‘সত্যিটা সবচেয়ে বিপজ্জনক’, নাদাভ লাপিডের বিতর্কিত মন্তব্যের পর টুইট বিবেকের
গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের শেষ দিনে বিতর্কিত মন্তব্য ইজরায়েলের পরিচালক এবং উৎসবের জুরি নাদাভ লাপিডের। ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবি নিয়ে তাঁর মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত। বিবেক আগ্নিহোত্রী পরিচালিত এই ছবিকে নাদাভ ‘অশ্লীল’ এবং ‘প্রোপাগান্ডা’ ছবি বলে মন্তব্য করেছেন।
যদিও কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরার পুরস্কার জয়ী খ্যাতনামা ইজরায়েলি পরিচালক নাদাভ লাপিডের এই মন্তব্যের সরাসরি কোনও জবাব দেননি বিবেক। তবে মঙ্গলবার ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ পরিচালক নেটমাধ্যমের পাতায় একটি রহস্যে মোড়া পোস্ট করেছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘সত্যিটা সবচেয়ে বিপজ্জনক জিনিস’ কারণ এটি ‘মানুষকে মিথ্যে বলতে’ পারে।
আরও পড়ুন: আরবাজকে কবে বিয়ে করছেন? সম্পর্ক নিয়ে কী বলছেন ২০ বছরের ছোট জর্জিয়া
ইজরায়েলি পরিচালক নাদাভ লাপিডে IFFI ২০২২-এর সমাপতনী উৎসবে এসে মন্তব্য করেছেন, ‘আমরা সাতটি ছবি দেখেছি ডেবিউ কম্পিটিশনে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে ১৫টি ছবি দেখেছি— যা এই ফেস্টিভ্যালের মূল আকর্ষণ। ১৫টির মধ্যে ১৪টি ছবির মধ্যে সিনেম্যাটিক কোয়ালিটি ছিল, ত্রুটিও ছিল এবং তা নিয়ে একটা গঠনমূলক আলোচনাও হয়েছে’।
তবে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ছবি নিয়ে পরিচালক বলেছেন, ‘আমরা প্রত্যেকে খুব অস্বস্তিবোধ করেছি, হতবাক হয়েছি ১৫ নম্বর ছবি ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ দেখে। এমন ঐতিহ্যশালী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে শৈল্পিক ভাবনায় আসল, সেখানে এই ধরনের ছবির কোনও স্থান নেই। আমি সকলের সামনেই এই কথাটা ভাগ করে নিচ্ছি এবং তাতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছি। এই ছবি একটি ‘অশ্লীল’, ‘একপেশে’ ছবি। আমার মন হয় শিল্পের স্বার্থে গঠনমূলক সমালোচনাকে গ্রাহ্য করাটাই আসল স্পিরিট।’
কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী এল মুরুগানের উপস্থিতিতেই ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে তোপ দাগেন ইফির জুরি চেয়ারম্যান।
ইজরায়েলি পরিচালক জুরির এই মন্তব্য ঘিরে এখন ফের চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের স্বভূমিচ্যুত হওয়ার করুণ কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে এই ছবিতে। জঙ্গি অধ্যুষিত কাশ্মীর বা পাক-হামলায় পর্যুদস্ত কাশ্মীরের যে ছবি বারবার বলিউডের ছবিতে উঠে এসেছে তার চেয়ে একদম আলাদা অনুপম খের-মিঠুন অভিনীত এই ছবি। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর ঘটা অমানুষিক নির্যাতন এবং গণহত্যাকে তুলে ধরেছেন পরিচালক।
‘ধর্ম পরিবর্তন করো, নয়তো মরো’- এই স্লোগান দিয়ে শুরু হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী এই ছবি, শেষ হয় ভারতীয় সেনার ছদ্মবেশে জঙ্গিদের গণহত্যা দিয়ে। বক্স অফিসে বিরাট সাফল্য হাঁকানো এই ছবি ‘সম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক’, ‘ইসলামোফোবিক’- এমন অভিযোগ আগেও উঠেছে। বিপুল ঘৃণা এবং প্রতিহিংসাপরায়ণতায় সুড়সুড়ি দেয় এই ছবি এমন অভিযোগ সত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষণা পেয়েছে এই ছবি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ছবিটিকে করমুক্ত বলে ঘোষণা করেছিল। জুরি বোর্ডের শীর্ষে থাকা ইজরায়েলি পরিচালকের এই মন্তব্য রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে।
For all the latest entertainment News Click Here