লেখা পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন বুদ্ধদেব; দিতে চেয়েছিলেন কলম, তবু কেন আক্ষেপ শ্রীজাতর?
রবিবার রাতেই মৃত্যু হয়েছে সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্য জগতে। দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকা তাঁর অগণিত পাঠকদের মন আজ ভালো নেই এই মর্মান্তিক খবর পেয়ে। বুদ্ধদেব গুহর একনিষ্ঠ পাঠকের তালিকায় আছেন কবি শ্রীজাত। আজ তাঁর অবস্থাও আর বাকি পাঁচজন বাংলা সাহিত্যপ্রেমীর মতোই।
এ প্রসঙ্গে TV9 বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের দুঃখ ও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন নয়া প্রজন্মের এই জনপ্রিয় কবি। শ্রীজাত জানিয়েছেন ছোট থেকেই তাঁর সঙ্গে বুদ্ধদেবের পরিচয় হয়েছিল ওঁর বিভিন্ন লেখা গল্প-উপন্যাস পড়ার দৌলতে। তাঁর মধ্যে দিয়েই আমাদের জঙ্গলকে চেনা, সাহসকে চেনা, বেপরোয়াপনাকে চেনা। বরাবরই তাঁকে দূর থেকে দেখে এসেছি। কাছে যাওয়ার সাহস কুলিয়ে উঠতে পারিনি সেভাবে কোনওদিনই। তবে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওঁর সঙ্গে দেখা কৰাৰ সুযোগ পেয়েছি। সামান্য কথা বলারও সুযোগ পেয়েছিলাম। গিয়ে প্রণাম করেছি। খুবই স্নেহভরে কথা বলেছেন। এর থেকে বড় প্রাপ্তি কী হতে পারে?’
কথায় কথায় আরও জানা গেল শ্রীজাতর লেখা পড়েছিলেন বুদ্ধদেব। সসঙ্কোচে কবি জানালেন তাঁর লেখা যে বুদ্ধদেবের এর মতো এত জাঁদরেল সাহিত্যিক সময় করে পড়বেন তা তিনি আশাও করেননি। অথচ তাই হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই লেখা ‘ঋজুদা’-র স্রষ্টার ভালোও লেগেছিল। তাই তো শ্রীজাতকে তিনি বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সঙ্গে ভরাট গলায় বলে উঠেছিলেন ‘তোমার লেখা তো পড়ছি, আমার বাড়িতে এসো, তোমাকে একটা ভাল কলম দেব’।’
তবে সেই কলম শ্রীজাত পাননি। তার কারণও আছে। কবি জানালেন এরকম বড় মাপের মানুষের কাছে যেতে তাঁর বরাবরই দ্বিধা, সংকোচ, সম্ভ্রম কাজ করে, যে ওঁর বাড়ি আর যাওয়া হয়নি। ‘হলে হয়তো কলমটা উপহার পেতাম। উনি যে আমাকে এই কথাটা বলেছিলেন, এটাই আমার কাছে অনেক দামি’। তবে বুদ্ধবাবুর বাড়ি না যাওয়ার আফসোস আজও যায়নি শ্রীজাতর। নিজের বক্তব্যের শেষে ‘তারাভরা আকাশের নিচে’ উপন্যাসের লেখক বলেন, ‘ বুদ্ধদেববাবুর সম্পূর্ণ মৃত্যু হওয়ার কোনও উপায় নেই। এত লোক ওঁর লেখা পড়েছেন, পাচ্ছেন আর পড়বেন যে উনি থাকবেন আমাদের মধ্যে।ওঁর শরীরের সফর হয়তো থেমে গেল। কিন্তু সাহিত্যের সফর জারি থাকবে।’
For all the latest entertainment News Click Here