শুধু যশ চোপড়া ঘরণী নয়, কর্মময় পামেলার জীবন! বলিউডে তাঁর অবদান ভোলার নয়
নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে, শেষরক্ষা হল না। চলে গেলে রানি মুখোপাধ্যায়ের শাশুড়িমা পামেলা চোপড়া। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বলিউডে তাঁর পরিচয় মূলত যশ চোপড়ার স্ত্রী হিসাবে, কিন্তু হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও পামেলা চোপড়ার অবদান কম নয়। প্লেব্যাক গায়িকা ছিলেন তিনি। স্বামীর বহু ছবিতে গান গেয়েছেন পামেলা, এছাড়াও স্ক্রিনরাইটারের ভূমিকাও পালন করেছেন সাফল্য়ের সঙ্গে। দুই ছেলে আদিত্য ও উদয়কে মানুষ করবার পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে স্বামীর পাশে দাঁড়িয়েছেন সবসময়।
যশ চোপড়ার ছবিতে নারী চরিত্র সর্বদা বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। পরিচিতদের কথায়, যশ চোপড়া সৃষ্ট সকল নারী চরিত্রদের অনুপ্রেরণা ছিলেন পামেলা। তাঁর মৃত্য়ুতে শোকের ছায়া বলিউডে, মাতৃহারা আদিত্য-উদয় ভেঙে পড়েছেন। শোকস্তব্ধ রানিও। এদিন ‘যশরাজ ফিল্মস’ প্রযোজনার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেলা ১১টা নাগাদ শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে প্রয়াত পামেলা চোপড়ার। তাঁর মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় উপচে পড়ছে শোকবার্তা। অভিনেতা অনুপম খের তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তের কথা স্মরণ করে নেন, অন্যদিকে সঞ্জয় দত্ত, অজয় দেবগণরা কথা বললেন ইন্ডাস্ট্রিতে পামেলা চোপড়ার অবদান নিয়ে।
প্রয়াত যশ চোপড়া ঘরণীর একটি সাদাকালো ছবি শেয়ার করে অনুপম খের লেখেন, ‘আস্তে আস্তে বন্ধুরা এক এক করে চলে যাচ্ছে!! বিদায় প্যাম চোপড়া!! যশজি আর আপনি আমার মুম্বই জীবনের অত্যন্ত জরুরি এবং অবিচ্ছেদ্য অংশ! আপনার হাসিটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা উপহার বলেই আমি মনে করি। আমি সৌভাগ্যবান যে আপনার সঙ্গে অনেক সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছে। ওম শান্তি’।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেই বড় হয়েছেন সঞ্জয়। ছোট থেকেই পেয়েছেন পামেলা চোপড়ার সান্নিধ্য। তিনি লেখেন, ‘আমার হৃদয়টা বড্ড ভারী হয়ে গেল পামেলা আন্টির মৃত্যুর খবর শুনে। ইন্ডাস্ট্রিতে ওঁনার অবদান অবিস্মরণীয়, অনেক মানুষের জীবন ছুঁয়েছেন উনি, সেটা কেউ ভুলবে না’।
অজয় দেবগণ টুইট করেন, ‘আদি, রানি আর উদয়কে জানাই সমবেদনা, চোপড়া পরিবারের জন্য খুবই দুঃখজনক একটা মুহূর্ত। প্যাম চোপড়া জি-কে শ্রদ্ধার্ঘ্য। ওম শান্তি’।
পামেলার জীবন ছিল কর্মময়। স্বামী যশ চোপড়ার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন পামেলা চোপড়া। দাদার প্রযোজনা সংস্থা বিআর চোপড়া ফিল্মস ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে যশ চোপড়ার পাশে ছিলেন তিনি। তিলে তিলে ‘যশরাজ ফিল্মস’ গড়ে তুলেছিলেন দুজনে মিলে। ‘যশরাজ ফিল্মস’-এর ছবির চিত্রনাট্য লেখার কাজ থেকে পোশাক পরিকল্পনা, সবকিছুর তদারকিতে থাকলেন প্যাম। বহু ছবির সহ-প্রযোজকের ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি। অনেকেই জানে না, ‘কভি কভি’ (১৯৭৬) ছবির কাহিনি পামেলা চোপড়ার লেখা, শাহরুখ-মাধুরীর ‘দিল তো পাগল হ্যায়’-এর চিত্রনাট্যও আদিত্য চোপড়ার সঙ্গে লিখেছিলেন পামেলা।
এই বছরই নেটফ্লিক্সের তথ্যচিত্র ‘দ্য রোম্যান্টিকস্’-এ দেখা মিলেছিল তাঁর। যশ চোপড়ার ফিল্মমেকিং-এর খুঁটিনাটি নিয়ে কত অজানা তথ্য সামনে এনেছেন তিনি। এদিন যশ রাজ ফিল্মসের তরফে জানানো হয়, গত ১৫ দিন ধরে মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন পামেলা চোপড়া। পরিস্থিতি বিগড়ালে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় তাঁকে। তবে শেষরক্ষা হয়নি, বৃহস্পতিবার সকালে চলে গেলেন পামেলা চোপড়া।
For all the latest entertainment News Click Here