সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে সাদা কাগজে সই করানোর অভিযোগ মাদক মামলার আরও এক সাক্ষীর!
সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছেন এনসিবির জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে, গত রবিবার এমনই অভিযোগ তুলেছিলেন আরিয়ান খান মাদক মামলার এক নিরপেক্ষ সাক্ষী। নিজের বয়ান থেকে সরে দাঁড়ান প্রভাকর সেইল নামে ওই সাক্ষী। ফের এনসিবি কর্তার বিরুদ্ধে বেসুরো মাদক মামলার অপর এক সাক্ষী। শেখর কাম্বলে নামে অপর এক মাদক-কাণ্ডের সাক্ষী সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে সাদা কাগজে সই করিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুললেন। শেখর কাম্বলের অভিযোগ তাঁর স্বাক্ষর করা কাগজ চলতি বছর অগস্ট মাসে পঞ্চনামা তৈরিতে ব্যবহার করেছে এনসিবি।
গত ২৬শে অগস্ট সেই মাদক মামলা রেজিস্টার করা হয়েছিল, এনসিবি আধিকারিকরা খারঘার এলাকায় রেইড করে এক নাইজেরিয়কে গ্রেফতার করে। সেই নাইজেরিয়ানের কাছ থেকে ৫৫ গ্রাম মেফেড্রোন (কমার্শিয়্যাল কোয়ান্টিটি) উদ্ধার হওয়ার কথা জানায় কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা, মিলেছিল গাঁজাও।
নভি মুম্বইয়ের বাসিন্দা কাম্বলে জানান, রেইডের সময় উপস্থিত ছিলেন তিনি। একজন নাইজেরিয়ান পালিয়ে যায়, অপরজনকে গ্রেফতার করে এনসিবি। তবে তাঁর কাছ থেকে কোনওরকম মাদক উদ্ধার হয়েছিল কিনা সে সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানেন না কাম্বলে। তিনি যোগ করেন, ‘তিনদিন পর এনসিবি আধিকারিক অনিল মানে আমাকে ফোন করে এনসিবি সাউথ মুম্বইয়ের অফিসে পৌঁছাতে বলেন। এরপর আমাকে দিয়ে ১০টি সাদা পাতায়সই করানো হয়, যা পরবর্তীতে পঞ্চনামায় ব্যবহার করা হয়েছে’।
শেখর কাম্বলে আচমকা কেন এই অভিযোগ তুলছেন? তাঁর সাফাই, সংবাদমাধ্যমে তিনি এক অজ্ঞাতপরিচয়ের চিঠির খবর দেখেছেন। যে চিঠি মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে ও এনসিপি নেতা নবাব মালিককে পাঠানো হয়েছে খারঘর মাদক মামলা নিয়ে। এরপরই ভয় পেয়ে যান তিনি। কাম্বলে যোগ করেন, মঙ্গলবার রাতে এনসিবি অফিসার অনিল মানে ফের তাঁকে ফোন করেন, এবং খারঘর মামলা নিয়ে কাউকে কিছু না বলতে অনুরোধ করেন। এনসিবি অফিসার আশিস রঞ্জন এই মামলার তদন্ত করছেন।
এরপরই ভয় পেয়ে কোপার খাইরানে থানায় (নভি মুম্বই) আবেদন জানান শেখর কাম্বলে, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তিনি। পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছেন এনসিবির এই সাক্ষী।
আরিয়ান খান মাদক মামলার তদন্তকারী অফিসার সমীর ওয়াংখেড়েকে নিয়ে আলোচনা থামছে না। অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের সংখ্যা লঘু উন্নয়ন মন্ত্রী নবাব মালিক এনসিবি মুম্বইয়ের জোনাল ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনেই চলেছেন। গত মঙ্গলবার মালিক দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সংস্থারই একজন কর্মচারী একটি চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন যে সমীর কীভাবে ২৬টি ভুয়ো মাদকের মামলায় নির্দোষ লোককে ফাঁসিয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে তাদের ফাঁসাতে মানুষের ফোন ট্যাপ করার জন্য দুই জন লোককে নিযুক্ত করেছিলেন সমীর।
আরিয়ান মামলার বেসুরো সাক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্স তদন্ত শুরু করেছে এজেন্সি। কিন্তু উপযুক্ত কোনও প্রমাণ না পাওয়া পর্যন্ত কেবল সাক্ষীর মুখের কথায় কড়া কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তাও স্পষ্ট এনসিবির কথায়। আরিয়ান মামলার অফিসার ইনচার্জ থাকবেন সমীর ওয়াংখেড়েই।
নবাব মালিকের অভিযোগ প্রসঙ্গে সমীর ওয়াংখেড়ে আগেই জানিয়েছেন ব্যক্তিগত রোষ থেকে তাঁর উপর এমন আক্রমণ শাণাচ্ছেন মন্ত্রী মশাই। উল্লেখ্য, চলতি বছর জানুয়ারি মাসে এক মাদক কাণ্ডে নবাব মালিকের জামাই-কে গ্রেফতার করেছিলেন সমীর ওয়াংখেড়ে।
For all the latest entertainment News Click Here