা জানান, উপহার নিয়ে মাতামাতি করার বয়স আর নেই তাঁর। বয়স বাড়ার সঙ্গে তাঁর যে অভিজ্ঞতা। বাড়ছে সেটাও বলেন। তাঁর মতে, ‘ যত বয়স বাড়বে, তত ভালো।’
কিন্তু প্রজাপতিতে যিনি ওয়েডিং প্ল্যানারের ভূমিকায় অভিনয় করলেন তিনি নিজে কবে ছাদনাতলায় যাচ্ছেন? বাড়িতে কি চাপ দিচ্ছে? এর উত্তরে তিনি বলেন ‘না, এখন আর বলে না। আমায় প্রতি সাক্ষাৎকারের শেষে এই প্রশ্ন করা হয়, যে দেবের বিয়ে কবে। বিরক্ত হই না। কারণ আমার কাজ এটা। এটা নিয়েই চলতে হবে। তবে প্রতি সাক্ষাৎকারের দেশের কাছে এই প্রশ্নটা আসে।’
মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ মুম্বইয়ে আমার বাবার ক্যাটারিংয়ের ব্যবসা ছিল। সিনেমার সেটে মিঠুন দার সঙ্গে প্রথম দেখা হয় উনি তখন থেকেই আমায় স্নেহ করতেন, অনেক গল্প করতে। জানাতেন ওঁর প্রেমের গল্প থেকে আগেকার দিনের সেটের গল্প। আমায় অনেকটা স্পেস দিতেন তিনি। বুম্বাদার থেকেও আমি এই স্পেসটা পাই। এই জন্যই আমার সঙ্গে সমস্ত সিনিয়রদের খুব ভালো সম্পর্ক।’ একই সঙ্গে তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘ মিঠুন দার সেটে আমার বাবা খাবার দিত, আর এখন তিনিই তাঁর প্রযোজক। এক সময় যে তাঁকে খাবার দিয়েছে আজ সে আমার বস।’
তবে দেব, মিঠুন দুজনের রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা, সেটা নিয়ে কখনও সমস্যা হয়নি? সেই প্রশ্নের উত্তরে দেব বলেন যে তাঁরা কখনই একে অন্যের পছন্দের হস্তক্ষেপ করেন না। তিনি বলেন, ‘ মিঠুন দা সকালে তৃণমূলকে গাল দিয়ে বিকেলে আমার বাড়িতে খেতে এসেছে। খাওয়া দাওয়া, আড্ডা, সব হয়। আমাদের সম্পর্ক এমন। আমি কখনও অন্য দলকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করিনি। তাই হয়তো আমাদের মধ্যে এত ভালো সম্পর্ক।’
সিনিয়ররা তাঁকে যে স্পেস দেন তিনিও কি সেই একই স্পেস জুনিয়রদের দেন? তাই কি শ্বেতা ভট্টাচার্যকে এই ছবিতে দেখা গেল? এই বিষয়ে অভিনেতা বলেন, ‘ সেট তো আমি বলতে পারব না। আমার জুনিয়রদের কাছে জিজ্ঞেস করলে ওঁরা সঠিক উত্তর দিতে পারবে। তবে আমি যেটা বড়দের থেকে পেয়েছি আমি সেটা ওদের দেওয়ার চেষ্টা করব।’ শ্বেতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ অনেকদিন ধরেই এই চরিত্রের জন্য কাউকে খোঁজা হচ্ছিল। তখন অতনু দা কয়েকজনের সঙ্গে দেক করেন এবং শ্বেতাকে সিলেক্ট করা হয়। খুব ভালো অভিনেত্রী। আর যাঁরা সিরিয়ালে বা থিয়েটারে অভিনয় করে এসেছেন তাঁদের নতুন করে কিছু শেখাতে হয় না।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন নতুনদের কাজ দেওয়ার বিষয় তাঁর অন্তত কোনও ছুঁৎমার্গ নেই।
বাংলার নানান হলে চলছে প্রজাপতি। ইতিমধ্যেই দর্শকদের থেকে এই ছবি দারুন সাড়া পেয়েছে। তবে মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গেল স্ক্রিন হলে এই ছবি জায়গা পেলেও নন্দনে জায়গা পায়নি। দেব সেটা নিয়ে খারাপ লাগার কথাও প্রকাশ করেছেন।
For all the latest entertainment News Click Here