শেষ ওভারের চরম নাটক,প্রতি বলে বদলাল ম্যাচের রং,শেষ বলে জয়ের হাসি লখনউয়ের- ভিডিয়ো
একেবারে রোমহর্ষক ম্যাচ। প্রতি মুহূর্তে দোলাচল। শেষ ওভারের চূড়ান্ত নাটক। ২ উইকেট পড়ে। শেষ পর্যন্ত শেষ বলে গিয়ে ১ উইকেটে জয় পায় লখনউ সুপার জায়ান্টস। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ঘরের মাঠে বিরাট কোহলিদের হারিয়ে দাপটের সঙ্গে মাঠ ছাড়েন নিকোলাস পুরানরা।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৫ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। বোলার ছিলেন হার্ষাল প্যাটেল। ওভারের প্রথম বলে ১ রান নেন জয়দেব উনাদকাট। পরের বলেই মার্ক উড বোল্ড হয়ে যান। তৃতীয় বলে রবি বিষ্ণোই স্ট্রাইকে এসেই ২ রান নেন। চতুর্থ বলে সিঙ্গল নেন তিনি। আর তখনই ম্যাচ টাই হয়ে যায়। হারের আর কোনও সম্ভাবনা থাকে না লখনউয়ের। আর ১ রান করলেই জয় আসবে। হাতে ২ বল বাকি। তখন পঞ্চম বলে আউট হয়ে যান উনাদকাট। ম্যাচ একেবারে জমে দই।
আরও পড়ুন: শেষ ওভারে পড়ল ২ উইকেট,শেষ বল পর্যন্ত গড়াল উৎকন্ঠা,রোমহর্ষক জয় লখনউয়ের
শেষ বলে লখনউয়ের প্রয়োজন আর ১ রান। হাতে ছিল ১ উইকেট। গোটা চিন্নাস্বামী জুড়ে তখন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি। টিভির সামনে যাঁরা বসেছিলেন, তাঁদেরও উত্তেজনার পারদ তখন আকাশছোঁয়া। আবেশ খানকে বল করতে গিয়ে নন স্ট্রাইকিং এন্ডে রবি বিষ্ণোইকে রানআউট করেন হার্ষাল। তবে সফল হননি। আম্পায়ার ডেড বল ঘোষণা করেন। এখানেই শেষ নয়। এর পরেও ছিল চূড়ান্ত নাটক। শেষ বলে আবেশ খান ব্যাটে ঠেকাতে ব্যর্থ হন। কিন্তু উইকেটের পিছনে সঠিক ভাবে বল সংগ্রহ করতে পারেননি দীনেশ কার্তিক। দৌড়ে ১ রান নিয়ে নেন আবেশ এবং রবি। জয়ের পর উত্তেজনায় মাঠে হেলমেট ছুঁড়ে ফেলে দেন আবেশ। ১ উইকেটে ম্যাচ জিতে শেষ হাসি হাসে রাহুলের টিম। উত্তেজনায় পাগলপাড়া হয় লখনউ সুপার জায়ান্টস।
আরসিবি ২১২ রান করেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুরন্ত করেন দুই ওপেনার- বিরাট কোহলি এবং ফ্যাফ ডু’প্লেসি। তবে দু’জনেই শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিলেন না। আরসিবি অধিনায়ক শুরুতে উইকেটের এক দিক আগলে রেখেছিলেন। কারণ তখন শুরুতে লখনউ বোলারদের ছাতু করছিলেন কোহলি। ৪৪ বলে ৬১ রানের ইনিংসে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক মারলেন ৪টি করে চার এবং ছয়। অমিত মিশ্রর বলে আউট হওয়ার পর ডু’প্লেসির সঙ্গে জুটি বাঁধেন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
রাহুলদের বিরুদ্ধে প্রথম উইকেটের জুটিতে বেঙ্গালুরু তুলল ৯৬ রান। কোহলি আউট হওয়ার পর আগ্রাসী মেজাজে দেখা গেল ডু’প্লেসিকেও। তত ক্ষণে ১২ ওভার হয়ে যাওয়ায় এবং হাতে উইকেট থাকায় দলের রান দ্রুত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করেন ম্যাক্সওয়েলও। শেষ পাঁচ ওভারে কার্যত রানের বন্যা বইয়ে দেন দু’জনে। তাঁদের দ্বিতীয় উইকেটের জুটিতে উঠল ১১৫ রান। বেঙ্গালুরু অধিনায়ক শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন ৪৬ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে। তাঁর ব্যাট থেকে এল ৫টি করে চার এবং ছয়। অজি অলরাউন্ডারের করেন ২৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংস। মারলেন ৩টি চার এবং ৬টি ছয়।
আরও পড়ুন: IPL-এ কোহলির ঐতিহাসিক রেকর্ড ভাঙতে পারেন একমাত্র শুভমনই- বড় দাবি রবি শাস্ত্রীর
জয়ের জন্য ২১৩ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় লখনউ। মাত্র ২৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যান রাহুলরা। তাও জয় এল মার্কাস স্টোইনিস এবং নিকোলাস পুরানের অনবদ্য ইনিংসের সুবাদে। শুরুতে ৪ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল লখনউ। তার পর দলের হাল ধরেন মার্কাস স্টোইনিস। তিনি ৩০ বলে ৬৫ করেন। এর পর মূলত দলের জয়ের রাস্তা মসৃণ করেন নিকোলাস পুরান। স্টোইনিস আউট হতে পুরান ক্রিজে নেমেই ঝড় তোলেন। ১৫ বলে করেন হাফসেঞ্চুরি। তাঁর করা ১৯ বলে ৬২ রান লখনউয়ের কাছে অক্সিজেন হয়ে যায়। এ ছাড়া সাতে নেমে আয়ুশ বাদোনি পুরানকে যোগ্য সঙ্গত করেন। কিন্তু তিনিও ১৯তম ওভারে হিট উইকেট হয়ে আউট হন। কিন্তু তার পরে শেষ ওভারে আরও ২ উইকেট তুলে নেয় হার্ষাল। শেষ বল পর্যন্ত গড়ায় ম্যাচ। শেষ বলে ১ রান নিয়ে আবেশ খান দলের জয় নিশ্চিত করেন। আরসিবি-র হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন সিরাজ এবং পার্নেল। ২ উইকেট নিয়েছেন হার্ষাল। তবে রোমহর্ষক ম্যাচ জিতে বাজিমাত করেছে লখনউ।
For all the latest Sports News Click Here