লজ্জাজনক হারের পরও প্লে-অফে উঠতে পারে KKR! কীভাবে সেটা সম্ভব হবে? রইল পুরো অঙ্ক
অঙ্কের ক্ষেত্রে পারমুটেশন-কম্বিনেশন ঝালিয়ে নেওয়ার বেশি সুযোগ হচ্ছে না? তাহলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সমর্থক হয়ে যেতে পারেন। কারণ ২০২২ সালের আইপিএল থেকে নাইটদের যা পারফরম্যান্স, তাতে পারমুটেশন-কম্বিনেশন ঝালিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ মিলছে। ২০২৩ সালের আইপিএলের প্লে-অফে ওঠার ক্ষেত্রেও কেকেআরের ভরসা সেই পারমুটেশন-কম্বিনেশন। বৃহস্পতিবার ইডেন গার্ডেন্সে ৬.৫ ওভার বাকি থাকতে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে নয় উইকেটে হারের পর প্লে-অফের ওঠার ক্ষেত্রে কেকেআরের সেই পারমুটেশন-কম্বিনেশন আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে।
আইপিএলের পয়েন্ট তালিকা
কোন অঙ্কে এবারের আইপিএলের প্লে-অফ উঠতে পারবে কেকেআর?
আইপিএলের প্লে-অফে ওঠার ক্ষেত্রে কেকেআরকে বাকি দুটি ম্যাচে জিততেই হবে (চেন্নাই সুপার কিংস এবং লখনউ সুপার জায়েন্টস)। তাহলে ১৪ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট হবে। তবেই প্লে-অফে ওঠার কোনও সুযোগ থাকবে। একটি ম্যাচ হারলেই মোটামুটি বিদায় নিশ্চিত (কেকেআর ১৪ পয়েন্টে থাকবে ধরে নীচের অঙ্ক কষে দেওয়া হয়েছে)।
১) গুজরাট টাইটানস: ১১ ম্যাচে গুজরাটের ঝুলিতে আছে ১৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ কেকেআরের ধরাছোঁয়ার বাইরে আছেন হার্দিক পান্ডিয়ারা। সেক্ষেত্রে কেকেআর চাইবে যে বাকি তিনটি ম্যাচেই (মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ) জিতে যাক গুজরাট। তাতে নাইটদের কিছুটা সুবিধা হবে।
২) চেন্নাই সুপার কিংস: ধোনিদেরও ছুঁতে পারবে না কেকেআর। ১২ ম্যাচে সিএসকের পয়েন্ট ১৫। চেন্নাইয়ের যে দুটি ম্যাচ বাকি আছে, তার মধ্যে একটি ম্যাচে কেকেআরের বিরুদ্ধে নামবে। ওই লড়াইয়ে তো কেকেআরকে জিততেই হবে। সেই ম্যাচের যখন দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে নামবেন ধোনিরা, তখন চেন্নাইয়ের হয়ে গলা ফাটাবে কেকেআর। কারণ চেন্নাই যদি দিল্লিকে হারিয়ে দেয়, তাহলে প্লে-অফের এক কাঁটা উপড়ে যাবে। তবে দিল্লির নিজেরই হাল খারাপ। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দলকেও অঙ্ক কষতে হচ্ছে।
৩) রাজস্থান রয়্যালস: কেকেআরকে হারানোর পর ১২ ম্যাচে সঞ্জু স্যামসনদের পয়েন্ট ১২। কেকেআরের প্লে-অফে ওঠার পারমুটেশন-কম্বিনেশনে রাজস্থানের বাকি দুটি ম্যাচের গুরুত্ব অত্যন্ত অপরিসীম। কারণ যে দুটি দলের বিরুদ্ধে খেলবে রাজস্থান, সেই দুটি দলও প্লে-অফের লড়াইয়ে আছে। সেই পরিস্থিতিতে কেকেআর চাইবে যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে (আরসিবি) হারিয়ে দিক রাজস্থান। কিন্তু পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে হেরে যাক।
সেক্ষেত্রে রাজস্থানের পয়েন্ট হবে ১৪। আরসিবিরও তাই হবে (বাকি দুটি ম্যাচে জিতলে)। আর তখন নেট রানরেটের নিরিখে পুরো বিষয়টা বিবেচনা করা হবে। আর নেট রানরেটের নিরিখে কেকেআরের থেকে অনেক এগিয়ে আছে রাজস্থান (০.৬৩৩)। সেখানে আরসিবি (-০.৩৪৫) এবং কেকেআরের নেট রানরেট (-০.৩৫৭) মোটামুটি একই জায়গায় আছে। কিছুটা বড় ব্যবধানে জিতলেই আরসিবির নেট রানরেট ছাপিয়ে যাবে কেকেআর।
তবে পঞ্জাবের বিরুদ্ধে রাজস্থান জিতে গেলেও খুব একটা সমস্যা হবে না কেকেআরের। কারণ প্লে-অফের ওঠার জন্য কেকেআরের কাছে একটি জায়গাই পড়ে থাকবে। বাকি ফলগুলি কেকেআরের পক্ষে গেলে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফে উঠে যাবে। রাজস্থান ১৪ পয়েন্টে শেষ করলেও বিশেষ কোনও সুবিধা হবে না কেকেআরের। কারণ তৃতীয় এবং চতুর্থ দলকে সেই ‘এলিমিনেটর’-এ খেলতে হবে।
৪) মুম্বই ইন্ডিয়ান্স: ১১ ম্যাচে রোহিত শর্মাদের পয়েন্ট ১২। আজ যখন গুজরাটের বিরুদ্ধে নামবে মুম্বই, তখন হার্দিকদের হয়ে গলা ফাটাবে কেকেআর। মুম্বইয়ের বাকি দুটি ম্যাচেও (লখনউ সুপার জায়েন্টস এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ) রোহিতদের হার চাইবেন নাইটরা। অর্থাৎ কেকেআর চাইবে যে বাকি তিনটি ম্যাচেই হেরে যাক মুম্বই। সেক্ষেত্রে ১২ পয়েন্ট হয়ে প্লে-অফের লড়াই থেকে ছিটকে যাবে।
৫) লখনউ সুপার জায়েন্টস: ১১ ম্যাচে গৌতম গম্ভীরদের ঝুলিতে আছে ১১ পয়েন্ট। একটি ম্যাচ কেকেআরের বিরুদ্ধে খেলবে লখনউ। সেই ম্যাচে অবশ্যই জিততে হবে কেকেআরকে। যে ম্যাচটি গ্রুপ পর্যায়ে কেকেআর এবং লখনউয়ের শেষ ম্যাচ। তার আগে সানরাইজার্স এবং মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলবেন গম্ভীররা। কেকেআর চাইবে যে সানরাইজার্সের কাছে হেরে যাক লখনউ। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে জিতে যাক। তাহলে ১৪ ম্যাচে লখনউয়ের পয়েন্ট হবে ১৩। তাহলে কেকেআরের নীচে শেষ করবে (কেকেআর ১৪ পয়েন্টে শেষ করবে ধরে)।
আরও পড়ুন: তাবড়-তাবড় বোলারদের মেরে তুবড়ে দিচ্ছেন যশস্বী, পার্টটাইমার দিয়ে আটকাতে চেয়েছিল KKR, সাফাই নীতীশ রানার
৬) রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর: ১১ ম্যাচে আরসিবির পয়েন্ট ১০। কেকেআর চাইবে যে গুজরাট এবং রাজস্থানের কাছে হেরে যাক আরসিবি। আর সানরাইজার্সকে (কারণ সানরাইজার্সের জয়-হারের সঙ্গে কেকেআরের স্বার্থ জড়িয়ে আছে) হারিয়ে দিক। তাহলে ১৪ ম্যাচের শেষে বিরাট কোহলিদের ঝুলিতে থাকবে ১২। অর্থাৎ লিগ তালিকায় কেকেআরের নীচে থাকবে (কেকেআরের ১৪ পয়েন্ট হবে ধরে)।
৭) পঞ্জাব কিংস: ১১ ম্যাচে শিখর ধাওয়ানদের পয়েন্ট ১০। কেকেআর চাইবে যে দিল্লির বিরুদ্ধে পঞ্জাবের যে দুটি ম্যাচ বাকি আছে, দুটি ম্যাচেই হেরে যাক শিখররা। তাহলেই পঞ্জাবের আইপিএল যাত্রা শেষ হয়ে যাবে। রাজস্থান বনাম পঞ্জাব ম্যাচ নিয়ে তুলনায় কম আগ্রহ থাকবে কেকেআরের।
৮) সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: এডেন মার্করামদের প্রতিটি ম্যাচের দিকে নজর থাকবে কেকেআরের। ১০ ম্যাচে তাঁদের পয়েন্ট আট। কেকেআর চাইবে যে লখনউ এবং মুম্বইকে হারিয়ে দিক সানরাইজার্স। গুজরাট এবং ব্যাঙ্গালোরের কাছে হেরে যাক। তাহলে ১৪ ম্যাচে সানরাইজার্সের পয়েন্ট হবে ১২। ছিটকে যাবে প্লে-অফের লড়াই থেকে। আর ভুবনেশ্বর কুমারদের সেই জয়ের পারমুটেশন-কম্বিনেশনের জন্য কেকেআরের প্লে-অফের কাঁটা অন্যান্য দলগুলিও সরে যাবে।
আরও পড়ুন: KKR vs RR: ১৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করা যশস্বী নন, ইডেনে রাজস্থানের জয়ের প্রকৃত নায়ক শূন্য রানে আউট হওয়া বাটলার- ভিডিয়ো
৯) দিল্লি ক্যাপিটালস: খাতায়-কলম দিল্লির সামনেও প্লে-অফে ওঠার সুযোগ আছে (১১ ম্যাচে পয়েন্ট আট)। তবে সেই দিল্লি কাঁটা সাফ হওয়ার ক্ষেত্রে চেন্নাইয়ের সবথেকে বড় সমর্থক হয়ে উঠবে কেকেআর। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে দিল্লি হেরে গেলেই সৌরভদের ছুটি হয়ে যাবে। তবে তার আগে কেকেআর চাইবে যে পঞ্জাবকে দুটি ম্যাচেই হারিয়ে দিক দিল্লি। তাহলে কেকেআরের লাভ হবে।
(IPL 2023: আইপিএল সংক্রান্ত যাবতীয় টাটকা খবর ও আপডেটের জন্য হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার স্পেশাল পেজে – ক্লিক করুন এখানে, তাহলেই প্রবেশ করবেন আইপিএলের দুনিয়ায়)
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)
For all the latest Sports News Click Here