‘লড়াই শুরু হয়..’ বাণিজ্যিক ছবি ছাড়ার সিদ্ধান্ত কতটা কঠিন ছিল প্রসেনজিতের জন্য
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এখন হামেশাই চর্চায় থাকেন। জুবিলি সিরিজে তাঁর অভিনয় আরও একবার তাঁকে জাতীয় স্তরে চর্চার মধ্যে নিয়ে এসেছে। বাংলা ছবির প্রতিনিধি হয়ে এখন টলিউডের সঙ্গে বলিউডে পাল্লা দিয়ে একই ভাবে কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি নানা বিষয়ে নিজের মতামত জানালেন।
মাত্র ৬ বছর বয়স অভিনয় জগতে পা রাখেন অভিনেতা। সেটা হিসেব করে দেখতে গেলে তিনি ইতিমধ্যেই ক্যামেরার সামনে প্রায় ৫০ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন। কেমন লাগে পর্দায় নিজেকে দেখতে বা শুটিং করতে? উত্তরে অভিনেতা জানান, ‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক বছর হয়ে গেল। কিন্তু যখন প্রথম ছবি করি তখন আমার মাত্র ৬ বছর বয়স হবে হয়তো। তখন আমি অত বুঝতাম না। সবাই আমায় বলতো এটা শুটিং শুটিং খেলা। খেলতে খেলতে অভিনয় করে ফেলতাম। আমি আমার জীবনের অর্ধেকটাই এখানে কাটালাম। এখন এমন হয়েছে আমি ওই লাইট, স্টুডিও না গেলে নিজেকে কেমন অসুস্থ মনে হতে থাকে।’
জীবনের এতটা সময় এখানে কাটালেন এই জগৎটা নিয়ে কী মনে হয় প্রসেনজিতের? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা আমার পরিবার। ছবির টিম, এই ইন্ডাস্ট্রি আমার কাছে পরিবারের মতো। আর পরিবারে যেমন হয় কখনও অভিমান, কখনও একটু মন কষাকষি, সবই আছে। কিন্তু আমার কাছে ওগুলো অতটা প্রাধান্য পায় না। কারণ দিনশেষে আমরা সবাই শিল্পী। আর শিল্পীরা সবাই একটু ইমোশনাল হয়।’
এতটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কতটা বদল এসেছে? নিজের মধ্যে কীভাবে এই বদলগুলো কী করে এনেছিলেন তিনি? এই বিষয়ে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমি যখন কাজে আসি, আমায় স্টিরিওটাইপ করে দেওয়া হতো এই জায়গাটা অভিনয় করতে হবে, এটা নাচ করতে হবে। আবার পরিবারের জন্য লড়াইও দেখাতে হবে। কিন্তু এরপর যখন আমি আবার অটোগ্রাফ, বাইশে শ্রাবণ এর মতো ছবি করতে শুরু করি তখন কিন্তু আমার সঙ্গে সঙ্গে দর্শকরাও বদলে গিয়েছিল। এই নতুন যুগের দর্শকরা তখন আন্তর্জাতিক শিল্পীদের কাজ দেখছে। ফলে একদিকে যখন আমি ছবির ধরন বদলাচ্ছি তখন অন্যদিকে দর্শকও পাল্টাচ্ছে। কিন্তু আমি আবার রোম্যান্টিক ছবিও করেছি এর মধ্যে। আর সেই ছবি, মানে প্রাক্তন কিন্তু আবার হিট করেছিল। আমি আর ঋতুপর্ণা তো দেখতে দেখতে ৫০ তম ছবি করতে চলেছি সামনে। আর সেটা তো সেরা হতেই হবে। এছাড়া আমি রচনা, শতাব্দীর সঙ্গে ২০-২৫টা করে ছবি তো করেছি।’
যখন মূলধারার বাণিজ্যিক ছবি করা ছেড়েছিলেন তখন কী মনে হয়েছিল? উত্তরে প্রসেনজিৎ বলেন, ‘আমি যখন প্রথম সিদ্ধান্ত নিই যে আমি আর হার্ডকোর কোনও বাণিজ্যিক ছবি করব না, তখন প্রথমে আমায় নিজের সঙ্গে নিজের লড়াই করতে হয়েছিল। কারণ আমি জানতাম আগে কোন ছবিতে কোথায় আমি হাততালি পাব, কোথায় সিটি আসবে, কোথায় লোক টাকা ছুঁড়বে। কিন্তু এতে সেটা হবে না। ফলে সেখান থেকে আমার লড়াই শুরু হয়। কিন্তু আমি যখন বাইশে শ্রাবণ পাই, চরিত্রটা করি তখন সেটা আইকনিক চরিত্র হয়ে ওঠে। লোকের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে সংলাপ। একটা নতুন ট্রেন্ড শুরু হল। নতুন দর্শক এল।’
For all the latest entertainment News Click Here