লাল-হলুদের বিক্ষোভ ঘিরে ঝামেলা শুরু ২ প্রধানে,বাগান সচিবের বিরুদ্ধে ভয়ানক অভিযোগ
মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্তের নামে গুরুতর অভিযোগ আনলেন ইস্টবেঙ্গলের কর্তারা। বৃহস্পতিবার লাল-হলুদের বিক্ষোভের জেরেই কাঠগড়ায় পড়শি ক্লাবের সচিব।আসলে এ দিন বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বোর্ড মিটিং ছিল ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের। কিন্তু মিটিং শুরুর আগেই বেশ কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থক ইমামি হাউজের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
সেই বিক্ষোভকারীদের স্লোগান ছিল ‘এটিকের মতো দল গড়ে দিতে হবে’। যবে থেকে লাল-হলুদ আইএসএল খেলছে, তবে থেকেই তারা চূড়ান্ত হতাশাজনক পারফরম্যান্স করছে। বিনিয়োগকারী জোগাড় করে একেবারে শেষ মুহূর্তে দল গড়তে গিয়েই যত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। বিক্ষোভকারীদের তাই দাবি ছিল, ‘এটিকের মতো শক্তিশালী দল না গড়লে, আইএসএল খেলছি না, খেলব না।’ অনেকের হাতে পোস্টারও ছিল এই স্লোগানের। যা নিয়ে সোশ্য়াল মিডিয়াতেও হইচই হয়।
তবে লাল-হলুদ সমর্থকেরা হঠাৎ করে কেন চিরপ্রতিদ্বন্ধী এটিকে মোহনবাগানের উদাহরণ টেনে স্লোগান দিলেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
ইমামি হাউজের সামনে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা যে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, সেই ভিডিয়ো নাকি মোহনবাগান সচিব দেবাশিস দত্ত পাঠান ইমামি ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম ডিরেক্টর আদিত্য আগারওয়ালকে। শুধু তাই নয়, তিনি নাকি আদিত্য় আগরওয়ালকে ছবি, ভিডিয়ো সহ লিখেছেন, বিক্ষোভকারীরা ‘নীতু-বাহিনীর’। আর এর পরেই যেন আগুনে ঘি পড়েছে।
আরও পড়ুন: পেনাল্টি সেভ করে হিরো লাল-হলুদের আদিত্য, কিয়ানদের মোহনবাগানকে রুখে দিল ইস্টবেঙ্গল
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বাগান সচিবের কুরুচিকর আচরণের অভিযোগ এনেছেন লাল-হলুদ কর্তারা। সেই সঙ্গে তারা ক্রীড়ামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে ইস্টবেঙ্গলের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য় রজত গুহ বলেন, ‘কিছু সমর্থক, ইস্টবেঙ্গলের ভালো টিম গড়ার দাবিতে সোচ্চার ছিল। এই সোচ্চারের ছবি আমাদের চেয়ারম্য়ান আদিত্য় আগরওয়ালকে পাঠিয়ে মোহনবাগান সচিব বলেন যে, এই জমায়েতটা পুরো নীতু-বাহিনীর, এটা কোনও ইস্টবেঙ্গল সভ্য সমর্থকের নয়। এই কুরুচিকর কার্যকলাপ এবং অখেলোয়াড়চিত মনোভাবের জন্য় চারিদিকে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। ময়দানের সুস্থ পরিবেশ পুরোপুরি নষ্ট করছে। সংবাদমাধ্যম এবং মোহনবাগান সমর্থকদের প্রতিও আবেদন করছি, এই বিশৃঙ্খলা যেন তৈরি না হয়।’
বিষয়টি ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে জানানোর কথাও সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। রজত গুহ বলেন, ‘ক্রীড়ামন্ত্রী তিনটে ক্লাবেরই পৃষ্ঠপোষক। ময়দান যাতে এই ধরনের পরিবেশে কলুষিত না হয়, আমরা তাঁকেও এই বিষয়টি জানিয়ে রাখব। ময়দানে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানাই।’ এ দিন দুপুরের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়, সদানন্দ মুখোপাধ্যায়, দীপঙ্কর চক্রবর্তী, রজত গুহ এবং ডাঃ শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত।
আরও পড়ুন: এএফসি এশিয়ান কাপে শেষ বার দেশের হয়ে খেলবেন সুনীল- দাবি জাতীয় দলের কোচ স্টিমাচের
তাঁর বিরুদ্ধে করা এই অভিযোগ মানতে নারাজ মোহনবাগানের সচিব। দেবাশিস দত্ত বলেছেন, ‘আমার কাছে সেই বিক্ষোভের কোনও ভিডিয়োই নেই। ফেসবুকে ছবি দেখেছিলাম। এটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, আমার মন্তব্য করা ঠিক নয়। তবে কে কার বাহিনী আমি জানব কী করে! ওরা কী বলেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে কোনও উত্তর দিতে চাই না। মোহনবাগান চেষ্টা করবে সাফল্য ধরে রাখার। ইস্টবেঙ্গল চেষ্টা করুক সাফল্য পাওয়ার। অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা করা উচিত কাজ নয়। আমি চাইব, আগামী বছর আইএসএল ফাইনাল যেন মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে হয়। কোয়েস, শ্রী সিমেন্ট, ইমামি বড় কর্পোরেট। আমি একটা মেসেজ পাঠালাম, তাতেই মেনে নিল? গত বছর আমাদের বলা হয়েছিল আমরা নাকি ওদের ভাঙাচ্ছি আমাদের ক্লাবে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে গাঁটছড়া ভাঙার পরও আমরা ওদের ইনভেস্টরকে নেওয়ার চেষ্টা করিনি। ব্যক্তিগত সম্পর্ক কারও সঙ্গে থাকতেই পারে, কিন্তু তার মানে এই নয়। আমি ইস্টবেঙ্গলের শুভাকাঙ্ক্ষী। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল একে অপরের পরিপূরক। আমরা নিজেরা বেঁচে থাকার জন্য ওদের সাফল্য কামনা করব।’
ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে উত্তর দিতে তৈরি বাগান সচিব। এই প্রসঙ্গে দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘ক্রীড়ামন্ত্রী আমাদের সবার অভিভাবক। এই বিষয়ে কথা হলে আমি উত্তর দেব।’
For all the latest Sports News Click Here