শাশ্বতর ছবিতে অভিনয়,পরিচালককে ‘ধোকা’! টলিপাড়ার সঙ্গে ‘রঙিন’ সম্পর্ক হৈমন্তীর
পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে গত ৪৮ ঘন্টায় ট্রেন্ডিং নাম হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়। টলিউডের যে স্ট্রাগলার অভিনেত্রীকে দু-দিন আগেও কেউ চিনতেন না নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নাম জড়ানোর পর সকলের মুখে ফিরছে তাঁর নাম। নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ দাবি করেছেন এই ব্যাপারে সবটা জানেন হৈমন্তী। গোপাল দলপতির দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তী, এমনটাই দাবি করেছেন কুন্তল। এই মুহূর্তে CBI-ED স্ক্যানারে হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়।
হৈমন্তীর বাড়ি থেকে মিলেছে ‘অচেনা উত্তম’ ছবির চিত্রনাট্য। এরপরই খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অতনু বসু পরিচালিত এই ছবিতে বাস্তবেই অভিনয় করেছেন হৈমন্তী। কেমনভাবে শাশ্বত-ঋতুপর্ণা-দিতিপ্রিয়া অভিনীত ছবিতে কাজের সুযোগ পেলেন এই রহস্যময়ী?
সংবাদমাধ্যমকে পরিচালক জানান, ‘আমার বাড়ির কাঠের মিস্ত্রি অনেক দিন ধরেই আমায় বলছিল যে এক জন আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। কিন্তু যে হেতু আমার ছবিটি তখন স্থগিত ছিল তাই আমি কিছুটা এড়িয়েই যাচ্ছিলাম। পরে আমায় অনেক অনুরোধ করায় ওকে দেখা করতে বলি’। অতনু বসু জানান, এই ছবিতে বিরাট কাস্ট, একাধিক জুনিয়র আর্টিস্টের দরকার ছিল। একটি নার্সের চরিত্রের জন্য শেষমেশ বাছা হয়েছিল হৈমন্তীকে। তিন-চারটি দৃশ্য ছিল। পারিশ্রমিক ছিল মাত্র আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু শ্যুটিং সারতে না সারতেই পরিচালকের বিরাগভাজন হন হৈমন্তী। কেন তাঁর উপর আস্থা হারিয়েছিলেন অতনু?
পরিচালক জানান, ‘একদিন কাজ করতে না করতেই প্রযোজকের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টা করে ও। প্রযোজকের সঙ্গে পার্ক স্ট্রিটের এক হোটেলে দেখা করে এবং পরবর্তী ছবির পরিচালক হিসাবে অন্য একজনের নাম প্রস্তাব দেয়।’ খানিক আক্ষেপের সুরেই অতনু বসু বলেন, ‘আমি যে মেয়েটিকে কাজের সুযোগ করে দিলাম, তাঁর মধ্যে বিন্দুমাত্র পেশাদারিত্ব ছিল না। আমাকে না জানিয়ে আমার ছবি প্রযোজকের কাছে এক অন্য পরিচালকের হয়ে দরবার করতে চলে গেল। এটা আমার কাছে অত্যন্ত নিম্ন রুচির পরিচয় বলে মনে হয়েছিল’।
এমনিতেও অভিনেত্রী হিসাবেও সাবলীল ছিলেন না হৈমন্তী, যোগ করেন পরিচালক। তাই যতটা সম্ভব তাঁর দৃশ্য ছবি থেকে ছেঁটে দেন তিনি, এমনকি ডাবিং-এর জন্যও পরবর্তীতে হৈমন্তীকে আর ডাকা হয়নি। অন্যজনকে দিয়েই ওই দৃশ্যের ডাবিং করানো হয়। হৈমন্তীর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই তাঁর, জানান পরিচালক।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘জাল’ ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন হৈমন্তী। সেই ছবির পরিচালক শ্যামল বসু জানান, হৈমন্তীর এক পরিচিত এই ছবিতে টাকা ঢেলেছিল। সেই সূত্রেই হৈমন্তী কাজের সুযোগ পায়। জানা যায়, ওই ইনভেস্টারের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক ছিল এই রহস্যময়ীর। আরও দু-একটি স্বল্প বাজেটের ছবিতে কাজ করেছেন হৈমন্তী। তবে এরপর আমচকাই গায়েব হয়ে যান। গত দু-বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কারুর সঙ্গেই তেমন যোগাযোগ ছিল না হৈমন্তীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টলিউডের এক ব্যক্তি জানান, চটকদার চেহারা ছাড়া ক্যামেরার সামনে আসবার কোনও গুণই ছিল না হৈমন্তীর, অগত্যা সুপারিশই ভরসা ছিল। প্রযোজক হাতানো ছাড়া অন্য উপায় ছিল না হৈমন্তীর, তেমনই বলছে পরিচিতরা। কুন্তলের দাবি নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা ঢুকেছে হৈমন্তী ও আরমান (ওরফে গোপাল দলপতি)-এর যৌথ অ্যাকাউন্টে। এই রহস্যময়ীকে ঘিরে দানা বাঁধছে হাজারো প্রশ্ন, যা নিয়োগ দুর্নীতি মামলার মোড় ঘোরানোর জন্য যথেষ্ট বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
For all the latest entertainment News Click Here